মঙ্গলবার, ৪ জুলাই, ২০১৭ ০০:০০ টা

কৃষ্ণাদের এশিয়া জয়ের মিশন

ক্রীড়া প্রতিবেদক

কৃষ্ণাদের এশিয়া জয়ের মিশন

পুরুষ ফুটবলে কোনো সুখবর নেই। আন্তর্জাতিক টুর্নামেন্টে মামুনুল-জামালরা ব্যর্থতার সাগরে হাবুডুবু খাচ্ছে। কোনো অবস্থায় ঘুরে দাঁড়াতে পারছে না। এশিয়ান প্রাক-বাছাইপর্বে ভুটানের মতো দুর্বল দলের কাছেও বিধ্বস্ত হয়েছে। এই ব্যর্থতায় দীর্ঘ সময়ে ফিফা স্বীকৃত আন্তর্জাতিক টুর্নামেন্ট থেকে বাইরে থাকতে হবে বাংলাদেশকে। ভরসা শুধু বঙ্গবন্ধু গোল্ড কাপ ও সাফ ফুটবলই। এখানেও সঙ্কটাপন্ন অবস্থা। সাফ চ্যাম্পিয়নশিপে গত তিন আসরে সেমিফাইনালে উঠতে পারেনি বাংলাদেশ। দুর্বল দল এলেও বঙ্গবন্ধু গোল্ড কাপে শিরোপা জিততে ব্যর্থ। জাতীয় দলের মান নিয়ে ফুটবলপ্রেমীরা হতাশ।  ফুটবলে এখন আলো জ্বালিয়ে রেখেছে মেয়েরাই। ফুটবলে বাংলাদেশের মেয়েদের যাত্রা বেশিদিনের নয়। কত বাধা এসেছে কিন্তু থেমে থাকেনি তারা। এখন তো দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার মহিলা ফুটবলে অন্যতম সেরা দলে পরিণত হয়েছে বাংলাদেশ। মামুনুলরা গ্রুপপর্ব থেকে বিদায় নিলেও মহিলা সাফ ফুটবলে কৃষ্ণা, স্বপ্নারা ফাইনাল খেলেছে। দুর্ভাগ্যক্রমে ভারতের কাছে হেরে রানার্সআপ হয়ে সন্তুষ্ট থাকতে হয়েছে। ভারতের মিডিয়ায় স্বপ্নাদের পারফরম্যান্সের ভূয়সী প্রশংসা করা হয়েছে।

পুরুষ ফুটবলাদের ব্যর্থতায় লজ্জায় মুখ ঢেকে যাচ্ছে। মেয়েরাই আশার আলো জ্বালিয়ে রেখেছে। গত বছর ঢাকায় অনুষ্ঠিত এএফসি কাপ অনূর্ধ্ব-১৬ বাছাইপর্বে মার্জিয়ারা যা করেছে ফুটবলপ্রেমীদের মনে থাকবে। ১০ গোল ১২ গোল প্রতি ম্যাচেই গোলের ছড়াছড়ি। মামুনুলরা যেখানে ফাঁকা পোস্ট পেয়েও গোল করতে পারেন না, সেখানে কিনা মেয়েরা গোল উৎসবে মেতেছিল বাংলাদেশের মেয়েরা। অথচ গ্রুপের শক্তিশালী ইরান থাকায় ভয় ছিল বাংলাদেশের চূড়ান্তপর্ব নিয়ে। সেই ভয়কে জয় করেছেন কৃষ্ণারা। অপরাজিত চ্যাম্পিয়ন হয়ে চূড়ান্তপর্বে জায়গা করে নিয়েছে।

এশিয়া কাপের চূড়ান্তপর্ব মানে এশিয়া জয়ের লক্ষ্য। সেই স্বপ্নের মিশনে প্রথমবারের মতো খেলবে বাংলাদেশের মেয়েরা। ১০ সেপ্টেম্বর থাইল্যান্ডে এই আসর বসবে। স্বাভাবিকভাবে কৃষ্ণাদের ভিতর আবেগ কাজ করছে। এশিয়া জয়ের মিশন এরচেয়ে বড় টুর্নামেন্ট বাংলাদেশের কাছে আর কি হতে পারে। তবে চূড়ান্তপর্বে কঠিন গ্রুপে পড়েছে বাংলাদেশ। উত্তর কোরিয়া, জাপান ও অস্ট্রেলিয়ার বিরুদ্ধে খেলতে হবে। ফুটবলে মেয়েদের যে অবস্থান এর পেছনে বড় অবদান সৈয়দ গোলাম রব্বানী ছোটনেরই। তার পরিশ্রমি প্রশিক্ষণে বাংলাদেশ একটা জায়গা করে নিয়েছে।

ছোটনও স্বীকার করেন, গ্রুপে তিনটি দলই শক্তিশালী। জাপানের মেয়েদের বিশ্বকাপ জয়ের রেকর্ড রয়েছে। উত্তর কোরিয়াও অনূর্ধ্ব-১৮ ও ১৭ বিভাগে বিশ্বসেরা হয়েছে। অস্ট্রেলিয়াও পরীক্ষিত শক্তিশালী দল। এদেরকে টপকিয়ে পরবর্তী রাউন্ডে যাওয়াটা কষ্টকর। তবে লড়াই করার সামর্থ্য আমাদের আছে। সেমি বা ফাইনাল খেলতে পারব না মানি। তবে মেয়েরা তাদের সেরা খেলাটাই উপহার দেবে। পারফরম্যান্স যাচাইয়ের জন্য জাপানে চারটি প্রস্তুতি ম্যাচও খেলে এসেছে কৃষ্ণারা। চলতি মাসেই দক্ষিণ কোরিয়া যাবে।

জাপান বা দক্ষিণ কোরিয়া যেখানে যাক না কেন, তারপরও প্রশ্ন উঠেছে এত বড় টুর্নামেন্ট খেলতে যে সুযোগ-সুবিধা দরকার তা কি মহিলা ফুটবলাররা পাচ্ছে? যে উন্নতমানের খাবার দেওয়ার কথা তাও নাকি জুটছে না কৃষ্ণাদের। দেশের টানে পরিশ্রম করে যাচ্ছেন কৃষ্ণারা। এ নিয়ে কোচ ছোটনের কোনো মন্তব্য নেই। তার একটাই কথা আমার লক্ষ্য একটাই চূড়ান্তপর্বে দেশের সম্মানটা রাখা। আমি আমার খেলোয়াড়দের নিয়ে আশাবাদী ।

সর্বশেষ খবর