বৃহস্পতিবার, ৩ আগস্ট, ২০১৭ ০০:০০ টা

হিটেই আউট আর কত?

আন্তর্জাতিক গেমসে বাংলাদেশ

ক্রীড়া প্রতিবেদক

হিটেই আউট আর কত?

ফুটবলে বাংলাদেশের বিশ্বকাপ খেলাটা স্বপ্নই হয়ে থাকবে। এখন এ নিয়ে তেমন আলোচনা নেই। কারণ ফুটবলে মানের যে সংকটাপন্ন অবস্থা তাতে এশিয়া কাপের চূড়ান্ত পর্বে কখনো খেলতে পারবে কি না এ নিয়ে সংশয় রয়েছে। আন্তর্জাতিক টুর্নামেন্ট মানেই বাংলাদেশের ভরাডুবি। আসলে ক্রিকেট ছাড়া সব খেলাতেই তো করুণ দশা। গলফে সিদ্দিকুর মাঝেমধ্যে ঝলক দেখাচ্ছেন। অনেক পরে শুরু করলেও এই খেলার উজ্জ্বল সম্ভাবনা রয়েছে। ১৯৯০ সালে অকল্যান্ড কমনওয়েলস গেমসে শুটিংয়ে বাংলাদেশের আতিকুর রহমান ও আবদুস সাত্তার নিনি সোনা জয় করেছিলেন। ২০০২ ম্যানচেস্টার কমনওয়েলস গেমসেও আসিফ হোসেন খানও সোনা জেতেন। স্বাভাবিকভাবে শুটিং কে ঘিরে দেশবাসীর প্রত্যাশা বেড়ে যায়।

সেই শুটিংয়েও তো হতাশা। এশিয়ান গেমস, অলিম্পিক গেমস, বিশ্বচ্যাম্পিয়নশিপে পদক জেতাটা স্বপ্নই থেকে যাচ্ছে। কমনওয়েলথ গেমসেও অধঃপতন। এমনকি সাউথ এশিয়ান গেমসেও সেভাবে জ্বলে উঠতে পারছে না। গত এস এ  গেমসে শুটিংয়ে কপাল জোরে ১টি সোনা আসে। সত্যি বলতে কি বড় বড় গেমসে ক্রীড়াবিদদের কাছে সাফল্য আশাও করা যায় না। কেননা বড় বড় গেমসেও তারা শুধু অংশ নেওয়ার জন্যই অংশ নিচ্ছে। ভালো যে করবে সেই ধরনের উন্নতমানের প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়কি? অন্যান্য সুযোগ সুবিধার কথা তো বাদই দিলাম। ক্যাম্পে ক্রীড়াবিদদের থাকা খাওয়া অবস্থা দেখে মুশাফিরখানাই মনে হয়। কর্মকর্তারা এমন আচরণ করেন, যেন বিদেশে যে খেলোয়াড়দের পাঠানো হচ্ছে সেটাই বড় প্রাপ্তি।

কিছুদিন আগে শেষ হয়েছে ফিনা ওয়ার্ল্ড কাপ সাঁতার। সাঁতারুদের মনোমুগ্ধকর নৈপুণ্য দেখে বিশ্ব চমকিয়ে যায়। বাংলাদেশে মাহফিজুর রহমান সাগর, জুয়েল আহমেদ ও মাহফুজা খাতুন শিলা প্রতিযোগিতায় অংশ নেন। তিন জনই হিটেই আউট। বিশ্বচ্যাম্পিয়নে অংশ নিয়েছে। বাংলাদেশের সাঁতারুদের প্রস্তুতি কি সেরকম ছিল। একেবারে শেষের দিক থেকে তিন জনই হিট শেষ করেছেন। ধন্যবাদ দিতে হয়, তারা যে হিটেই অযোগ্য ঘোষণা হয়নি। সবারই লক্ষ্য ছিল নিজেদের টাইমিং ছাড়িয়ে যাওয়া। তা তারা পারেননি। যতটুকু সামর্থ্য সেটাই তারা তুলে ধরেছেন।

শুক্রবার থেকে লন্ডনে বসছে বিশ্ব অ্যাথলেটিক্স চ্যাম্পিয়নশিপ। উসাইন বোল্টদের জগত। এখানে বাংলাদেশের কোনো অ্যাথলেট সাফল্য পাবেন পাগলও বলার সাহস পাবে না। তারপরও বাংলাদেশের সেরা অ্যাথলেট মেসবাহ্ আহমেদ দৌড়াবেন। টানা ছয় বারের দেশের দ্রুততম মানব। তবে লন্ডনে তিনিও যে হিটে আউট হয়ে দেশে ফিরবেন এ নিয়ে সংশয় নেই। বোল্টদের সঙ্গে মেসবা চূড়ান্ত পর্বে দৌড়াবে তা স্বপ্নেও ভাবা যায় না। এখানেও ঘুরে ফিরে একই কথা। বিশ্ব অ্যাথলেটিকসে মেসবার প্রস্তুতিটা কেমন ছিল।

অনেক দেশ তো লিঁও অলিম্পিকের পর থেকে প্রস্তুতি শুরু করে দিয়েছে লন্ডনে নামার জন্য। বাংলাদেশের মেসবাহ্ গেছে জোড়াতালি দিয়ে। কিন্তু এভাবে আর কত দিন? অ্যাথলেটিক্সওতো বাংলাদেশের উজ্জ্বল সম্ভাবনা ছিল। শাহ্ আলম ও বিমল তরফদার সাফের দ্রুততম মানব হন। এখন এস এ গেমসেও অ্যাথলেটদের পদক জেতাটাও ভাগ্যে পরিণত হয়েছে। বাংলাদেশের বয়স ৫০ ছুই ছুই করছে। আন্তর্জাতিক প্রতিযোগিতায় অংশ নেওয়ার জন্য অংশ নেওয়া এই রেওয়াজ থেকে কি বের হয়ে আসা যাবে না। হিটে টিকে যাওয়ার সামর্থ্য কি কখনো হবে না। আর জোড়াতালি দিয়ে ক্রীড়াবিদদের পাঠিয়ে লাভও বা কি। দেশকে উপহার দেওয়ার সময় কি এখনো হয়নি।

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর