শিরোনাম
বৃহস্পতিবার, ১৮ আগস্ট, ২০১৬ ০০:০০ টা

লাতিনিনার পাশে বাইলস

ক্রীড়া ডেস্ক

লাতিনিনার পাশে বাইলস

সোনা জয়ের পর সিমন বাইলস —এএফপি

১৯৭৬ সালে মন্ট্রিল অলিম্পিকে রোমানিয়ার নাদিয়া কোমোনিচি যখন জিমন্যাস্টিক্সে ১০ পয়েন্ট স্কোর করেন, তামাম দুনিয়ার চোখ তখন কপালে উঠে গিয়েছিল! বিস্মিত হয়েছিলেন সবাই। বিস্মিত হয়েছিলেন নাদিয়া নিজেও। কারণ আর কিছুই নয়, অলিম্পিক ইতিহাসে এর আগে জিমন্যাস্টিক্সের কোনো ইভেন্টে কেউ কখনো ১০ স্কোরে ১০ করতে পারেননি। নাদিয়া প্রথমবার ১০ স্কোর করে ইতিহাস লিখে নেন। ৪০ বছর পেরিয়েছে। বহু জিমন্যাস্ট ১০ স্কোর করেছেন। কিন্তু নাদিয়ার নাম এখনো উচ্চারিত হয় সবার আগে। নাদিয়ার দেখানো পথে এবার হাঁটলেন মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের লাস্যময়ী সিমোন বাইলস। প্রথম নিগ্রো মেয়ে হিসেবে জিমন্যাস্টিক্সে সোনা জেতার রেকর্ড গড়েন বাইলস। প্রথম সোনাজয়ী হিসেবেই নয়, গতকাল ফ্লোর এক্সারসাইজে সোনা জিতে এক আসরে সর্বোচ্চ চারটি সোনা জয়ের রেকর্ডও স্পর্শ করেন। এর আগে সাবেক সোভিয়েত ইউনিয়নের লারিসা লাতিনিনা (মেলবোর্ন, ১৯৫৬), হাঙ্গেরীর অ্যাগনেস কালিতি (মেলবোর্ন ১৯৫৬), সাবেক চেকোস্লাভাকিয়ার ভিয়েরা চালসলাভস্কা (মেক্সিকো, ১৯৬৮) ও রুমানিয়ার একতারিনা জাভো (লস অ্যাঞ্জেলস, ১৯৮৪) এক আসরে চারটি করে সোনা জিতেন।  রেকর্ডটি একাই করার কথা ছিল বাইলসের। একাই এক আসরে পাঁচ পাঁচটি সোনা জিতে নতুন ইতিহাস লেখার সুযোগ ছিল মার্কিন তরুণীর। কিন্তু পারেননি। ব্যালান্স বিমে পা পিছলে রুপা জিতে সন্তুষ্ট থাকতে হয় তাকে। গতকাল ১১তম দিনে সেই কষ্টকে দূরে সরিয়ে জিতে নেন গেমসে নিজের চার নম্বর সোনা। ফ্লোর এক্সারসাইজে গানের তালে তালে ১৫.৯৬৬ স্কোর করে চ্যাম্পিয়ন হন ১৯ বছর বয়সী বাইলস। এর আগে দলীয়, অল-রাউন্ড ও ভল্টে সোনা জিতেছিলেন মার্কিন লাস্যময়ী। বাইলসের পেছনে থেকে ১৫.৫০০ স্কোর করে রুপা জিতেন আরেক মার্কিন জিমন্যাস্ট আলেকজান্দ্রা রেইজম্যান এবং ব্রোঞ্জ জিতেন গ্রেট ব্রিটেনের অ্যামি টিংকলার ১৪.৯৩৩ স্কোর করে।  সিমোন অ্যারাইন বাইলস টেক্সাসে জন্ম গ্রহণ করেন ১৯৯৭ সালের ১৪ মার্চ। ১৯ বছর বয়স্কা বাইলস অল-অ্যারাউন্ডে তিনবারের বিশ্ব চ্যাম্পিয়ন, ফ্লোর এক্সারসাইজে তিনবারের বিশ্ব চ্যাম্পিয়ন, ব্যালান্স বিমে দুবারের বিশ্বচ্যাম্পিয়ন। এই প্রথম অলিম্পিক মহাযজ্ঞে খেলতে আসেন এবং নেমেই বাজিমাত করেন। চার চারটি সোনা জিতে ইতিহাসের সোনালি পাতায় নাম লেখানো বাইলস বলেন, ‘অলিম্পিকে অংশ নেওয়াটা সব সময়ই আমার কাছে স্বপ্ন ছিল। রিও অলিম্পিকে অলিম্পিকে খেলতে এসে ভালোই লাগছে। এটা লম্বা জার্নি। কিন্তু আমি খুব উপভোগ করেছি।’ পাঁচ সোনা জেতার যোগ্যতা, সামর্থ্য ছিল বাইলসের। কিন্তু বিমে পারফর্ম করার সময় পা পিছলে পড়ে যাওয়ায় সম্ভব হয়নি। পাঁচ সোনা জিতে ইতিহাস গড়তে না পারায় হতাশ নন মার্কিন জিমন্যাস্ট সিমোন বাইলস, ‘প্রথমবার অলিম্পিকে খেলতে ৫টি পদক জেতায় হতাশ হওয়ার কোনো কারণ নেই। তার ওপর চারটি সোনা, এর চেয়ে ভালো আর কি হতে পারে।

আমার পারফরম্যান্সে আমি সন্তুষ্ট।’ ২০১২ সালে লন্ডন অলিম্পিকে বয়স কম হওয়ায় মার্কিন দলে জায়গা হয়নি বাইলসের। কিন্তু পরের বছর থেকেই বিশ্ব জয় করা শুরু করেন। লন্ডন অলিম্পিকে খেলতে না পারার হতাশাকে শক্তিতে রূপান্তরিত করে গত চার বছর ধরে বিশ্ব জয় করে চলেন। ব্যালান্স বিমে হারের আগে অপরাজিতই ছিলেন সিমোন বাইলস।          

পুরুষদের প্যারালাল বারে সোনা জিতে ইউক্রেনের ওলেগ ভারনিয়াভ। সোনা জিতেন ১৬.০৪১ স্কোর করে। ০.১৪১ পয়েন্ট কম স্কোর করে রুপা জেতেন মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ড্যানেল লেইভা ও ব্রোঞ্জ জিতেছেন রাশিয়ার ডেভিড বেলিয়াভস্কি।

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর