সোমবার, ২ এপ্রিল, ২০১৮ ০০:০০ টা

৪৩ বছর পর দুর্নাম ঘুচল!

ক্রীড়া প্রতিবেদক

৪৩ বছর পর দুর্নাম ঘুচল!

সত্তর দশকে বাংলাদেশের ফুটবল জনপ্রিয়তা তুঙ্গে। কাজী সালাউদ্দিন, অমলেশ সেন, মনোয়ার হোসেন নান্নু, শামসুল আলম মঞ্জু, আশরাফ উদ্দিন আহমেদ চুন্নু, গোলরক্ষক শহিদুর রহমান সান্টু, নওশের, এনায়েত মতো তারকা ফুটবলারের কমতি ছিল না তখন। অথচ সেই সময়ে দেশের ফুটবলে লজ্জাজনক হারের রেকর্ড রয়েছে। ১৯৭৫ সালে সালাউদ্দিনের নেতৃত্বে বাংলাদেশ অংশ নেয় মালয়েশিয়ায় মারদেকা কাপ টুর্নামেন্টে। তারকা খেলোয়াড় নিয়ে গড়া বাংলাদেশ গ্রুপপর্বে হংকংয়ের কাছে ৯-১ গোলে হেরে যায়। এরপর দক্ষিণ কোরিয়ার কাছেও ৯ গোলে হারে। কিন্তু হংকংয়ের কাছে প্রথম বড় ব্যবধানে হার বলে সেই লজ্জাটা ফুটবলপ্রেমীরা এখনো ভুলতে পারেনি।

যাক ৪৩ বছর পর সেই বেদনা কিছুটা হলেও দূর হলো। পুরুষ দল না পারলেও কিশোরীরা ঠিকই হংকংকে গোলের বন্যায় ভাসিয়েছে। তাও আবার হংকংয়ের মাটিতে। গতকাল হংকংয়ে অনুষ্ঠিত জকি আমন্ত্রণমূলক চার জাতি অনূর্ধ্ব-১৫ ফুটবলে মারিয়ারা ৬-০ গোলে স্বাগতিক হংকংকে হারিয়ে টুর্নামেন্টে অপরাজিত চ্যাম্পিয়ন হয়েছে।

টুর্নামেন্টে আগের দুই ম্যাচে বাংলাদেশ ১০-১ মালয়েশিয়া ও ইরানকে ৮-১ গোলে উড়িয়ে দেয়। জয় নয়, বাংলাদেশ গতকাল ড্র করলেই চ্যাম্পিয়ন। কেননা হংকং ইরান ও মালয়েশিয়াকে পরাজিত করে ১ গোলে। মারিয়া বলেছিলেন, জয় দিয়েই আমরা শিরোপার উৎসব করতে চাই। কথা রেখেছেন অধিনায়ক। অলিখিত ফাইনালে স্বাগতিকদের দাঁড়াতেই দেয়নি বাংলাদেশের কিশোরীরা।

১৯৭৫ সালে হংকংয়ের বিপক্ষে সালাউদ্দিন ছিলেন অধিনায়ক। ৪৩ বছর পর সেই কলঙ্ক যখন কিশোরীরা ঘুচাল। সেই সালাউদ্দিন দেশের ফুটবলের অভিভাবক। খেলোয়াড় হিসেবে যা পারেননি সেই গৌরবের শিরোপা পেলেন সভাপতি হিসেবে। শিরোপা জয়ে সালাউদ্দিন পুরো দলকে অভিনন্দন জানিয়েছেন। বলেছেন মেয়েরা দেশের মুখ উজ্জ্বল করায় সভাপতি হিসেবে আমি গর্বিত। হংকংয়ের ৯ গোল খাওয়া ম্যাচে আশরাফ উদ্দিন আহমেদ ছিলেন বাংলাদেশের খেলোয়াড়। মাঠে অসহায়ভাবে দেখেছেন হংকংয়ের গোল উৎসব। গতকাল মারিয়াদের শিরোপা জয়ে আবেগ আপ্লুত তিনি। বললেন, মেয়েদের সাফল্যে গর্ববোধ করছি। এতদিন এই লজ্জার জ্বালা বয়ে বেরিয়েছি। ৪৩ বছরে পুরুষ ফুটবলার যা পারেনি। মেয়েরা হংকংকে বিধ্বস্ত করে তাদেরই মাটিতে ইতিহাস রচনা করল। বুক থেকে বড় একটা পাথর সরে গেল। জোর গলায় বলতে ইচ্ছা হচ্ছে আমরাও পারি বিদেশের মাটিতে বিজয় পতাকা উড়াতে। নারী দলের প্রতি আমার প্রাণঢালা অভিনন্দন।’

 

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর