মারকানা বিশ্বখ্যাত ফুটবল স্টেডিয়াম। ব্রাজিলের আরেক পরিচয়। মারকানা ব্রাজিলবাসীর দুঃখের আরেক নাম। ৬৬ বছর আগে ১৯৫০ সালে এই মারকানা দুঃখের নদীতে ভাসিয়েছিল বিশ্বের পঞ্চম বৃহত্তম দেশটিকে। সেবার বিশ্ব চ্যাম্পিয়ন হওয়ার এক বুক স্বপ্ন নিয়ে মারকানায় উপস্থিত হয়েছিলেন ২ লাখ ফুটবলপ্রেমী। কিন্তু বাড়ী ফিরেছিলেন হতাশা, কষ্ট ও বেদনাকে সঙ্গী করে। উরুগুয়ের কাছে হেরে বিশ্বকাপ জেতা হয়নি। বিশ্বকাপ না জেতার দুঃখ অবশ্য ব্রাজিল ভুলেছিল ৮ বছর পর সুইডেনে। কিন্তু মারকানার দুঃখ বয়ে চলেছে সাড়ে ছয় দশক ধরে। এবার সুযোগ এসেছে মারকানার দুঃখকে আটলান্টিকের নীল জলে ভাসিয়ে দেওয়ার এবং প্রতিশোধ নেওয়ার ও একই সঙ্গে পাঁচবারের বিশ্বচ্যাম্পিয়ন ব্রাজিলের সামনে হাতছানি আরও একটি ইতিহাস লেখার। যদি আজ বর্তমান বিশ্ব চ্যাম্পিয়ন জার্মানিকে হারাতে পারে, তাহলে নিজেদের ইতিহাসে প্রথমবারের মতো সোনা জিতবে ব্রাজিল। সঙ্গে সঙ্গে জার্মানির কাছে সেমিফাইনালের হারের প্রতিশোধটাও নিবে। অবশ্য প্রথম সোনা জেতার হাতছানি রয়েছে বর্তমান বিশ্বচ্যাম্পিয়ন জার্মানিরও।
২০১৪ সালে বিশ্বকাপ ফুটবলের আয়োজক ব্রাজিল। শিরোপা জেতার ফেবারিটও ছিলেন নেইমাররা। সেমিফাইনালের আগে পর্যন্ত দুর্দান্তও খেলেছিল সেলেকাওরা। কিন্তু ফাইনালে ওঠার লড়াইয়ে নামার পর আর খুেঁজ পাওয়া যায়নি ব্রাজিলকে। ‘পাওয়ার হাউস’ জার্মানির কাছে বিধ্বস্ত হয় ৭-১ গোলে। ওই হার ব্রাজিলিয়াণদের ক্ষতে আরও একবার প্রলেপ দিয়ে দেয় দুঃখের। মারকানা থেকে বেল হরিজেন্টো-শৈল্পিক ফুটবলের দেশ ব্রাজিলের কাছে দুঃখেরই নাম। এবার সুযোগ এসেছে দুঃখ ভোলার। সে সঙ্গে সুযোগ এসেছে অলিম্পিক ইতিহাসে ফুটবল ইভেন্টে প্রথম সোনা জেতার। এজন্য আজ নেইমারদের সেরাটাই খেলতে হবে জার্মানির বিপক্ষে।
ব্রাজিল অলিম্পিকে প্রথম ফাইনাল খেলে ১৯৮৮ সালে সিউল অলিম্পিকে। সেবার ফাইনারে হেরে যায় সোভিয়েত রাশিয়ার কাছে ১-২ গোলে। গতবারও ফাইনালে খেলে ব্রাজিল। ফের হতাশ হয় মেক্সিকোর কাছে ১-২ গোলে হেরে। এবার ফাইনারে ওঠলো তৃতীয়বারের মতো। জার্মানি এই প্রথম ফাইনালে ওঠলো। অবশ্য ১৯৭৬ সালে মন্ট্রিল অলিম্পিকে পুর্ব জার্মানি ফাইনাল খেলেছিল।