সোমবার, ২৩ এপ্রিল, ২০১৮ ০০:০০ টা

ক্লাব কাপে আবাহনীই সেরা

ক্রীড়া প্রতিবেদক

ক্লাব কাপে আবাহনীই সেরা

পারল না মেরিনার্স। ক্লাব কাপ হকির ফাইনালে জয়ী হয়ে শিরোপা ধরে রাখল আবাহনী। ম্যাচ শেষে ট্রফি হাতে ক্যামেরায় বন্দী হলেন চ্যাম্পিয়ন দলের খেলোয়াড়রা —বাংলাদেশ প্রতিদিন

সন্ধ্যার সূর্যটা তখন হেলে পড়েছে। তবে বৃষ্টির চাদরে আকাশ ঢাকা থাকায় গোধূলী আলোয় রক্তবর্ণা হতে পারেনি পশ্চিমাকাশটা। এমন মিষ্টিমধুর পরিবেশে খাজা রহমতউল্লাহ ক্লাব কাপ হকির ফাইনাল খেলতে আবাহনী ও মেরিনার্স যখন মাঠে নামার প্রস্তুতি নিচ্ছিল, তখনই ঝমঝমিয়ে বৃষ্টি। মুষলধারায় বৃষ্টিতে অন্ধকার হয়ে আসে চারদিক। স্টেডিয়ামের এক প্রান্ত থেকে আরেক প্রান্তে দেখা যাচ্ছিল না কিছুই। টানা বৃষ্টিতে নীল টার্ফেও জমে যায় পানি। বাধ্য হয়ে মাঠে নামেননি আম্পায়ারদ্বয়। বৃষ্টিবাধায় খেলা শুরু হয় নির্ধারিত সময়ের এক ঘণ্টা পর সন্ধ্যা ৭টায়। টানটান উত্তেজনার ফাইনালে ১-০ গোলে জিতে নতুন বছরের প্রথম শিরোপা জিতে নেয় আবাহনী। ক্লাব কাপে আবাহনীর এটা চতুর্থ শিরোপা। চারবার করে শিরোপা জিতেছে মোহামেডান ও ঊষাও। মজার বিষয়, দুটি ক্লাবই এবার বর্জন করেছে ৬ দলের ক্লাব কাপ টুর্নামেন্টটি। এ নিয়ে দুবার রানার্সআপ হয়েছে আরামবাগের দল মেরিনার্স ইয়াংস। হকি ফেডারেশনের প্রয়াত সাধারণ সম্পাদক খাজা রহমতউল্লাহর নামে প্রথমবারের মতো ক্লাব কাপ হকির নামকরণ করে হকি ফেডারেশন। টুর্নামেন্টে অংশ নেয়নি দুই প্রধান ক্লাব মোহামেডান ও ঊষা। দুই গ্রুপে বিভক্ত হয়ে অংশ নেয় ছয় দল। দাপুটে খেলা খেলে ফাইনালে উঠে আবাহনী ও মেরিনার্স। মেরিনার্স লিগ ও সেমিফাইনাল মিলিয়ে তিন ম্যাচে কোনো গোল খায়নি। গতকাল ফাইনালে টুর্নামেন্টের একমাত্র গোলটি খেয়েছে মেরিনার এবং তাতেই হেরেছে।

মৌসুমের প্রথম শিরোপা জিততে আবাহনী ও মেরিনার্স দলভুক্ত করে বিদেশি খেলোয়াড়। আবাহনীকে খেলেন মালয়েশিয়ার আজওয়ার বিন এ রহমান ও জুল পিডোয়াস বিন মিজান এবং মেরিনার্সে খেলেন যোগরাজ সিং ও পরামপ্রিত সিং। বিদেশি এবং জাতীয় দলের একাধিক খেলোয়াড়ের উপস্থিতিতে ফাইনাল হয়েছে ফাইনালের মতো। আক্রমণ, পাল্টা আক্রমণে ঠাসা ম্যাচটি অবশ্য দুই দুইবার বন্ধও হয়েছে দুই দলের খেলোয়াড়দের প্রতিবাদে। ম্যাচের একমাত্র গোলটি হয়েছে ৪০ মিনিটে। গোলদাতা সোহানুর রহমান সবুজ। প্রধান অতিথি হিসেবে পুরস্কার দেন বিসিবি সভাপতি নাজমুল হাসান পাপন। উপস্থিত ছিলেন খাজা রহমতউল্লাহ স্ত্রী নাদিরা রহমতউল্লাহসহ ফেডারেশন কর্তারা। টুর্নামেন্টের সর্বোচ্চ গোলদাতা (৬ গোল) মহসিন। বৃষ্টিবিঘ্নিত ম্যাচে শুরম্ন থেকেই আক্রমণাত্মক খেলা খেলতে থাকে দুই দল। অবশ্য বল নিয়ন্ত্রণে এগিয়েছিল আবাহনী। ম্যাচে ৪টি পেনাল্টি কর্নার পায় চ্যাম্পিয়ন আবাহনী। এরমধ্যে আবাহনীর দুটি গোল বাতিল করেন আম্পায়ার। এরফলে ম্যাচ বন্ধ ছিল প্রায় ২০ মিনিট। প্রথম গোল বাতিল হয় ১৬ মিনিটে। জটলা থেকে কৃষ্ণ কুমার ডি বক্সে দাঁড়িয়ে বল পোস্টে পাঠিয়ে আনন্দে ভাসান আবাহনীকে। আম্পায়ারও গোলের সংকেত দেন। কিন্তু বল পায়ে লাগার অভিযোগে প্রতিবাদ করেন মেরিনার্সের খেলোয়াড়রা। এরপর দুই আম্পায়ার শলাপরামর্শ করে গোলটি বাতিল করেন। তখন খেলা বন্ধ ছিল প্রায় ৮-৯ মিনিট। এরপর ২৫ মিনিটে পুনরায় আবাহনীর গোল বাতিল করেন আম্পায়ার। সবুজ গোল করলেও আম্পায়ার সেটা বাতিল করেন শুটিং সার্কেলের বাইরে থেকে হিট নেওয়ার জন্য। এবারও খেলা বন্ধ ছিল ১১ মিনিট। সব মিলিয়ে খেলা বন্ধ ছিল ২০ মিনিটের মতো। অবশেষে ৪০ মিনিট ম্যাচের একমাত্র গোলটি করেন সবুজ। পেনাল্টি কর্নার থেকে গোলটি করেন সবুজ। ইজওয়ানের শট স্টপ করেন সারোয়ার। এরপর সেটা গোল করেন সবুজ(১-০)। ওই গোলের পর মেরিনার্স মরিয়া হয়ে ওঠে। কিন্তু আবাহনীর রক্ষণভাগের দৃঢ়তার জন্য গোল পায়নি মেরিনার্স। আর ওই এক গোলেই শিরোপা জিতে মাঠ ছাড়ে আবাহনী।

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর