শুক্রবার, ১১ মার্চ, ২০১৬ ০০:০০ টা

প্রশ্নবিদ্ধ আইসিসি, বিস্মিত বিসিবি

ক্রীড়া প্রতিবেদক

প্রশ্নবিদ্ধ আইসিসি, বিস্মিত বিসিবি

সৌন্দর্য্যের কোনো মাপকাঠিতেই ফেলা যাবে না ধর্মশালা স্টেডিয়ামকে। মেঘের সাম্রাজ্যে বসবাস হিমাচলকে ঘিরে রেখেছে হিমালয় তার সুবিশাল পর্বতমালা দিয়ে। ঢাল-তলোয়ার নিয়ে নিরাপত্তা দিতে যেন দাঁড়িয়ে আছে একথায়! গোটা ভারতে এখন গ্রীষ্মকাল। অথচ হিমাচলে বরফের ভেজাভেজি। হিম সৌন্দর্য্যের হিমাচলের অপরূপ স্টেডিয়ামটি মূল ভূ-পৃষ্ঠ থেকে ৪ হাজার ফুট ওপরে। স্টেডিয়ামে দাঁড়ালেই হাতছানি দিয়ে ডাকছে হিমালয়। একটু ছুঁয়ে দেখতে ছুটে যায় মন-প্রাণ। সেই হিমাচলে বেশ ধোপদুরস্ত যাত্রা করেছে বাংলাদেশ ক্রিকেট দল। আইসিসি সহযোগী দেশগুলোর মধ্যে বরাবরের ‘চমক’ নেদারল্যান্ডসকে হারিয়ে শুভ সূচনা করেছে। এই জয়ে টি-২০ বিশ্বকাপের চূড়ান্ত পর্বে খেলার পথে এক পা দিয়েও রেখেছে। আজ আয়ারল্যান্ডের বিপক্ষে জিতলে প্রায় নিশ্চিত সুপার টেন। এমন সমীকরণ যখন মাশরাফি বাহিনীর সামনে, তখন জোর ধাক্কা খেল বাংলাদেশ। দলের মূল স্ট্রাইক বোলার তাসকিন আহমেদ ও বাঁ হাতি স্পিনার আরাফাত সানির বোলিং অবৈধ জানিয়েছে ক্রিকেটের শাসক সংস্থা আইসিসি। গত দুই বছরে এ নিয়ে বাংলাদেশের ৫-৬ জন বোলারের বোলিং অ্যাকশন নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। এতে করে বাংলাদেশের বোলিংয়ের ভবিষ্যৎ অন্ধকারে ঢাকা পড়ে যাচ্ছে! কিন্তু কেন এমন হচ্ছে?

মাত্র কিছুদিন আগে এশিয়া কাপ ক্রিকেট খেলেছেন দুজনে। তাসকিন গতির ঝড় তুলে জন্ম দেন বিস্ময়ের। যদিও আরাফাত নিয়মিত খেলেননি। এছাড়াও বড় বিষয় হচ্ছে দুজনেই ২০১৫ সালের বিশ্বকাপ ক্রিকেট খেলেছেন এবং নজর কেড়েছেন বোলিং করে। এমন যখন তাদের ক্রিকেট ক্যারিয়ার, তখন নেদারল্যান্ডসের বিপক্ষে দুজনের বোলিং অ্যাকশনকে প্রশ্নের সম্মুখীন দাঁড় করানোয় বিস্ময়ের জন্ম দিয়েছে। কারও মাথাতেই আসছে না। বিসিবির ন্যাশনাল গেম ডেলেভপমেন্ট ম্যানেজার নাজমুল আবেদিন ফাহিম, ‘আমি বিস্মিত। এরা কিছুদিন আগে এশিয়া কাপ ক্রিকেট খেলেছেন। এছাড়া বিশ্বকাপ ক্রিকেটও খেলেছেন। এতদিন পর হঠাৎ এমন কেন হলো? বুঝতে পারছি না।’ শুধু এই দুজনেই নয়। এর আগে সোহাগ গাজী ও আল আমিন নিষিদ্ধ হয়েছিলেন। কিছুদিন আগে অনূর্ধ্ব-১৯ যুব বিশ্বকাপে নিষিদ্ধ হন অফ স্পিনার সঞ্জিত সাহা। আল আমিন ও সোহাগ গাজী পরীক্ষা দিয়ে ফের ফিরেছেন আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে। আল আমিন এখন টাইগারদের মূল উইকেট টেকিং বোলার। তবে অবাক করেছে সঞ্জিতের বিষয়টি। টিম ম্যানেজমেন্ট জেনেও সঞ্জিতকে দলভুক্ত করেছিলেন। পরিণামে টুর্নামেন্টের আগেই নিষিদ্ধ বোলিং অ্যাকশনের জন্য বাদ পড়েন। গত এক-দেড় বছরে বেশ কয়েকজন বোলারের অ্যাকশন প্রশ্নবিদ্ধ হওয়ায় বাংলাদেশের বোলিং বিভাগের ভবিষ্যৎ শঙ্কার বেড়াজালে আটকে পড়েছে। এ অবস্থা থেকে দ্রুত মুক্তি পেতে হবে। তাহলেই সাফল্যের গ্রাফটা ওপরের দিকে উঠতে থাকবে। প্রশ্নবিদ্ধ বোলার যে আসতে না পারে, সেজন্য ঘরোয়া ক্রিকেটে তীক্ষ নজর রাখতে হবে বলেন ফাহিম, ‘আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে বোলিং অ্যাকশনকে খুব ভালোভাবে দেখা হয়। এসব যাতে না হয়, সেজন্য ঘরোয়া ক্রিকেটে তীক্ষ নজর রাখতে হবে। অনূর্ধ্ব—১২, ১৪, ১৭ ক্রিকেটে আমরা খুব নজরদারিতে রাখি, যাতে বোলাররা প্রশ্নবিদ্ধ বোলিং করতে না পারে। শুরুতে ধরা পড়লে এটা ঠিক করা যায়। কিন্তু বড় হয়ে করলে সেটা আর ঠিক করা যায় না।’ এর আগে ঘরোয়া ক্রিকেটের ১৫-২০ বোলারের অ্যাকশন নিয়ে রিপোর্ট জমা দিয়েছিল আম্পায়াররা। কিন্তু সেটা নিয়ে কোনো কাজ করেনি বিসিবি। সেজন্যই এমন হাল! 

সর্বশেষ খবর