শনিবার, ২৬ মে, ২০১৮ ০০:০০ টা

শ্রেষ্ঠত্বের লড়াইয়ে ওরা দুই

ক্রীড়া প্রতিবেদক

শ্রেষ্ঠত্বের লড়াইয়ে ওরা দুই

ইতালিয়ান মিডিয়াতে মোহাম্মদ সালাহের পরিচয় ‘মিসরীয় মেসি’। মিসরীয়দের কাছে তিনি রাজা। ২৫ বছর বয়সী এই ফুটবলারকে নিয়ে বেশ আগেই চর্চা শুরু হয়েছে। কখনো তার মধ্যে ফুটবলবোদ্ধারা খুঁজে পান লিওনেল মেসির শৈল্পিক কারুকার্য। কখনো রোনালদোর মতো ক্ষিপ্রগতি। আবার কখনো অসাধারণ একজন ফিনিশার, গোলমেশিন।

মোহাম্মদ সালাহের মধ্যে অনেক গুণের সমাহার। কখনো তিনি রাইট উইং দিয়ে প্রতিপক্ষের ডিফেন্স তছনছ করে এগিয়ে যান গোলমুখে। কখনো নিজে তো কখনো সতীর্থদের দিয়ে গোল করিয়ে দলকে উপহার দেন জয়। ডি বক্সে বল পেলে চিতার মতোই ক্ষিপ্রগতিতে গোল করেন। জটলার মধ্যেও তিনি সমান গতিসম্পন্ন। লিভারপুল মিসরীয় সালাহকে ঘিরেই স্বপ্ন দেখছে দীর্ঘদিন পর উয়েফা চ্যাম্পিয়ন্স লিগ জেতার। ইংলিশ প্রিমিয়ার লিগে অলরেডরা শিরোপাহীন প্রায় তিন দশক। চ্যাম্পিয়ন্স লিগেও যুগ পেরিয়ে গেছে। এর মধ্যে ছোটখাটো কয়েকটা ট্রফি ঘরে তুললেও ইউরোপিয়ান ফুটবলে নিজেদের গৌরবোজ্জ্বল ইতিহাসের ধারা ফিরিয়ে আনতে পারেনি তারা। লুইস সুয়ারেজদের মতো ফুটবলাররাও কিছু অবস্থার পরিবর্তন করতে পারেননি। অবশেষে এক মিসরীয় তরুণ এসে সব বদলে দিলেন। লিভারপুল ভক্তরা আরও একবার স্বপ্নের জগতে প্রবেশাধিকার পেলেন। উয়েফা চ্যাম্পিয়ন্স লিগে অলরেডদের বাছাই পর্ব থেকে ফাইনালে তুলে আনলেন সালাহ। যদিও বিনয়ী এই মিসরীয় বলছেন, ‘ফুটবলটা একার খেলা নয়। সবাই মিলেই খেলতে হবে। জিততে হবে।’ সালাহ যাই বলুন, ফাইনালটা কিন্তু তারই। ভিন্ন দিক থেকে বলতে গেলে রোনালদোরও। একজন ফুটবলার হিসেবে ইতিহাসের পাতায় চিরস্থায়ী হতে যা যা করা দরকার তার প্রায় সবই করেছেন ক্রিস্টিয়ানো রোনালদো। উয়েফা চ্যাম্পিয়ন্স লিগটাই জয় করেছেন চার বার। পঞ্চমবার এই ট্রফি জিতে অনন্য নজির গড়ার সুযোগ তার সামনে। উয়েফা চ্যাম্পিয়ন্স লিগের ইতিহাসে এই নজির আর কারও নেই। মেসি এবং রোনালদো দুজনেই চারটি করে উয়েফা চ্যাম্পিয়ন্স লিগ জিতেছেন। অবশ্য ইউরোপিয়ান কাপের ইতিহাস তুলে ধরলে ৬টি শিরোপা জিতে সবার উপরে আছেন রিয়াল মাদ্রিদের স্প্যানিশ ফুটবলার ফ্রান্সিসকো জেন্টো। রোনালদোর ইতিহাস গড়ার অন্তরায় হয়ে দাঁড়িয়ে আছেন মোহাম্মদ সালাহ। এল ক্ল্যাসিকোর লড়াই শেষ হয়েছে। মেসি-রোনালদো দুজনেই গোল করেছেন ন্যু ক্যাম্পেও বার্সা-রিয়াল মহারণে। পয়েন্টের হিসেবে এল ক্ল্যাসিকোর গুরুত্ব এবার তেমন একটা ছিল না। কিন্তু এল ক্ল্যাসিকোর উন্মাদনা তাতে মোটেও কমেনি।

বরং দুই দলের মরিয়া ভাব দেখে মনে হয়েছে, এই ম্যাচ জয়ই যেন তাদের একমাত্র লক্ষ্য। এল ক্ল্যাসিকোর লড়াই শেষ হওয়ার পর এবার রোনালদোর সামনে সালাহ। আঘাত পেয়ে মাঠ ছাড়া রোনালদো কতটা উজাড় করে খেলতে পারবেন বলা কঠিন। এদিকে সালাহকে রুখতে প্রস্তুতি নিচ্ছেন রিয়াল অধিনায়ক সার্জিও রামোস। এরই মধ্যে বলে দিয়েছেন তিনি, মিসরীয় তরুণকে মোটেও ভয় নেই। অন্যদিকে লিভারপুলও দৃঢ়কণ্ঠে ঘোষণা করেছে, রিয়ালকে কোনো ভয় নেই তাদের। উয়েফা ক্লাব প্রতিযোগিতার সেরা লড়াইয়ে রিয়াল মাদ্রিদ এককভাবে সেরা। তবে লিভারপুলেরও এখানে রয়েছে গৌরবোজ্জ্বল ইতিহাস। এই টুর্নামেন্টে পাঁচবারের চ্যাম্পিয়ন তারা। দুইবারের রানার্সআপ।

সর্বশেষ খবর