জিম্বাবুয়ের বিরুদ্ধে আজ খেলতে নামছে বাংলাদেশ। মাশরাফিদের ফাইনাল নিশ্চিত হয়ে গেছে আগেই। আজ হারলেও সমস্যা নেই। এমনকি পরের ম্যাচে শ্রীলঙ্কার বিরুদ্ধে হারলেও কিছু যায় আসে না! তাই রিজার্ভ বেঞ্চ ঝালিয়ে নিতেই পারে টিম ম্যানেজমেন্ট। আয়েশী মেজাজে খেলতে পারেন ক্রিকেটাররাও। কিন্তু তামিম ইকবাল জানালেন, প্রতিটি আন্তর্জাতিক ম্যাচই সমান গুরত্বপূর্ণ। রিল্যাক্স হওয়ার কোনো সুযোগ নেই। ড্যাসিং ওপেনারের ভাষ্য, ‘এই সিরিজে দেখছি না কারও মধ্যে রিল্যাক্স ভাবটা কাজ করছে। দুটি ম্যাচ জিতে গেছি, হারলেও কিছু হবে না—এই জিনিসটা দেখছি না। প্রত্যেকটা আন্তর্জাতিক ম্যাচে একটা সুযোগ থাকে সেঞ্চুরি করা বা ৫ উইকেট নেওয়ার। এটা নিয়ে সবাই ভাবছে। দুটি ম্যাচে আমাদের অর্জনের অনেক কিছুই আছে।’
প্রথম দুই ম্যাচে পাত্তাই পায়নি দুই দল— জিম্বাবুয়ে ও শ্রীলঙ্কা। দুই ম্যাচেই বোনাস পয়েন্টসহ জিতেছে বাংলাদেশ। টাইগাররা জিম্বাবুয়েকে উড়িয়ে দিয়েছিল ৮ উইকেটে। দ্বিতীয় ম্যাচে হাতুরাসিংহের শ্রীলঙ্কাকে হারিয়েছে ১৬৩ রানের বিশাল ব্যবধানে। যেটি ছিল বাংলাদেশের ওয়ানডে ইতিহাসের সেরা জয়।
১৭৬ ওয়ানডেতে তামিমের সেঞ্চুরি মাত্র ৯টি। অথচ হাফ সেঞ্চুরি ৪০টি। সেঞ্চুরি বেশি না হওয়ায় খানিকটা আক্ষেপ কাজ করছে তামিমের মনে, ‘সত্যি আমার নিজের কাছে খারাপও লাগে। আমার আরও অনেক সেঞ্চুরি করা উচিত ছিল। হ্যাঁ, সেঞ্চুরির সংখ্যা দুই অঙ্কে যত দ্রুত নেওয়া যায় সেটা আমার লক্ষ্য থাকবে। ডাবল ফিগার দেখতেও ভালো লাগে, শুনতেও ভালো লাগে। ১৭০টির বেশি ম্যাচ খেলে ফেলেছি এবং প্রায় ৪০টির মতো ফিফটি করেছি। সেদিক থেকে চিন্তা করলে এটা হতাশাজনক যে আমার আরও সেঞ্চুরি করা উচিত ছিল।’
সব শেষ ম্যাচে তিন ফরম্যাটের ক্রিকেট মিলে ১১ হাজার রানের মাইলফলক স্পর্শ করেছেন তামিম। ড্যাসিং ওপেনারের সামনে অপেক্ষা করছেন আরেকটি রেকর্ড। আজ ৬৬ রান করতে পারলেই বাংলাদেশের প্রথম ব্যাটসম্যান হিসেবে শুধু ওয়ানডেতেই ৬ হাজার রানের মাইলফলক স্পর্শ করবেন তামিম।
কোনো রেকর্ডকে এগিয়ে রাখবেন? এমন প্রশ্নে ড্যাসিং ওপেনার বলেন, ‘দেখেন, দুটোই মাইলফলক। কেউ ১০ হাজার রান করলে এটা অবশ্যই মাইলস্টোন। জানি না কয়জন করছে। সাকিবের ১০ হাজার রান হয়েছে, মুশফিক সব মিলিয়ে ৩০০ ম্যাচ খেলেছে। এটাও মনে হয় না যে খুব বেশি মানুষ করেছে। আমার কাছে ব্যক্তিগতভাবে ভালো লাগছে। বাংলাদেশের ক্রিকেটে ২-৩ বছর হলো ভালো খেলতে শুরু করেছে। সত্যি বলতে কী, এক সময় হয়তো আমাদের কোনো রেকর্ড ছিল না। কারণ আমরা শিখছিলাম। আমরা খুব নতুন ছিলাম আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে। এখন অর্জন করা শুরু করেছি। তাই সেলিব্রেট করা উচিত। আজ থেকে ১০ বছর পর হয়তো এই রেকর্ডগুলো এত হাইলাইটেড হবে না। তখন আমাদের যারা নতুন খেলবেন তারা আরও ভালো কিছু করবেন।’
সাকিব আল হাসান আগে ব্যাটিং করতেন চার কিংবা পাঁচ নম্বরে। কিন্তু এই ত্রি-দেশীয় সিরিজে তিন নম্বরে ব্যাটিং করছেন। রানও পাচ্ছেন। আর তিনে ব্যাটিং করার কারণে বাইশ গজে তামিমের সঙ্গে তার দেখা হওয়ার সুযোগও বেশি। সাকিবের তিনে খেলা সম্পর্কে তামিমের মত, ‘অনেক সময় এমন হতো যে ৪০ রানে তিন উইকেট নাই। এমনও হতো যে তিন উইকেটে ২০০। কিন্তু তিনে ব্যাট করাটা অনেক গুরুত্বপূর্ণ। এমনকি ইনিংসে দ্বিতীয় বলেই আপনাকে খেলতে হতে পারে। আবার এমনও হতে পারে আপনি ২৫ ওভার পর নামছেন। আমার কাছে মনে হয় সাকিব খুব স্মার্ট ক্রিকেটার। সে এই পজিশনে পারফেক্ট কিনা তা এখনই বলার সময় আসেনি। আমি যেটা বলতে পারি সে সামর্থ্য রাখে।’
ফাইনালে বাংলাদেশের প্রতিপক্ষ কে তা এখনো নিশ্চিত হয়নি। জিম্বাবুয়ে হোক কিংবা শ্রীলঙ্কা—তা নিয়ে কোনো মাথা ব্যথা নেই তামিমের, ‘আমি ওরকম করে বলব না যে শ্রীলঙ্কাকে চাই বা জিস্বাবুয়েকে চাই। আমাদের কাজ হলো খেলা । আমাদের আরও ভালো কিছু করার সুযোগ আছে। ফাইনালে যার সঙ্গে দেখা হবে সেভাবেই খেলব। ভালো খেলতে হবে।’