বুধবার, ৯ মার্চ, ২০১৬ ০০:০০ টা

জয়ের প্রত্যয় মাশরাফির

প্রতিপক্ষ নেদারল্যান্ডস

জয়ের প্রত্যয় মাশরাফির

বাংলাদেশে এখন তীব্র গরম। ভারতের অধিকাংশ জায়গাতেও তাই। কিন্তু আলাদা কেবল হিমাচল প্রদেশের ধর্মশালা। এখানে বৃষ্টি হচ্ছে, রাতে প্রচণ্ড ঠাণ্ডা, আবার দিনে রোদ। অদ্ভূত এক পরিবেশ। এমন এক পরিবেশের সঙ্গেই হঠাৎ করে এসে মানিয়ে নিতে হচ্ছে মাশরাফিদের। অবশ্য মানিয়ে নিতে বাধ্য হচ্ছেন। চাইলেই কি আর সম্পূর্ণ বিপরীত আবহাওয়ার সঙ্গে একদিনে মানিয়ে নেওয়া সম্ভব।

এশিয়া কাপ ফাইনাল খেলার কারণে হাতে সময়ও পায়নি বাংলাদেশ দলের ক্রিকেটাররা। পরের দিনই আসতে হয়েছে ধর্মশালায়। অবশ্য এটা ভারতের অন্য কোনো প্রদেশে হলে সমস্যা হতো না। কেননা ভারতের অধিকাংশ প্রদেশের সঙ্গে বাংলাদেশের আবহাওয়ার মিল রয়েছে। কেবল হিমাচল প্রদেশের আবহাওয়াই ভিন্ন।

শুধু তাই নয়, ধর্মশালা সমুদ্রপৃষ্ঠ থেকে অনেক উপরে (৪ হাজার ৭৮০ ফুট) হওয়ায় শ্বাস নিতেও কষ্ট হয় অনেক সময়। তারপরেও এখানে জয় ছাড়া কিছু ভাবছেন না মাশরাফি।

তাছাড়া জয়ের বিকল্পই বা কি আছে? টি-২০ বিশ্বকাপের দ্বিতীয় রাউন্ডে যেতে হলে প্রথম রাউন্ডের তিন ম্যাচেই জয়ের বিকল্প নেই। আজ প্রথম ম্যাচে প্রতিপক্ষ নেদারল্যান্ডস। পরের দুই ম্যাচে বাংলাদেশ খেলবে আয়ারল্যান্ড ও ওমানের বিরুদ্ধে। ডাচদের হারিয়েই টি-২০ বিশ্বকাপের মিশনটা শুরু করতে চায় বাংলাদেশ।

এশিয়া কাপের ফাইনালে ওঠায় ধর্মশালার হংকংয়ের বিরুদ্ধে একমাত্র অনুশীলন ম্যাচটা খেলতে পারেনি বাংলাদেশ। আগে আসতে পারলেও কন্ডিশনের সঙ্গে মানিয়ে নেওয়া অনেক সহজ হতো। তবে এশিয়া কাপের ফাইনালে খেলার কারণে তো টি-২০তে বাংলাদেশের আত্মবিশ্বাসের গ্রাফটা বেড়ে গেছে অনেক। সে কারণেই প্রথম রাউন্ডের তিন ম্যাচেই জয়ের কথা ভাবতে পারছে টাইগাররা। মাশরাফি বলেন, ‘আমরা টি-২০তে ক্রমশ উন্নতি করছি। গত দুই সপ্তাহে আমরা খুব ভালো করেছি। পরের সপ্তাহগুলোতেও এটা ধরে রাখতে পারব।  আমরা পরের রাউন্ডে যেতে পারলে সামনে অনেক বড় চ্যালেঞ্জ আসবে। আমরা এখানে নিজেদের সেরা ক্রিকেট খেলতে এসেছি।’

টি-২০ ম্যাচ মানেই বাড়তি চাপ। সেটা যত ছোট দলের বিরুদ্ধেই হোক না কেন! তবে পরিকল্পনা অনুযায়ী খেলতে পারলে জয় পাওয়া কঠিন নয়। কিন্তু বৃষ্টির কারণে খেলায় বিঘ্ন ঘটলে ডাকওয়ার্থ/লুইস পদ্ধতিতে অনেক নাটকীয় ঘটনাই ঘটতে পারে। যেমন এশিয়া কাপের ফাইনালে বৃষ্টির কারণেই যেন বদলে গেল সব কিছু। আজ ধর্মশালাতেও বৃষ্টির সম্ভাবনা রয়েছে বলে জানা গেছে আবহাওয়ার পূর্বাভাসে। তাই যেন কিছুটা ভয় পাচ্ছেন টাইগার দলপতি। মাশরাফি বলেন, ‘টি-২০ খেলা তো বেশিরভাগই মোমেন্টামের ওপর নির্ভর করে। যেমন আমরা যে এশিয়া কাপে ফাইনাল খেললাম, তাতে এক রকম ফোকাস নিয়ে গেছি, দুই ঘণ্টার বৃষ্টির জন্য খেলা বন্ধ থাকাতে আরেক রকম হয়েছে। আমরা এখন শুধু আল্লাহকে ডাকতে পারি, বৃষ্টিটা যেন না হয়, যেমন মাইন্ড সেট-আপ নিয়ে আসি সেটা নিয়েই যেন খেলতে পারি। বৃষ্টি হলে অবশ্যই অনেক কিছু হিসাব-নিকাশ করতে হয়। মাঠেরও একটা ব্যাপার থাকে। পরিকল্পনারও অনেক ঝামেলায় হয়। আমরা চাই না বৃষ্টি হোক।’

বোলিংয়ে এখন বাংলাদেশের প্রধান অস্ত্র যে মুস্তাফিজ তা তো কারও অজানা নয়! এশিয়া কাপের ফাইনালে কাটার মাস্টার খেললে পরিস্থিতি অন্য রকম হতে পারত। কিন্তু আজকের ম্যাচেও যে খেলতে পারবেন, তারও নিশ্চয়তা নেই। কেননা এখনো পুরোপুরি সুস্থ নন মুস্তাফিজ। গতকাল অনুশীলনের সময়ও স্বাচ্ছন্দ্য মনে হয়নি এই পেসারকে। তবে চোটকে স্বাভাবিকভাবেই দেখছেন মাশরাফি। তিনি বলেন, ‘মুস্তাফিজের চোটে আছে, এটা তো পরিষ্কারই। সে শেষ দুটি ম্যাচ খেলেনি। ছোটখাটো সমস্যা থাকবেই। যেমন শেষ ম্যাচে সাকিবের ছিল। বল করতে সমস্যা হচ্ছিল। এগুলো থাকবেই, এগুলো নিয়েই সামনে এগিয়ে যেতে হবে।’

এশিয়া কাপে সুবিধা করতে পারেন বাংলাদেশের তিন তারকা তামিম ইকবাল, মুশফিকুর রহিম ও সাকিব আল হাসান। কিন্তু আরেক সিনিয়র ক্রিকেটার মাহমুদুল্লাহ রিয়াদ ছিলেন ব্যতিক্রম। তিনি শেষের দিকে ব্যাটিং করেও দাপুটে ব্যাটিং করেছেন। দলের প্রয়োজনে বড় ইনিংস খেলেছেন। তাই রিয়াদকে আরও উপরের দিকে ব্যাটিং করানো যায় কিনা? এমন প্রশ্নে মাশরাফি বলেন, ‘একটা দলে একজন যখন একটু লোয়ার অর্ডারে পারফরম করে তখন এই কথা উঠাটা খুবই স্বাভাবিক। যেটা আমি অনেক দিন ধরে দেখে আসছি যে ‘ওকে কেন ওপরে খেলাও না’। আবার দেখেন মুশফিক-সাকিব ওরা কিন্তু বাংলাদেশ দলকে যথেষ্ট সার্ভিস দিয়ে এসেছে। আমরা তো একজনকে পেতে গিয়ে আর দুই জনকে তো হারাতে চাই না। আমরা রিয়াদকে নিয়ে যে পরিকল্পনা করেছিলাম, তা প্রায় সফল।

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর