শুক্রবার, ২৯ সেপ্টেম্বর, ২০১৭ ০০:০০ টা

টস জিতে কেন ফিল্ডিং

ক্রীড়া প্রতিবেদক

টস জিতে কেন ফিল্ডিং

পনের বছর আগের সেই দুঃস্মৃতি হয়তো তাড়া করছিল মুশফিকুর রহিমকে! তাই তো টস জয়ের পর প্রথমে ফিল্ডিংয়ের সিদ্ধান্ত নিতে কোনো রকম দেরি করেননি। সেবার প্রথমে ব্যাটিং নিয়ে বিপদে পড়েছিল বাংলাদেশ, এবার ফিল্ডিং নিয়ে ব্যাকফুটে।

এই পচেফস্ট্রুমে ২০০২ সালে খেলা টেস্টে বাংলাদেশ দলের অধিনায়ক ছিলেন খালেদ মাসুদ পাইলট। টস জিতে প্রথমে ব্যাটিং নিয়েছিলেন। তারপর বাংলাদেশ মাত্র ২১৫ রানে অলআউট। অথচ পরের ইনিংসে দক্ষিণ আফ্রিকাকে অলআউটই করতে পারেননি বাংলাদেশ। সেই ইনিংসে শেষ পর্যন্ত ৫ উইকেটে ৪৮২ রান করে ইনিংস ঘোষণা করেছিল স্বাগতিকরা। সেই ম্যাচ থেকে শিক্ষা নিয়েই কিনা গতকাল ফিল্ডিংয়ের সিদ্ধান্ত নেন মুশফিক। অবশ্য টস জয়ের পর সিদ্ধান্তটা অধিনায়কের একক সিদ্ধান্ত নয়! টিম ম্যানেজমেন্টই সিদ্ধান্ত নেন— যেখানে বড় ভূমিকা থাকে দলপতির। এবার আগে থেকেই শোনা যাচ্ছিল পচেফস্ট্রুমের উইকেট এখন বেশ শুষ্ক। যে কারণে বেশি সুবিধা পাবেন ব্যাটসম্যানরা। তারপরেও টস জিতে প্রথমে ব্যাটিং করার কথা না ভেবে নেওয়া হয় ফিল্ডিংয়ের সিদ্ধান্ত। দিন শেষে দেখা যায় এই সিদ্ধান্তই কাল হয়ে দাঁড়িয়েছে।

বাংলাদেশের সিদ্ধান্ত যে সঠিক ছিল না তা খুব ভালো করেই প্রমাণ করলেন দক্ষিণ আফ্রিকার দুই ওপেনার—ডিন এলগার ও এইডেন মার্করাম। এলগার তুলে নিয়েছেন সেঞ্চুরি। তবে একটুর জন্য সেঞ্চুরি মিস করেছেন মার্করাম। দারুণ খেলছিলেন দক্ষিণ আফ্রিকার নবাগত এই ব্যাটসম্যান। এটি যে তার প্রথম টেস্টে বোঝাই যাচ্ছিল না। ওভারে কোনো একটা বাজে বল পেলেই তা সীমানার বাইরে পাঠিয়ে দিয়েছেন। তবে এলগারের সঙ্গে ভুল বোঝাবুঝির কারণে রান আউট হয়ে গেছেন। তা না হলে অভিষেক ম্যাচেই পেয়ে যেতেন সেঞ্চুরি। তাই ৯৭ রানে মার্করামের আউটটা গ্যালারির দর্শকদের কাছে ছিল বিষাদময়।

দক্ষিণ আফ্রিকার ওপেনিং জুটিতে এসেছিল ১৯৬ রান। এই জুটি বাংলাদেশকে ম্যাচ থেকে দূরে সরে দিয়েছে। গতকাল বাংলাদেশের বোলাররাও তাদের সেরা খেলাটা প্রদর্শন করতে পারেননি। তিন পেসার—মুস্তাফিজুর রহমান, শফিউল ইসলাম, তাসকিন আহমেদ কোনো আতঙ্কই সৃষ্টি করতে পারেননি। হয়তো মুশফিক ভেবেছিলেন সকালের ময়েশ্চারকে কাজে লাগিয়ে দ্রুত উইকেট তুলে নেওয়া সম্ভব হলে চিত্র ভিন্ন রকম হবে। কিন্তু বোলারদের কাছ থেকে কোনো রকম সহযোগিতা পাননি। সে কারণেই ফিল্ডিং নেওয়ার সিদ্ধান্ত আরও বাজে লেগেছে। একটা মজার বিষয় হচ্ছে, ম্যাচের ভয় যাই হোক না কেন দক্ষিণ আফ্রিকার মাটিতে বাংলাদেশের টস ভাগ্য কিন্তু দারুণ। এর আগে ২০০২ ও ২০০৮ সালে খেলা চার টেস্টে চারবারই টস জিতেছিল বাংলাদেশ। কালকের ম্যাচেও জিতেছেন মুশফিক। অর্থাৎ টসের ক্ষেত্রে পাঁচে পাঁচ। কিন্তু আগের চার টেস্টেই ইনিংস ব্যবধানে হেরেছিল বাংলাদেশ। এক্ষেত্রেও কি তবে পাঁচে পাঁচ নাকি ভিন্ন দৃশ্য দেখা যাবে? প্রথম দিনের প্রথম দুই সেশনে কিন্তু টাইগারদের পাত্তাই দেয়নি দক্ষিণ আফ্রিকা। ৫৫ ওভারে করেছিল ১৯৮ রান। স্বাগতিকদের হারাতে হয়েছিল মাত্র এক উইকেট। স্কোর বোর্ডে তাকালেই বোঝা যায় ম্যাচে বাংলাদেশ দল কতটা অসহায়।

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর