মাত্র ১০ সেকেন্ডের বিষয়! মুহূর্তটুকুর জন্য ঘোরলাগা অপেক্ষায় ছিল গোটা বিশ্ব। অ্যাথলেটিক্সের অবিসংবাদিত ‘রাজা’ উসাইন বোল্ট ক্যারিয়ারের শেষ ১০০ মিটার স্প্রিন্ট দৌড়াবেন। রাজার রাজকীয় সেই দৌড় দেখতে লন্ডন অলিম্পিক স্টেডিয়ামসহ সারা বিশ্বের টিভি স্ক্রিনের সামনে হুমড়ি খেয়ে পড়েছিল শত কোটি ক্রীড়াপ্রেমী। সবাই দেখলেন বৃষ্টিভেজা লাল ট্রাকে ‘লাইটনিং’ বোল্টের শেষ দৌড়। কিন্তু মন ভরল না তাতে। মন মজাতে পারলেন না গতির রাজা। বিস্মিত হলেন সবাই। ছানাবড়া চোখে সবাই দেখলেন দুই মার্কিন স্প্রিন্টার জাস্টিন গ্যাটলিন ও ক্রিস্টিয়ান কোলম্যানের পেছনে দৌড় শেষ করতে বোল্টকে। অবিশ্বাস্য! অসম্ভব! স্বপ্ন নয়। বাস্তব। বিশ্ব অ্যাথলেটিক্স চ্যাম্পিয়নশিপের ১০০ মিটার স্প্রিন্টের সত্যিকারের ফল। এভাবেই ১০০ মিটার স্প্রিন্ট ক্যারিয়ারে যতি চিহ্ন পড়লো বোল্টের। জীবনের শেষ দৌড়ে তৃতীয় হলেন ৮টি অলিম্পিক ও ১১টি বিশ্ব চ্যাম্পিয়নশিপের সোনাজয়ী ৩১ বছর বয়স্ক বোল্ট। পারলেন না বলেই ট্রাকের রাজার বিদায়টা রাজকীয় হলো না। সর্বকালের সেরা স্প্রিন্টারকে কান্নার নোনা জলে ভিজিয়ে
৯.৯২ সেকেন্ড সময়ে সোনা জিতে বিশ্বকে বিস্মিত করলেন ৩৫ বছর বয়স্ক গ্যাটলিন। রুপা জেতা কোলম্যানের সময় লেখেছে ৯.৯৪ সেকেন্ড এবং বোল্টের ৯.৯৫ সেকেন্ড। অথচ বোল্টের ক্যারিয়ার সেরা সময় ৯.৫৮ সেকেন্ড সময়। যা শুধু রোবোটিক বোল্টের নামের পাশেই মানানসই!
সময় বোল্টের ছিল না- বোঝা গিয়েছিল ১০০ মিটার হিটে। ১০০ ও ২০০ মিটার স্প্রিন্টে দুই দুইবার বিশ্বরেকর্ডধারী বোল্ট যে সেরা ফর্মের ধারে কাছে নেই, সেটা হিট ও সেমিফাইনালেই পরিষ্কার হয়ে পড়েছিল। হিটে এতটাই বাজে দৌড়েছিলেন যে, শেষ ৫০ মিটার কোনোরকমে শেষ করে জায়গা নেন পরের রাউন্ডে ১০.০৭ সেকেন্ডে। সেমিফাইনালেও তিনি দৌড় শেষ করেন কোলম্যানের পেছনে থেকে। তখন থেকেই বাতাসে ফিসফাঁস, বোধহয় বোল্ট পারবেন না। কিন্তু বোল্ট বলেই স্বপ্ন দেখেছিলেন সবাই। স্বপ্ন আর বাস্তবতার ফারাক যে দিল্লি ফারাক, সেটা ১০০ মিটার স্প্রিন্ট শেষে দিনের আলোর মতোই পরিষ্কার হলো।