শিরোনাম
রবিবার, ১৩ মে, ২০১৮ ০০:০০ টা

ম্যালকমের উচ্ছ্বাস জামালের হতাশা

মেজবাহ্-উল-হক

ম্যালকমের উচ্ছ্বাস জামালের হতাশা

সুইডেনের গলফার ম্যালকমের হাতে চ্যাম্পিয়ন ট্রফি —এএফপি

সুইডেনের গলফার ম্যালকম কোকোসিনস্কি ও বাংলাদেশের জামাল হোসেন মোল্লা একই গ্রুপে ছিলেন তৃতীয় রাউন্ডে। দুজনই ‘৮ আন্ডার পার’ নিয়ে খেলা শুরু করেছেন। সেই সুইডিশ গলফার ক্যারিশমা দেখিয়ে এবি ব্যাংক বাংলাদেশ ওপেনের শিরোপা জিতে নিলেন। আর ঘরের কোর্সে জামাল যৌথভাবে চতুর্থ হলেন।

ম্যালকম ‘১৪ আন্ডার পার’ খেলেছেন প্রথমবারের মতো এশিয়ান ট্যুরের শিরোপা জয় করে নিয়েছেন। পারের চেয়ে ১১ শট কম খেলে যৌথভাবে দ্বিতীয় হয়েছেন নিউজিল্যান্ডের বেল ক্যাম্পবেল ও ইংল্যান্ডের জ্যাক হ্যারিসন। জামাল পারের চেয়ে ৯ শট কম খেলেছেন। চতুর্থ স্থানে জামালের সঙ্গে ভাগ বসিয়েছেন যুক্তরাষ্ট্রের জন কাটলিন। পারের চেয়ে ৪ শট কম খেলে বাংলাদেশের আরেক গলফার বাদল হোসেন যৌথভাবে ১৪তম স্থানে রয়েছেন। তারকা গলফার সাখাওয়াত হোসেন সোহেল পারের চেয়ে ২ শট কম খেলে ২২তম স্থানে রয়েছেন। সুবিধা করতে পারেননি দেশ সেরা গলফার সিদ্দিকুর রহমান। তিনি পারের চেয়ে ১শট কম খেলে ২৬তম স্থানে।

দুবারের এশিয়ান ট্যুর শিরোপা জয়ী গলফার সিদ্দিকুর ঘরের কোর্সে অনুষ্ঠিত আগের আসরে রানারআপ হয়েছিলেন। এবার শিরোপার অন্যতম দাবিদার ছিলেন। কিন্তু পারলেন না। সিদ্দিকুর বলেন, ‘আমি খুবই হতাশ। চেয়েছিলাম ভালো খেলতে। কিন্তু কিভাবে যে কি হয়ে গেল।’ 

শিরোপা জিততে না পারলেও এশিয়ান ট্যুরের আসরে এটি জামালের সেরা সাফল্য। তারপরও এই ফলাফল মেনে নিতে খুবই কষ্ট হচ্ছে এই গলফারের। কেন না দ্বিতীয় রাউন্ড শেষে ম্যালকমের সঙ্গে যৌথভাবে শীর্ষে ছিলেন তিনি। স্বপ্ন দেখছিলেন প্রথমবারের মতো এশিয়ান ট্যুরের শিরোপা জয়ের। কিন্তু পারলেন না।

ঘরের কোর্সে শেষের দুই রাউন্ডে নিজেকে মেলে ধরতে পারেননি জামাল। প্রথম দুই মিলে যেখানে খেলেছেন ‘৮ আন্ডার পার’ সেখানে শেষের দুই রাউন্ড মিলে মাত্র ‘১ আন্ডার পার’। গতকাল খেলা শেষ করে হতাশার সুরে জামাল বলেন, ‘পারলাম না। এটা খুবই হতাশার। শেষ দিনেও আমার সামনে সুযোগ ছিল। আজ (গতকাল) বল দারুণ হিট করেছি কিন্তু পাটিং একদম ভালো হয়নি। এজন্য পারিনি। যদিও এশিয়ান ট্যুরের আসরে এটাই আমাদের সেরা রেজাল্ট, তবে শিরোপা জিততে পারলে খুবই ভালো হতো।’

নিজের প্রথম শিরোপা জিতে যারপরনাই খুশি ম্যালকম, ‘যেকোনো শিরোপা জয়ই অনেক আনন্দের। তবে সেটি যদি প্রথম শিরোপা হয় তাহলে তো কথাই নেই। এখানে আমাকে অনেক চাপের মধ্যে খেলতে হয়েছে। কেন না আমি লিডিং গ্রুপে ছিলাম না। তবে আমি ধৈর্য ধরে ছিলাম। তার ফলও পেলে গেলাম। বাংলাদেশকে আমি কখনো ভুলবো না। এখানকার মানুষগুলোও খুবই চমৎকার।’

ম্যালকম হচ্ছেন এশিয়ান ডেভেলমেন্ট ট্যুরের গলফার। সব শেষ তিনি শীর্ষে ছিলেন অর্ডার অব মেরিটে। সপ্তাহ দুয়েক আগে এই কুর্মিটোলায় অনুষ্ঠিত এশিয়ান ডেভেলপমেন্ট ট্যুরের আসর ‘বিটিআই ওপেন’ -এ ‘১২ আন্ডার পার’ খেলে তৃতীয় হয়েছিলেন। যেখানে ‘১৪ আন্ডার পার’ খেলে দ্বিতীয় হয়েছিলেন জামাল। কিন্তু এশিয়ান ট্যুরের আসরে জামাল নিজের সেরাটা উজার করে দিতে পারেননি কিন্তু বাজিমাত করে দিয়েছেন ম্যালকম।

বাংলাদেশ যেন তরুণ গলফারদের জন্য লাকি ভেন্যু! এই কুর্মিটোলা গলফ কোর্সে অনুষ্ঠিত এশিয়ার ট্যুরের চারটি আসরের মধ্যে তিন আসরেই প্রথমবারের মতো শিরোপা জিতেছে তিন তরুণ গলফার। প্রথম আসরে শিরোপা জিতেছিলেন সিঙ্গাপুরের গলফার মারদান মামত। এরপর টানা তিন আসরে তিন তরুণ- থাইল্যান্ডের থিতিফুন চুয়া প্রায়াকং, জাজ জানেওয়াতানন্দ এবং সব শেষ এই ম্যালকম কোকোসিনস্কি। চ্যাম্পিয়ন গলফারের হাতে পুরস্কার তুলে দিয়েছেন সেনাবাহিনীর প্রধান জেনারেল আবু বেলাল মুহাম্মদ শফিউল হক, এনডিসি, পিএসসি। পুরস্কার হিসেবে একটি ট্রফি ও ৫৪ হাজার মার্কিন ডলার (প্রায় ৪৫ লাখ টাকা) পেয়েছেন ম্যালকম। বাংলাদেশ ওপেনের মোট প্রাইজমানি ছিল ৩ লাখ ডলার। বাকি ২ লাখ ৪৬ হাজার ডলার প্রাইজমানি পাবেন ‘কাট’ পাওয়া অন্য গলফাররা। তবে পজিশন অনুসারে একটা নির্দিষ্ট ভগ্নাংশ পাবেন তারা।

সর্বশেষ খবর