সোমবার, ২২ ফেব্রুয়ারি, ২০১৬ ০০:০০ টা

ভাষাশহীদের প্রতি ক্রিকেটারদের শ্রদ্ধা

ক্রীড়া প্রতিবেদক

ভাষাশহীদের প্রতি ক্রিকেটারদের শ্রদ্ধা

অনুশীলনে নামার আগে গতকাল মিরপুর ন্যাশনাল বাংলা স্কুলের শহীদ মিনারে ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা জানান বাংলাদেশ জাতীয় দলের ক্রিকেটাররা —বাংলাদেশ প্রতিদিন

গতকাল ছিল ২১ ফেব্রুয়ারি। আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস। নানা কর্মসূচির মধ্যদিয়ে গোটা বাঙালি জাতি শ্রদ্ধাভরে স্মরণ করল দিনটিকে। মধ্যরাত থেকে জনতার ঢল নেমেছিল শহীদ মিনারগুলোয়। জনতার কাতারে এবার শামিল হয়েছেন বাংলাদেশ জাতীয় দলের ক্রিকেটাররাও। মাশরাফি বিন মর্তুজা, মুশফিকুর রহিমরা সশরীরে উপস্থিত থেকে শহীদ মিনারে ফুল দিয়েছেন। সেটা অবশ্য জাতীয় শহীদ মিনারে নয়। মিরপুরে ন্যাশনাল বাংলা স্কুল প্রাঙ্গণে অবস্থিত শহীদ মিনারে জাতীয় দলের ক্রিকেটাররা মাশরাফির নেতৃত্বে পুষ্পস্তবক দেন।

গতকাল মধ্যরাত থেকে গোটা দেশে বাঙালি জাতি শ্রদ্ধা জানাতে ফুল নিয়ে উপস্থিত হয়েছেন শহীদ মিনারে। কারও হাতে একটি ফুল, কারও হাতে এক গোছা ফুল। আবার কেউ কেউ নিয়ে এসেছেন ফুলের স্তবক। ফুল হাতে সবার গন্তব্য শহীদ মিনার। মনের অন্তরস্থল থেকে শ্রদ্ধা জানিয়েছেন ভাষা শহীদদের। এশিয়া কাপের প্রস্তুতি নিতে মাশরাফিরা এখন ব্যস্ত অনুশীলনে। মিরপুর শেরেবাংলা জাতীয় স্টেডিয়ামে কাল দুপুরে ছিল অনুশীলন। তার আগে ফুল নিয়ে মাশরাফিরা উপস্থিত হন শহীদ মিনারে। ভাষা দিবসে ভাষা শহীদদের স্মরণ করলেন মাশরাফিরা। শহীদদের শ্রদ্ধা জানাতে পেরে ভালো লাগছে টাইগার অধিনায়ক মাশরাফির, ‘ফুল দিতে পেরে অবশ্যই ভালো লাগছে। এই দিনটি বাংলাদেশের অন্যতম দিন। সেই অনুভূতি থেকে অনুশীলনে নামার আগে শহীদ মিনারে ফুল দিলাম।’

বাংলা মায়ের ভাষা। প্রাণের ভাষা। উর্দুর হাত থেকে বাঁচাতে সালাম, জব্বার, বরকতরা প্রাণ দিয়েছিলেন। সে প্রাণের ভাষা বাংলা এখন বিকৃত হচ্ছে। ভাষার বিকৃতি রোধে ক্রিকেটারদের দায়িত্ব আছে মনে করেন টাইগার অধিনায়ক, ‘ক্রিকেট খেলায় ইংরেজির প্রয়োগটা একটু বেশি। কিন্তু আমার মনে হয় আমরা যারা বাঙালি, তাদের সবার ভিতরে বাংলাটা থাকা উচিত। আমার মনে বাংলা ভাষাটাকেই প্রাধান্য দেওয়া উচিত। আমরা খেলোয়াড়রা বাংলায় কথা বলতে পছন্দ করি। তবে এটা সত্যি ক্রিকেটে ইংরেজির প্রয়োগটা বেশি। তারপরও আমরা যেখানেই থাকি, আমরা চাই বাংলা ভাষায় কথা বলতে। আমাদেরও প্রথম পছন্দ বাংলা ভাষা।’ বাংলাদেশের সমৃদ্ধ ইতিহাসে বেশ কয়েকটি দিবস রয়েছে, যাতে উৎসব আনন্দে মেতে উঠে গোটা জাতি। বাঁধভাঙা উচ্ছ্বাসে মেতে উঠেন। জাতীয় দিনগুলো সবসময়ই জাতিকে উদ্বুদ্ধ করে। ভাষার মাসে এশিয়া কাপ ক্রিকেট। টি-২০ বিশ্বকাপের প্রস্তুতি ধরা হচ্ছে আসরটাকে। এশিয়া কাপে দলকে ভাষার মাস উদ্বুদ্ধ করবে কি না- উত্তরে মাশরাফি বলেন, ‘খেলার সঙ্গে এর কোনো মিল নেই। খেলা এক জিনিস। আর পুরো জাতি আজ এক হয়ে শহীদ মিনারে যাচ্ছে, ফুল দেওয়াটাই কিন্তু গুরুত্বপূর্ণ নয়। মনের ভিতর থেকে উপলব্ধি করাই আমার কাছে গুরুত্বপূর্ণ।’

এশিযা কাপের মূল পর্ব শুরু ২৪ ফেব্রুয়ারি। স্বাগতিক বাংলাদেশ, ভারত, পাকিস্তান ও শ্রীলঙ্কা সরাসরি খেলবে চূড়ান্ত পর্বে। পঞ্চম দল হিসেবে চূড়ান্ত পর্বে খেলতে বাছাইপর্ব খেলছে আফগানিস্তান, ওমান, হংকং ও সংযুক্ত আরব আমিরাত। আফগানিস্তানের কোচ পাকিস্তানের লিজেন্ড ক্রিকেটার ইনজামাম উল হক এবং আকিব জাভেদ এসেছেন আরব আমিরাতের কোচ হয়ে। ঘরের মাঠে টুর্নামেন্ট। বাংলাদেশের সম্ভাবনার বিষয়ে টাইগার অধিনায়ক বলেন, ‘আমরা কখনোই কিছু প্রমাণ করার জন্য খেলিনা। আমরা যারা বাংলাদেশের প্রতিনিধিত্ব করি, সবাই জেতার জন্য খেলি। আমাদের আত্মবিশ্বাস ভালো। যদি সেরাটা খেলতে পারি, পরিকল্পিত ক্রিকেট খেলতে পারি, সেক্ষেত্রে আমার বিশ্বাস ভালো করব।’

২০১২ সালে শিরোপার কাছে গিয়েও স্বাদ নেওয়া হয়নি। পাকিস্তানের কাছে ফাইনালে হেরেছিল মাত্র ২ রানে। সেই ফাইনাল নিয়ে এখনো স্মৃতিকাতর বাংলাদেশের ক্রিকেটপ্রেমীরা। তবে পরের আসরে পুরোপুরি ব্যর্থ টাইগাররা। আইসিসি সহযোগী দেশ আফগানিস্তানের কাছেও হেরেছিল। অতীতের সব ব্যর্থতাকে পেছনে ফেলে সামনে এগোচ্ছে বাংলাদেশ। সেই ধারাবাহিকতা ধরে রাখতেই মরিয়া মাশরাফিরা। এখন শুধু তার অপেক্ষা। এশিয়া কাপে অংশ নিতে গতকাল ভারত ঢাকায় এসে পৌঁছায়।

সর্বশেষ খবর