বুধবার, ৩০ নভেম্বর, ২০১৬ ০০:০০ টা

অসময়ে কুমিল্লার জয়

ক্রীড়া প্রতিবেদক

অসময়ে কুমিল্লার জয়

গত আসরে প্রথম নাম লেখায়। দুরন্ত ক্রিকেট খেলে প্রথম আসরেই চ্যাম্পিয়ন। এবার তাই অনেকেই স্বপ্ন দেখেছিলেন কুমিল্লা ভিক্টোরিয়ান্সকে নিয়ে। বিশেষ করে মাশরাফি বিন মর্তুজার ক্যারিশম্যাটিক নেতৃত্বগুণে চ্যাম্পিয়ন হতেই পারে ভিক্টোরিয়ান্স, এমনটি ধরেই নিয়েছিলেন অনেকে! কিন্তু টি-২০ ক্রিকেট যে অনিশ্চয়তায় ভরা, সেটা বুঝা গেল বিপিএলের চার নম্বর আসরটি মাঠে গড়াতেই। প্রতিদ্বন্দ্বিতায় দেখা গেল না গত আসরের চ্যাম্পিয়ন কুমিল্লা ভিক্টোরিয়ান্সকে। টানা পাঁচ হারের পর দলটি প্রথম জয় পেল চট্টগ্রামে। এরপর দ্বিতীয় জয় পেল গতকাল। বরিশাল বুলসের বিপক্ষে ৮ উইকেটের বড় জয় কোনো উপকার করতে পারছে না বর্তমান চ্যাম্পিয়নদের সেরা চারে জায়গা নিতে। দুই জয়ে পয়েন্ট টেবিলের তলানি থেকে উপরে উঠতে পারলো না। কুমিল্লার মতো বেহাল অবস্থা মুশফিকুর রহিমের বরিশাল বুলসের। প্রথম তিন ম্যাচে টানা জয়ের পর হারের চক্করে বেসামাল দলটি। হেরেই চলেছে। কাল টানা ষষ্ঠ হারের স্বাদ নিল মুশফিকের বরিশাল।

১৯ নভেম্বর চট্টগ্রামে ৩২ রানের প্রথম জয় পেয়েছিল কুমিল্লা। হারিয়েছিল রাজশাহীকে। তখন মনে হয়েছিল হারের ধাক্কা সামলে নিয়ে দলটি ঘুরে দাঁড়াবে। কিন্তু কোথায় কি? উপর্যুপরি হেরে গেল। এরপর গতকাল দিনের প্রথম ম্যাচে যখন মাশরাফিরা নামলেন মুশফিকদের বিপক্ষে, তখন ম্যাচটি রূপ নিয়েছে আনুষ্ঠানিকতায়। তাই নির্ভার ক্রিকেট খেললো মাশরাফি বাহিনী। বরিশাল প্রথমে ব্যাট করে বাঁ হাতি স্পিনার নাবিল সামাদের ঘূর্ণিতে ২০ ওভারে ১৪৮ রান সংগ্রহ করে ৮ উইকেটে। তাও উঠতো না, যদি বাঁ হাতি পেসার আবু হায়দার রনি শেষ ওভারে ২ ছক্কা না হাঁকাতেন।  ৬ বলে ২৬৬.৬৬ স্ট্রাইক রেটে ১৬ রান করেন রনি। শুরুতে জীবন মেন্ডিস ২৪ বলে ২ চার ও সমসংখ্যক ছক্কায় ২৮, অধিনায়ক মুশফিক ২৯ রান করেন মাত্র ২৩ বলে ১ চার ও এক ছক্কায়। এনামুল জুনিয়র ২০ রানে অপরাজিত থাকেন ১৫ বল খরচ করে। ম্যাচসেরা নাবিল ৪ ওভারের স্পেলে ৩ উইকেট পান ১৭ রানের খরচে। ২ উইকেট পান রশিদ খান। ১টি করে উইকেট নেন শাহাদাত রাজিব ও মোহাম্মদ সাইফুদ্দিন।

