সন্ধ্যার অন্ধকার ঘনিয়ে আসতেই বঙ্গবন্ধু জাতীয় স্টেডিয়ামে রংবেরঙের বাতি জ্বলে উঠল। লাল-নীল-হলুদ আরও কত রং! সঙ্গে চলল ডিজে শো এবং ক্রীড়াজগতে বাংলাদেশের সাফল্যগাথা নিয়ে তৈরি করা এভি প্রদর্শনী। এসব ছিল ট্রেইলার। বাংলাদেশ যুব গেমস উদ্বোধনী অনুষ্ঠানের মূল পর্ব শুরু হয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার আগমনের পর। ঘড়ির কাঁটায় তখন সন্ধ্যা ৬টা ৩৯ মিনিট। হঠাৎ করেই বেজে উঠল নাকাড়া। বাদশাহী কায়দায় ঘোষণা করা হলো প্রধানমন্ত্রীর আগমন। এরপরই জাতীয় সংগীতের সুর। মার্চ পাস্ট করে একে একে আটটা বিভাগীয় অ্যাথলেট দল পতাকা নাড়তে নাড়তে লাল গালিচা দিয়ে প্রবেশ করে স্টেডিয়ামের সবুজ চত্বরে। অতিথিদের আসন গ্রহণ এবং বক্তব্যের পর প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা প্রথম বাংলাদেশ যুব গেমসের আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন ঘোষণা করেন। এ সময় বক্তৃতায় তিনি আশা প্রকাশ করেন, বাংলাদেশ ক্রিকেটে একদিন বিশ্বকাপ জয় করতে পারবে। এ ছাড়াও তিনি মনে করেন, যুব গেমস বাংলাদেশের মানুষের মাঝে, বিশেষ করে তরুণদের মধ্যে নতুন উন্মাদনা নিয়ে আসবে।
যুব গেমসের উদ্বোধন ঘোষণার পরপরই মশাল প্রজ্বালন করতে এগিয়ে আসেন কমনওয়েলথ গেমসে সোনাজয়ী শুটার আসিফ হোসেন খান। হেলে-দুলে মাঠে প্রবেশ করে গেমসের মাসকট ‘তেজস্বী’। দর্শকদের উদ্দেশে হাত নেড়ে শুভেচ্ছা জানিয়ে মাঠ ছাড়ে মাসকট।
গতকাল হলো আনুষ্ঠানিক যাত্রা। চূড়ান্ত পর্বে ২১টি ক্রীড়া ডিসিপ্লিনে মোট ২ হাজার ৬৬০ জন ক্রীড়াবিদ অংশগ্রহণ করবেন। ১৫৯টি ইভেন্টের ১ হাজার ১১৪টি পদকের জন্য লড়াই করবেন তারা।
বঙ্গবন্ধু জাতীয় স্টেডিয়াম ছাড়াও বীরশ্রেষ্ঠ শহীদ সিপাহী মোস্তফা কামাল স্টেডিয়াম, জাতীয় ক্রীড়া পরিষদ জিমনেশিয়াম, শহীদ সোহরাওয়ার্দী ইনডোর স্টেডিয়াম, শেখ রাসেল রোলার স্কেটিং কমপ্লেক্স, বিএএফ শাহীন স্কুল, শহীদ ক্যাপ্টেন মনসুর আলী হ্যান্ডবল স্টেডিয়াম, সৈয়দ নজরুল ইসলাম সুইমিং কমপ্লেক্স, মোহাম্মদ আলী বক্সিং স্টেডিয়াম, গুলশান শুটিং কমপ্লেক্স, শহীদ তাজউদ্দীন ইনডোর স্টেডিয়াম, কাবাডি স্টেডিয়াম, শহীদ আহসানউল্লাহ স্টেডিয়াম, ভলিবল স্টেডিয়াম, মওলানা ভাসানী হকি স্টেডিয়াম, বিকেএসপির ইনডোর এবং দাবা ফেডারেশনে বিভিন্ন ইভেন্ট আয়োজন করা হবে। যুব গেমসের মিলনমেলা শেষ হবে ১৬ মার্চ।
উদ্বোধনী অনুষ্ঠানের জন্য বাজেটের কমতি ছিল না। সেই অনুযায়ী অনেক কিছুই করার চেষ্টা করেছেন আয়োজকরা। তবে সবকিছুর মধ্যে কেমন যেন একটা অগোছালো ভাব। তারপরও প্রথমবারের মতো আয়োজিত হতে যাচ্ছে বাংলাদেশ যুব গেমস। এখান থেকেই তৈরি হবে ভবিষ্যতের তারকা। যারা একদিন ক্রীড়া ক্ষেত্রে বাংলাদেশকে বহুদূর নিয়ে যাবে। নতুন পরিচয় এনে দেবে দেশকে। এবারের আয়োজন থেকে এমন আশাই করেন সবাই।