শনিবার, ৩০ সেপ্টেম্বর, ২০১৭ ০০:০০ টা
এই প্রথম ওপেনিংয়ের বাইরে

বিশ্রামের খেসারত তামিমের

ক্রীড়া প্রতিবেদক

বিশ্রামের খেসারত তামিমের

দুর্ভাগ্য ডিন এলগারের। ডাবল সেঞ্চুরি থেকে মাত্র এক রান দূরে থেকে ফিরেছেন সাজঘরে। ১৯৯ রানে আউট হয়ে এলগার যেমন চমকে দিয়েছেন ক্রিকেটপ্রেমীদের, তেমনি ইমরুল কায়েসের সঙ্গে লিটন দাসকে ওপেনে নামতে দেখে চোখ কপালে ওঠার উপক্রম হয়েছে সবার। তাহলে কি তামিম ইকবাল আহত হয়েছেন? না, তেমন কিছু নয়। দিনের দ্বিতীয় সেশনে প্রায় ৪৯ মিনিট মাঠের বাইরে বিশ্রামে ছিলেন বাঁ হাতি ওপেনার। তাই নিয়ম অনুযায়ী ওপেন করতে নামতে পারেননি। টিম ম্যানেজমেন্ট বাধ্য হয়ে ইমরুলের সঙ্গী হিসেবে ওপেন করতে পাঠায় লিটনকে। নিয়মের বেড়াজালে পড়ে এই প্রথম তামিম ওপেন করতে নামেননি। আগের ৫১ টেস্টের ৯৮ ইনিংসের সবগুলোতেই তামিম ছিলেন স্ট্রাইকএন্ডে। অর্থাৎ ইনিংসের প্রথম বল খেলেছেন তিনি। অবশ্য মুশফিকুর রহিম আউট হওয়ার পরে ৫ম ব্যাটসম্যান হিসেবে ব্যাটিংয়ে নামেন তিনি। নিয়ম অনুযায়ী যতটা সময় মাঠের বাইরে ছিলেন ঠিক সেই সময় অতিক্রান্ত হওয়ার পর ব্যাটিংয়ে নামতে পারেন বিশ্রামে যাওয়া ব্যাটসম্যান। সেই নিয়ম মেনেই তামিমকে ব্যাটিংয়ে নামতে হয়েছে।

তামিম বিশ্রাম নেওয়ায় কঠিন মুহূর্তের সম্মুখীন হতে হয় লিটনকে। দক্ষিণ আফ্রিকার ইনিংসের পুরোটা সময় উইকেট কিপিং করেছেন ক্যারিয়ারের পাঁচ নম্বর টেস্ট খেলতে নামা লিটন। উইকেটের পেছনে গ্লাভস হাতে ছিলেন ১৪৬ ওভার। ক্লান্তিভাব দূর করার আগেই নেমে পড়তে হয় ব্যাট হাতে। নিজেকে উইকেটে থিতু করার আগে আবার ফিরে আসেন সাজঘরে। মরনে মরকেলের অফ স্ট্যাম্পের বাইরের বলটিকে অহেতুক খেলতে গিয়ে দ্বিতীয় স্লিপে হাশিম আমলার তালুবন্দী হন লিটন। ওয়ানডে স্টাইলে ৮৬.২০ স্ট্রাইকে ২৯ বলে ৪ বাউন্ডারিতে ২৫ রান করেন তিনি। ইমরুল তার ব্যর্থতার ধারাবাহিকতা ধরে রেখে সাজঘরে ফিরেছেন মাত্র ৭ রানে। কাগিসো রাবাদার শর্ট বলে শিক্ষানবিসের মতো মার্করামের ক্যাচ হন ইমরুল। গত ১০ ইনিংসে একটি মাত্র হাফ সেঞ্চুরির ইনিংস খেলা ইমরুলের সম্ভবত ক্যারিয়ারের বিদায় ঘণ্টা বেজে গেছে এই আউটে। গত অক্টোবরে মিরপুরে ইংল্যান্ডের বিপক্ষে ঐতিহাসিক জয়ের ম্যাচে খেলেছিলেন ৭৮ রানের ইনিংস। এর পরের ইনিংসগুলো একজন ওপেনারের জন্য রীতিমতো হাস্যকর-১, ৩৬*, ৩৪, ০, ০, ২, ৪, ১৫ ও ৭।

তামিম ওপেন করতে না নামায় ভীষণ চাপে পড়ে যায় বাংলাদেশ। দ্বিতীয় সেশনে তামিম ৪৯ মিনিট মাঠের বাইরে ছিলেন। তামিম যখন বিশ্রামে, তখন চা বিরতিতে যায় স্বাগতিক দক্ষিণ আফ্রিকা। দিনের তৃতীয় সেশনে ব্যাটিং করতে না নেমে বাংলাদেশকে পাঠায়। প্রোটিয়া অধিনায়ক ফাফ ডু প্লেসির ইনিংস ঘোষণায় বিপদে পড়ে টাইগাররা। নিয়মিত ওপেনার তামিমকে ছাড়াই ব্যাটিংয়ে নামে। তামিমের অভাব অনুভূত হয় ৩৬ রানে দুই ওপেনারকে হারিয়ে। ডু প্লেসিস এর আগে ২০১৬ সালে অ্যাডিলেডে অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে ইনিংস ঘোষণা করেছিলেন। মাঠের বাইরে থাকায় অসি ওপেনার ডেভিড ওয়ার্নার ওপেন করতে পারেননি।

তামিম এই মুহূর্তে বাংলাদেশের সবচেয়ে ফর্মে থাকা ব্যাটসম্যান। চলতি বছরে ৬ টেস্টের ১০ ইনিংসে তামিমের ব্যাট থেকে বেরিয়েছে ২৪, ৩, ৫৭, ১৯, ৪৯, ৮২, ৭১, ৭৮, ৯ ও ১২ রানের ইনিংস। কলম্বোয় শততম টেস্টে জয়ে খেলেছিলেন ৪৯ ও ৮২ রানের ইনিংস। মিরপুরে অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে ২০ রানের ঐতিহাসিক জয়ের টেস্টের উভয় ইনিংসে ছিল জোড়া হাফ সেঞ্চুরি ৭১ ও ৭৮। ফর্মের তুঙ্গে থাকা তামিমকে ছাড়াই এই প্রথম ৯ বছরে অন্য ওপেনাররা ব্যাটিং করলেন।

সর্বশেষ খবর