শনিবার, ১২ মে, ২০১৮ ০০:০০ টা

সাইকেল চেপে বিশ্বকাপে

রাশেদুর রহমান

সাইকেল চেপে বিশ্বকাপে

কায়রো থেকে রাশিয়ার পথে নউফেল

ফুটবলের পাগল ওরা। ভালোবাসে নিজের দেশকে। ফুটবলকে। প্রিয় দলের সমর্থনে বিশ্বকাপের আঙিনায় হাজির হতে কতটা পাগলামি করা যায়! এর কোনো সীমানা নেই। তবে এমন পাগলদের জন্যই ফুটবল এতটা মহান। মিসরের মোহাম্মদ বিন নউফেল কিংবা ইংল্যান্ডের জেমি ম্যারিয়ট ও মিচেল জোনসরা সত্যিই ফুটবলের পাগল। না হলে এমন সিদ্ধান্ত কেউ নিতে পারে! মোহাম্মদ বিন নউফেল প্রায় এক মাস আগেই সাইকেলে চড়ে যাত্রা করেছেন বিশ্বকাপের উদ্দেশে। ৫ হাজার কিলোমিটার প্যাডেল চালিয়ে যাবেন রাশিয়ায়। প্রিয় দলকে সমর্থন করবেন বলে। নউফেলের মতোই ইংল্যান্ডের দুই পাগল সমর্থক ম্যারিয়ট ও জোনস যাত্রা করছেন সাইকেলে চড়ে। তারা পাড়ি দিবেন প্রায় তিন হাজার কিলোমিটার।

মিসর থেকে সাইকেলে চড়ে রাশিয়া পৌঁছানো চাট্টিখানি কথা নয়। তবু মোহাম্মদ বিন নউফেল কায়রো থেকে যাত্রা করেছেন ১০ এপ্রিল। রাশিয়ার পথে তিনি মিসর ছাড়াও পাড়ি দিবেন জর্ডান, বুলগেরিয়া, রুমানিয়া, মলদোভা ও ইউক্রেন। ১৯৯০-এর পর প্রথমবারের মতো বিশ্বকাপ খেলতে যাচ্ছে মিসর। এ গ্রুপে মিসর মুখোমুখি হবে স্বাগতিক রাশিয়া, সৌদি আরব এবং দুই বারের বিশ্ব চ্যাম্পিয়ন উরুগুয়ের। ১৯ জুন সেন্ট পিটার্সবার্গে স্বাগতিক রাশিয়ার বিপক্ষে ম্যাচ দিয়ে শুরু হবে মিসরের বিশ্বকাপ অভিযান। সেই ম্যাচে থাকতে চান নউফেল। যাত্রার আগেই মিসরীয় তারকা মোহাম্মদ সালাহের সঙ্গে দেখা করেছেন নউফেল। তার এই অভিযাত্রা মিসরীয়দের জন্য প্রেরণার অফুরান উৎস হয়ে দেখা দিতে পারে বিশ্বকাপে!

নউফেলের যাত্রার কয়েক সপ্তাহ পরই দুই ইংলিশ পাগল মিলে সাইকেলে চড়ে বিশ্বকাপ দেখার ইচ্ছে পোষণ করেন। তবে জেমি ম্যারিয়ট এবং মিচেল জোনসের এমন সিদ্ধান্তের পেছনে একটা ছোট্ট কাহিনী আছে।

‘বান্ধবীকে নিয়ে দুপুরের খাবার খাচ্ছিলাম। আমরা খাবারের পাশাপাশি বিশ্বকাপ নিয়ে আলোচনা করছিলাম। একটা ভিন্ন ধরনের এবং চ্যালেঞ্জিং রাস্তা খুঁজছিলাম বিশ্বকাপে যাওয়ার। এই আলোচনার মধ্যেই আমি মিচেলকে সাইকেলে চড়ে বিশ্বকাপে যাওয়ার আমন্ত্রণ জানাই। মিচেলের সাইক্লিংয়ের অভিজ্ঞতা ছিল। আমার আমন্ত্রণ অনেকটা লুফে নেয় মিচেল।’ রাশিয়ান সংবাদ সংস্থা আরটিকে এভাবেই নিজেদের পরিকল্পনার সূত্রটা তুলে ধরেন জেমি ম্যারিয়ট। নিজেদের শহর এমসওর্থ থেকে ২৫ মে যাত্রা করবেন জেমিরা। তাদের লক্ষ্য ভোলগোগ্রাদে গিয়ে ১৮ জুন ইংল্যান্ড-তিউনিসিয়া ম্যাচ দেখা।

ব্রিটিশ মিডিয়া বেশ কয়েক মাস ধরেই রাশিয়া বিশ্বকাপ নিয়ে নেতিবাচক প্রচারণা চালিয়ে যাচ্ছে। বিশেষ করে বিশ্বকাপচলাকালীন রাশিয়া ভ্রমণে নিরুৎসাহিত করছে অনেকেই। কিন্তু রাশিয়াকে দারুণ এক দেশ বলে মন্তব্য করেছেন সাইকেলে চড়ে বিশ্বকাপগামী ম্যারিয়ট। তিনি বলেন, ‘রাশিয়া দারুণ একটি দেশ। আমি আগেও গিয়েছি। ভোলগোগ্রাদ এবং অস্ত্রাখান দেখেছি। ওখানকার মানুষরা অনেক বেশি আন্তরিক। পাশাপাশি ফুটবল পাগল।’ রাশিয়া বিশ্বকাপে ইংল্যান্ড অন্যতম ফেবারিট হিসেবেই খেলতে যাচ্ছে। তরুণদের নিয়ে দুর্দান্ত একটা দলই গড়ে তুলেছে তারা। হ্যারি কেইনরা জি গ্রুপে বেলজিয়াম, তিউনিসিয়া এবং বিশ্বকাপের নতুন অতিথি পানামার মুখোমুখি হবে। বিশ্বকাপে ইংল্যান্ডকে সমর্থন জানাতে ছুটে আসবে হাজারও ভক্ত। এদের মধ্যে জেমি ম্যারিয়ট আর নউফেলের মতো পাগল ভক্ত যেমন আছেন, তেমনি আছেন উগ্র সমর্থক গোষ্ঠীও। সবাইকে সামাল দেওয়াটাই একটা বড় চ্যালেঞ্জ হবে আয়োজকদের জন্য। পাশাপাশি পাগল সমর্থকদের চাহিদা পূরণ করার চ্যালেঞ্জটাও নিতে হবে সালাহ আর কেইনদের।

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর