বৃহস্পতিবার, ২৫ জানুয়ারি, ২০১৮ ০০:০০ টা

টাইগারদের ঝালিয়ে নেওয়ার ম্যাচ

মেজবাহ্-উল-হক

টাইগারদের ঝালিয়ে নেওয়ার ম্যাচ

শ্রীলঙ্কার বিরুদ্ধে আজকে হারলে ক্ষতি নেই। জিতলে র‌্যাঙ্কিং উন্নতির দারুণ একটি সুযোগ। তা ছাড়া টানা দুই ম্যাচে লঙ্কা বধের বাড়তি আনন্দ তো থাকছেই। তবে আজকের ম্যাচটি ব্যাটসম্যানদের জন্য আরেকটি পরীক্ষা।

প্রথম তিন ম্যাচেই বড় জয় পেয়েছে বাংলাদেশ। প্রতিটি ম্যাচেই দুর্দান্ত ব্যাটিং করেছেন বাংলাদেশের টপ অর্ডার ব্যাটসম্যানরা। বিশেষ করে, তামিম ইকবাল ও সাকিব আল হাসান। তামিমের টানা তিন হাফ সেঞ্চুরি আর সাকিবের দুটি। প্রথম ম্যাচে তো বাংলাদেশের মিডল অর্ডার ব্যাটসম্যানদের বাইশগজে নামতেই হয়নি। দ্বিতীয় ম্যাচে শ্রীলঙ্কার বিরুদ্ধে তেমন কোনো চাপ ছিল না। টপ অর্ডার ব্যাটসম্যানরাই আসল কাজটা করেছিলেন। তৃতীয় ম্যাচে জিম্বাবুয়ের বিরুদ্ধে সুযোগ পেয়েছিলেন মিডল অর্ডার ব্যাটসম্যানরা। কিন্তু নিজেদের প্রমাণ করতে ব্যর্থ হয়েছেন।

সাব্বির রহমান, নাসির হোসেনরা তাদের উইকেট বিলিয়ে দিয়ে এসেছেন। মুশফিকের পর মিডল অর্ডারে আর কোনো ব্যাটসম্যান দুই অঙ্কের কোটায় স্কোর নিয়ে যেতে পারেননি।

বাংলাদেশ দলে অনেক আগে এমন দৃশ্য দেখা যেত, একজন ব্যাটসম্যান আউট হওয়ায় হুড়মুড় করে ভেঙে পড়ত। শেষ ম্যাচে জিম্বাবুয়ের বিরুদ্ধেও এমন দৃশ্য দেখা গেছে। তামিম-সাকিবের দুরন্ত শুরুর পরও ইনিংসটা বড় হয়নি। তবে দৃঢ়তা দেখিয়েছেন লোয়ার অর্ডার ব্যাটসম্যানরা। শেষ তিন ব্যাটসম্যান সানজামুল, মুস্তাফিজুর রহমান ও রুবেল হোসেন মিলে করেছিলেন ৪৫ রান। তা না হলে দলীয় স্কোর দুইশত পেরুতো না। বাংলাদেশের লোয়ার অর্ডার ব্যাটসম্যানরা আগে ঠিকমতো ব্যাট করতে পারতেন না। কিন্তু চন্ডিকা হাতুরাসিংহে যাওয়ার পর সহকারী কোচ রিচার্ড হ্যালসল বোলারদের দিয়ে নিয়মিত ব্যাটিং অনুশীলন করিয়েছেন। যার ফলটা গত ম্যাচে পেয়েছে বাংলাদেশ। শেষ তিন ব্যাটসম্যান কী অসাধারণ ব্যাটিং করলেন। বিশেষ করে শেষ ওভারের কথা আলাদা করে বলতে হয়। প্রথম বলেই লং অনের ওপর দিয়ে বিশাল ছক্কা হাঁকান রুবেল। ম্যাচে সেটি ছিল দ্বিতীয় ছক্কা। একই ওভারের শেষ বলেও দারুণভাবে বাউন্ডারি হাঁকিয়েছেন মুস্তাফিজ।

বড় দলের বড় গুণ হচ্ছে, একাদশের সবার মধ্যেই ব্যাটিং করার সামর্থ্য থাকতে হবে। শুধুমাত্র টপ অর্ডারের ব্যাটসম্যানদের ওপর ভরসা করে প্রত্যেক ম্যাচে বড় স্কোর করা কঠিন। যেন টপ অর্ডার ফেইল করবে সেদিন মিডল অর্ডার হাল ধরবে। বাংলাদেশ দলের ব্যাটিং লাইন আপ এখন অনেক লম্বা। তবে গত তিন ম্যাচে বড় অবদান রেখেছেন সাকিব-তামিম। আজকের ম্যাচেও যে তারাই ভালো পারফর্ম করবেন তা তো না। তাই অন্য ব্যাটসম্যানদের দায়িত্ব নিয়ে ব্যাটিং করতে হবে। ওপেনিংয়ে তামিমকে ঠিকমতো সঙ্গ দিতে পারছেন না এনামুল হক বিজয়। তিন ম্যাচে তার একটিও হাফ সেঞ্চুরিও নেই। দীর্ঘ তিন বছর পর দলে সুযোগ পেয়েও তার বড় ইনিংস খেলতে পারছেন না। যদিও ঘরোয়া লিগে বড় বড় ইনিংস খেলেই দলে সুযোগ পেয়েছেন বিজয়। কিন্তু দলে সুযোগ পেয়ে নামের প্রতি সুবিচার করতে পারছেন না এই ওপেনার। নাসির হোসেন তিন ম্যাচে করেছেন মাত্র দুই রান। প্রথম দুই ম্যাচে রানের খাতা খোলার আগেই আউট হয়েছেন। তৃতীয় ম্যাচে বড় কিছু করার সুযোগ ছিল তার সামনে। কিন্তু মাত্র দুই রান করার পর দৃষ্টিকটূভাবে আউট হয়ে ড্রেসিং রুমে ফিরেছেন তিনি। ত্রি-দেশীয় সিরিজের প্রথম ম্যাচে ব্যাট করার সুযোগই পাননি সাব্বির রহমান। তবে দ্বিতীয় ম্যাচে দারুণ ব্যাটিং করেছেন । মাত্র ১২ বলে করেছিলেন অপরাজিত ২৪ রান। যদিও তৃতীয় ম্যাচে জিম্বাবুয়ের বিরুদ্ধে সুবিধা করতে পারেননি। তবে আজ নিজেকে নতুন করে প্রমাণ করার সুযোগ পাচ্ছেন সাব্বির। আগের ম্যাচে লঙ্কানদের বিরুদ্ধে মুশফিকুর রহিমও দারুণ ব্যাটিং করেছেন। খেলেছিলেন ৬২ রানের ইনিংস। যদিও জিম্বাবুয়ের বিরুদ্ধে দুই ম্যাচেই ভালো করতে পারেননি মিস্টার ডিপেন্ডেবল। তবে ফাইনালের আগে ঝালিয়ে নেওয়ার একটা বাড়তি সুযোগ পাচ্ছেন মুশি।

সর্বশেষ খবর