মঙ্গলবার, ৯ জানুয়ারি, ২০১৮ ০০:০০ টা

বাফুফের নতুন রেকর্ড

ক্রীড়া প্রতিবেদক

এক ম্যাচ আগেই শিরোপা নিশ্চিত করে ফেলেছে ঢাকা আবাহনী। পেশাদার ফুটবল লিগের আকর্ষণও শেষ হয়ে গেছে। ১১ জানুয়ারি এই আসরের পর্দা নামবে। দেখতে দেখতে ১০টি পেশাদার লিগ শেষ হতে চলেছে। ২০০৭ সালে অভিষেক ঘটার পর বাফুফে কর্মকর্তাদের বক্তব্য ছিল প্রফেশনাল লিগ দেশের ফুটবলের চেহারা পাল্টে দেবে। কাজী সালাউদ্দিন সভাপতি হওয়ার পরতো বলেই দিয়েছিলেন আমরা শুধু লিগের জন্য লিগ করব না। বাংলাদেশে প্রকৃতপক্ষে পেশাদারিত্ব চালু করব। হুট করে পরিবর্তন করা সম্ভব নয়। ধীরে ধীরে আমরা ইউরোপিয়ান লিগই অনুসরণ করব। ১০ বছর হতে চললো পেশাদার লিগ দেশের ফুটবলে নতুনত্ব আনতে পেরেছে কি? ১০ বছরে সালাউদ্দিনই ৯ বছর ধরে বাফুফে সভাপতি। মূল দায়ভারতো তাকেই নিতে হবে। কথায় কথায় তিনি ইউরোপ ও ল্যাটিন আমেরিকার উদাহরণ দেন। ব্যস এ পর্যন্তই। ভারতের আই লিগইতো প্রফেশনাল লিগ। প্রতিবেশী দেশটি যেভাবে আয়োজন করছে। বাংলাদেশ তো তাও পাচ্ছে না। ১০ বছর একেবারে কম সময় নয়। কিছুটা হলেও তো পরিবর্তন আসা উচিত ছিল। কিন্তু পেশাদারহীনভাবেই এ লিগ এগিয়ে চলেছে। পেশাদার লিগে অনেক নিয়ম-কানুন আছে। বাংলাদেশের প্রেক্ষাপটে সব নিয়ম মানা সম্ভব নয়। প্রতিটি ক্লাবের জিমনেসিয়াম, অনুশীলন মাঠ এমনকি আলাদা ভেন্যুও বাধ্যতামূলক। যা বাংলাদেশে স্বপ্নেও কল্পনা করা যায় না। ভেন্যুর কথা বললে তো শুধুই বঙ্গবন্ধু জাতীয় স্টেডিয়াম। ১২টা দল হোম ও অ্যাওয়ে ম্যাচ খেলছে এখানেই। ঢাকার বাইরে যে পেশাদার লিগ হয়নি তাও বলা যাবে না। শুরুতে চট্টগ্রাম, ফেনী ও সিলেটেও বিভিন্ন দলের ভেন্যু করা হয়েছে। পরবর্তীতে গোপালগঞ্জ ও ময়মনসিংহেও খেলা হয়েছে। এবার লিগ শুধু ঢাকাতেই সীমাবদ্ধ ছিল। চট্টগ্রামে হবে হবে করে ম্যাচ আয়োজন করা হয়নি। এক্ষেত্রে বাফুফে একটা বিরল রেকর্ডও গড়েছে বলা যায়। কেননা পৃথিবীর একমাত্র দেশ হিসেবে বাংলাদেশে এক ভেন্যুতেই পেশাদার লিগ হয়েছে। এ ব্যাপারে বাফুফের বক্তব্য ছিল এখানে তারা অসহায়। কেননা ক্লাবগুলো নানা অজুহাত দেখিয়ে ঢাকার বাইরে খেলতে চায় না। কথাটা পুরোপুরি সত্য। কিন্তু ক্লাব না করলে বাফুফে তা শুনবে কেন? ফিফার নিয়ম মানবে না কেন? ঢাকার অধিকাংশ ক্লাবই লিগে অংশ নেয়। সেক্ষেত্রে বঙ্গবন্ধু স্টেডিয়াম প্রাধান্য পাবেই। জেলা না হোক অন্তত আট কিংবা চার বিভাগে পেশাদার লিগ করাটা কি খুবই কষ্টকর। আসলে ইচ্ছা ও আন্তরিকতা থাকলে সবই সম্ভব। কোন কোন দলের ঢাকার বাইরে খেলতে আপত্তি তা জানা নেই। তবে চ্যাম্পিয়নশিপ লিগে বসুন্ধরা কিংস রংপুরকে হোম ভেন্যু করতে চেয়েছিল। বাফুফে কর্মকর্তারা মাঠ পরিদর্শন করে সবুজ সংকেতও দিয়েছিল। তারপরও বসুন্ধরা কিংসের রংপুরে খেলা হয়নি। ঢাকার বাইরে তো এমনিতেই ফুটবল হয় না। কয়েক জায়গা যদি পেশাদার লিগ হয় ফুটবল কিছুটা হলেও তো উপকৃত হতো। অনুশীলনের মাঠেরও তো করুণ হাল। ঢাকা আবাহনী, শেখ জামাল, শেখ রাসেল বা রহমতগঞ্জ ছাড়া কারও আলাদা অনুশীলন মাঠ আছে কি? অধিকাংশ দলই যাযাবরের মতো ঘুরে বেড়ায়। পেশাদার লিগে পেশাদারিত্ব নিয়ে অনেক লেখালিখি হয়েছে। তবু নীরব বাফুফে। তবে ধন্যবাদ দিতে হয় নিয়মিত লিগটা হচ্ছে। এক্ষেত্রে আবার বড় অবদান ক্লাবগুলোরই। ফুটবলের দুর্দিনে তারা যে অর্থ খরচ করে দল গড়ছে এটাই বিস্ময় ব্যাপার। বাফুফের ঘুম কখনো ভাঙবে কিনা তা অনিশ্চিত। অন্তত একটা ব্যাপারে তারা গুরুত্ব দিক। লিগের সিডিউল অর্থাৎ মৌসুম পরিবর্তন করলে ক্ষতিতো নেই। মে মাসে মৌসুম শুরু হওয়ায় বৃষ্টিতে বার বার লিগ বাধাগ্রস্ত হচ্ছে। মাঠ খেলারও অনুপযোগী হয়ে পড়ছে। যে কারণে ১২ দলকে নিয়ে লিগ শেষ করতে লম্বা সময় লেগে যাচ্ছে। শীত মৌসুমে লিগ কি চালু করা যায় না? ক্লাবগুলোও তো তাই চাচ্ছে। বাফুফের বক্তব্য ছিল আগেও লিগ বর্ষা মৌসুমেই হয়েছে। তাই বলে কি পরিবর্তন আনা যাবে না। আগে তো শুধু শীতকালেই ক্রিকেট হতো।

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর