মধুরেণু সমাপয়েত! মধুর অপেক্ষার অবসান। ২০০৬ সালের পর থেকে এই স্বপ্নময় মুহূর্তটির জন্যই তিল তিল করে সময় সঞ্চয় করে রেখেছিলেন বাংলাদেশের ক্রিকেটার, ক্রিকেটারপ্রেমীরা। অবশেষে সেই স্বপ্ন পূরণ হচ্ছে ভোরের আকাশে সূর্য উদয়ের সঙ্গে সঙ্গে। শুধু মুশফিকদের অপেক্ষার অবসান হচ্ছে সেটা নয়, ইতিহাসেরও সাক্ষী হতে যাচ্ছে অনেক মধুুর ক্ষণের পুরোধায় থাকা মিরপুর শেরেবাংলা জাতীয় স্টেডিয়াম। মিরপুরে আজ শুরু হচ্ছে বহুল আলোচিত বাংলাদেশ-অস্ট্রেলিয়া সিরিজের প্রথম টেস্ট। মুশফিকুর রহিম ও স্টিভ স্মিথের টসের পরপরই দীর্ঘ ১১ বছরের পুঞ্জিভূত অপেক্ষা মিশে যাবে মিরপুরের আকাশে। সঙ্গে সাঙ্গ হবে অপেক্ষার।
২০০০ সালে টেস্ট অভিষেক বাংলাদেশের। ইতিহাসের পাতায় ঠাঁই নেওয়া টেস্টটির আগের মুহূর্তগুলো যেভাবে পার করেছিলেন ক্রিকেটপ্রেমীরা, অসিদের বিপক্ষে টেস্ট সিরিজের আগে অপেক্ষাও সেই একই রকম। গোটা দেশ গত দুই বছর ধরে এই মুহূর্তটির কাউন্ট ডাউন করে আসছে। ২০০৪ ও ২০০৬ সালের পর দুই দেশের এটা তৃতীয় টেস্ট সিরিজ। অথচ আয়োজনটি নানা নাটকীয়তায় ভরা। কখনো নিরাপত্তার অজুহাতে ভেসে গেছে। আবার কখনো আর্থিক বিষয়ে মনোমালিন্য থাকায় ভেস্তে যেতে বসেছিল সিরিজটি। ২০১৫ সালের অক্টোবর থেকে চলতি আগস্ট, ২২ মাস দেশের ক্রিকেটপ্রেমীদের উপর দিয়ে যে মানসিক পীড়ন গেছে, সেটা অবিশ্বাস্য। দুই বছর আগে সিরিজ ভেস্তে যাওয়ায় মনোকষ্টে পুড়েছিল গোটা দেশসহ মুশফিকুর রহিম, সাকিব আল হাসান, তামিম ইকবালরা। এবারও যখন দেশটির ক্রিকেট বোর্ড ও স্মিথদের মধ্যে আর্থিক লভ্যাংশ বণ্টন নিয়ে বনিবনা হচ্ছিল না, তখনো মানসিক যন্ত্রণা পোহাতে হয়েছে ক্রিকেটারদের। সমস্যার সমাধানের পর অস্ট্রেলিয়া যখন বাংলাদেশের আসার ঘোষণা দেয়, তখন দেশের ক্রীড়াঙ্গনে বয়ে যায় ঈদের আনন্দ! অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে অধীর অপেক্ষার টেস্ট খেলতে নামার আগে টাইগার অধিনায়ক মুশফিকের কণ্ঠে তাই আনন্দের ভাষা, ‘আমি ছোট বেলায় অস্ট্রেলিয়ার খেলা দেখেছি। তাদের কাছ থেকে শিখেছিও অনেক কিছু। ইচ্ছে ছিল তাদের বিপক্ষে খেলার। আল্লাহর রহমতে আগামীকাল (আজ) সেটা পূরণ হচ্ছে। শুধু অধিনায়ক হিসেবে নয়, মাঠে ও মাঠের বাইরেও অনেক কিছু প্রমাণ করা আছে।’