টার্গেট ১৪৩। ওভার প্রতি ৭ রানের সামান্য বেশি। কুমিল্লার দুই ওপেনার ইমরুল কায়েস ও আহমেদ শেহজাদ ১২.৫ ওভারে ৯৩ রানের ভিত দিয়ে জয়ের পথ তৈরি করে দেন। ইনফর্ম ইমরুল ৪৬ রানের ইনিংস খেলেন ৩৫ বলে ৬ চার ও ১ ছক্কায়। তবে পাকিস্তানি আহমেদ শেহজাদ ব্যাটিং করেন একটু ধীরলয়ে। ৬১ রানের ইনিংসটি খেলতে বল খরচ করেন ৫৬টি। ৫ চারের ইনিংসটির স্ট্রাইক রেট ১০৮.৯২। বিপরীতে ইমরুলের স্ট্রাইক রেট ১৩১.৪২। ক্যারিবীয় ড্যাসিং ক্রিকেটার মারলন স্যামুয়েলস ২৭ রানের অপরাজিত ইনিংসটি খেলেন ১৮ বলে ২ চার ও এক ছক্কায়। হারের বৃত্ত ভেঙে বেরুতে মরিয়া বরিশালের অধিনায়ক মুশফিক গতকাল ব্যবহার করেন ৮ বোলার। কিন্তু কোনো লাভ হয়নি। রুম্মন রাইস ও ডেভিড মালান একটি করে উইকেট নেন।

বর্তমান চ্যাম্পিয়ন কুমিল্লা ভিক্টোরিয়ানস এবার জ্বলে ওঠতে পারছে না। অথচ শক্তির দিক দিয়ে গতবারের চেয়ে তারা এগিয়ে। ব্যাটিং ও বোলিংয়ে ব্যর্থতার কারণে কুমিল্লা টুর্নামেন্টে টপ ফোরে থাকবে না অনেকটা নিশ্চিতই বলা যায়। তার পরেও অধিনায়ক মাশরাফি বলেছেন, আমরা বাকি ম্যাচগুলোতে জয়ের জন্য লড়াই করব। সত্যি বলতে কি এবার বিপিএলে গতকালই কুমিল্লাকে দেখা গেল ভয়ঙ্কর রূপে। যেমন বোলিং তেমন ব্যাটিং। দিনটি সত্যিই মাশরাফিদের ছিল। বরিশাল ১৪২ রানের টার্গেট দিলেও হাতে ৮ উইকেট রেখে বিজয়ের উৎসবে মেতে ওঠে চ্যাম্পিয়নরা। 

 

সংক্ষিপ্ত স্কোর

বরিশাল বুলস : ১৪২/৮, ২০ ওভার (জীবন মেন্ডিস ২৮, মুশফিকুর রহিম ২৯, শাহরিয়ার নাফিস ১১। রশিদ খান ২/২১, নাবিল সামাদ ৩/১৭)।

কুমিল্লা ভিক্টোরিয়ান্স : ১৪৫/২, ১৯ ওভার (ইমরুল ৪৬,  আহমেদ শেহজাদ ৬১, মারলন স্যামুয়েলস ২৭*। রুম্মন রাইস ১/৩৮, ডেভিড মালান ১/৮)।

ফল : কুমিল্লা ৮ উইকেটে জয়ী

খুলনা টাইটানস : ১৩১/৮ ২০ ওভার (মাহমুদুল্লা ৪২, ওয়েলসেস ২০, আরিফুল হক ১৮, ইমরান খান ২/১৬, তাসকিন ২/২৮)

চিটাগং ভাইকিংস : ১৩৫/৫ ১৮.৪ ওভার (তামিম ৬৬*, শুভাগত হোম ১/৭)

ফল : চিটাগং ভাইকিংস ৫ উইকেটে জয়ী

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর