ওয়ানডে ও টি-২০ ক্রিকেট এখন বিনোদন। চার ছক্কার ফুলজুড়ি। টেস্ট ম্যাচকে ক্রিকেটপ্রেমীরা ভাবেন সময় কাটানো। কিন্তু টেস্ট ক্রিকেটেই যে সব সৌন্দর্য্য লুকিয়ে, সেটা মিরপুরে আরও একবার দেখা গেল। সেঞ্চুরি, ডাবল সেঞ্চুরি কিংবা হ্যাটট্রিক না থাকার পরও কিভাবে টেস্ট তার সৌন্দর্য্য বিলালো? শুধুমাত্র প্যাট কামিন্সের বাউন্সার স্মরণ করলেই বিরল সৌন্দর্য্যের কথা মনে হবে। তামিম ব্যাট করছিলেন ৭৮ রানে। কামিন্সের আগের বলটিকে বেশ সাবলীল খেলেন ৫০ নম্বর টেস্ট খেলতে নামা তামিম। কিন্তু লেগ স্ট্যাম্প থেকে শরীর বরাবর ধেয়ে আসা পরের বলটিকে কোনোভাবেই এড়াতে পারলেন না তামিম। বল গ্লাভস ছুঁয়ে জায়গা নেয় উইকেটরক্ষক ম্যাট ওয়েডের হাতে। তামিমের দিকে তাক করার কামিন্সের ওই বাউন্সারটিই ফিরিয়ে এনেছে টেস্ট ক্রিকেটের সৌন্দর্য্য। একই সঙ্গে ম্যাচেও ফিরিয়ে আনে অস্ট্রেলিয়াকে। তিন দিন শেষে টেস্টের যে চেহারা, তাতে ম্যাচ এখন দুলছে পেন্ডুলামের মতো দুদিকে। জিততে সফরকারী অস্ট্রেলিয়ার দরকার ১৫৬ রান এবং বাংলাদেশের চাই ৮ উইকেট। ক্রিজে রয়েছেন স্টিভ স্মিথ ও ডেভিড ওয়ার্নার। উইকেটে বল যেভাবে ঘুরছে, তাতে জয়ের স্বপ্ন দেখতে পারে দুদলই। অসি ফাস্ট বোলার প্যাট কামিন্স স্পষ্ট করেই জানিয়েছেন, টেস্টে এখন সুবিধাজনক অবস্থানে অস্ট্রেলিয়া।
প্রথম দুদিন যেভাবে বল ঘুরেছে উইকেটে এবং স্পিনাররা যেভাবে দাপট দেখিয়েছেন, তাতে মিরপুরে চতুর্থ ইনিংসে ২৬৫ রানের টার্গেট দূরতিক্রম্যই বলা যায়। গত অক্টোবরে ২৭৩ রানে টার্গেট ছুড়ে ১০৮ রানের জয় তুলে নিয়েছিল টাইগাররা। এবারও পরিস্থিতি অনেকটাই মিল রয়েছে। কিন্তু কামিন্স বলছেন, উইকেটের আচরণ বেশ ভালো। আর সেটাই তাদের স্বপ্ন দেখাচ্ছে জয়ের, ‘৩০০ রানের টার্গেট কিন্তু অনেক। তবে আমার মনে হচ্ছে উইকেট বেশ ভালো আচরণ করছে। তবে জিততে হলে আগামীকাল (আজ) শুরুটা ভালো করতে হবে। প্রথম দুই ঘণ্টা বেশ কঠিন সময় পার করতে হবে। উইকেটে স্মিথ ও ওয়ার্নার ব্যাট করছেন, সুতরাং আশা করতেই পারি।’ যদিও কামিন্স টেস্ট খেলে এখনো জয়ের স্বাদ পাননি। ২০০৬ সালে ফতুল্লায় রান তাড়া করে জিতেছিল অস্ট্রেলিয়া। সেবার সফরকারীদের প্রথম ইনিংসে ত্রাতা ছিলেন গিলক্রিস্ট এবং দ্বিতীয় ইনিংসে অধিনায়ক পন্টিং। ১১ বছর পর মিরপুরে ত্রাতা হিসেবে রয়েছেন দলের দুই সিনিয়র ক্রিকেটার ওয়ার্নার ও স্মিথ। স্মিথ অধিনায়ক ও ওয়ার্নার সহ অধিনায়ক।