মঙ্গলবার, ৫ জুন, ২০১৮ ০০:০০ টা

হারলেই সিরিজ হাতছাড়া

দ্বিতীয় টি-২০ আজ

ক্রীড়া প্রতিবেদক

হারলেই সিরিজ হাতছাড়া

রশিদ খানকে নিয়ে প্রশ্ন করায় বিরক্তবোধ করেছিলেন সাকিব আল হাসান। বিশ্বসেরা অলরাউন্ডের কথায় বোঝা যাচ্ছিল এই আফগান স্পিনারকে নিয়ে মোটেও ভয় পায় না বাংলাদেশ। কিন্তু অধিনায়কের কথা এবং কাজে যে বেশ তফাৎ তা প্রথম ম্যাচেই বোঝা গেল!  সাকিব মিডিয়াকে বুঝিয়েছেন রশিদকে ভয় পাওয়ার কিছু নেই, কিন্তু এই কথাটা তার সতীর্থদের বোঝাতে ব্যর্থ হয়েছেন। তা না হলেই সেই রশিদ খানকে কেন এভাবে ভয় পেয়েছেন বাংলাদেশের ব্যাটসম্যানরা? প্রথম ম্যাচে রশিদ খানই ম্যাচের ভাগ্য গড়ে দিয়েছেন। ৩ ওভার বল করে মাত্র ১৩ রানে নিয়েছেন ৩ উইকেট। তবে এই ম্যাচে আফগান তারকার কৃতিত্বের চেয়ে বাংলাদেশের ব্যাটসম্যানদের ব্যর্থতাই বেশি চোখে পড়েছে। প্রথম বলে অযথাই রিভার্স সুইপ করতে আউট মুশফিক। পরের বলেই সাব্বির সাজঘরের পথে। তৃতীয় শিকার ছিলেন মোসাদ্দেক— বড় শট হাঁকাতে গিয়ে আউট।

প্রথম ম্যাচের ‘ব্যবচ্ছেদ’ করলে সাকিবের অধিনায়কত্ব নিয়েও কথা উঠবে! ১৪তম ওভারে মাহমুদুল্লাহ রিয়াদ ১ রানে দুই উইকেট নেওয়ার পরও কেন তার হাতে দ্বিতীয়বারের মতো বড় তুলে দেওয়ার সাহস পেলেন না টাইগার দলপতি? সাকিবের ব্যাখ্যা, ‘এটা কঠিন সিদ্ধান্ত ছিল। কারণ মেইন বোলাররা ছিলেন তখন। যদি মাহমুদুল্লাহ ছক্কা খেতেন, তখনো সমালোচনা হতো।’

এমন নয় যে, বাংলাদেশের পেসাররা খুব ভালো করেছেন। শেষ চার ওভারে পেসাররা দিয়েছেন ৬২ রান। ম্যাচটা এখানেই হাতছাড়া হয়ে গিয়েছিল। শুধু তাই নয়, আরেক স্পিনার মোসাদ্দেকও এক ওভারে মাত্র ৩ রান দিয়েছেন। তারপরও দ্বিতীয়বার তার হাতে বল তুলে দেওয়ার সাহস পাননি সাকিব।

আফগানিস্তানের স্পিনাররাই যেখানে বাংলাদেশের ব্যাটিং লাইনআপ ধসিয়ে দিয়েছেন সেখানে টাইগার স্পিনারদের ওপর ভরসা রাখতে পারেননি সাকিব। অথচ প্রথম ম্যাচে স্পিনাররা ১০ ওভারে দিয়েছেন মাত্র ৫৫ রান। আর তিন পেসার মিলে ১০ ওভারে দিয়েছেন ১০৬ রান। মুস্তাফিজ না থাকায় বাংলাদেশের পেস আক্রমণ হয়ে গেছে নখদন্তহীন। তাই আফগানিস্তানের ব্যাটসম্যানরা রুবেলদের নিয়ে এভাবে ছেলেখেলা করবে? কোর্টনি ওয়াশলের কিংবদন্তি কোচ থাকার পরও কেন বাংলাদেশের পেস আক্রমণের এই নাজেহাল অবস্থা! তা ছাড়া স্পিনবান্ধব উইকেট হবে, তা জেনেও কেন তিন পেসারকে নেওয়া হয়েছিল একাদশে— এই প্রশ্নের উত্তর দেবে কে? প্রথম ম্যাচে ব্যাটিংয়ে বাংলাদেশ ছিল সবচেয়ে বর্ণহীন। ব্যাটসম্যানদের শরীরী ভাষায় ভয়ের ছাঁপ পরিষ্কার। ১৫ বছর আগে অস্ট্রেলিয়া কিংবা দক্ষিণ আফ্রিকার মতো দলগুলোর বিরুদ্ধে ব্যাট করতে নামলে ব্যাটসম্যানদের যে অবস্থা হয়, গতকাল আফগানিস্তানের বিরুদ্ধে টাইগারদের তেমন আত্মবিশ্বাসহীন লেগেছে! ভয়ের কারণে যেন নিজেদের স্বাভাবিক খেলা ভুলে গেছেন ক্রিকেটাররা! এই বাংলাদেশই তো আগের সিরিজে শ্রীলঙ্কায় গিয়ে স্বাগতিকদের টানা দুই ম্যাচে হারিয়ে নিদাহাস ট্রফির ফাইনালে উঠেছিল। তাহলে আফগানদের এত ভয় পাওয়ার কি আছে?

তিন ম্যাচের সিরিজের প্রথম ম্যাচে পাত্তাই পেল না বাংলাদেশ। একই ভেন্যু দেরাদুনের রাজীব গান্ধী স্টেডিয়ামে আজ দ্বিতীয় ম্যাচ। হারলেই সিরিজ হাত ছাড়া হয়ে যাবে। তবে এই ম্যাচেও যদি রশিদ-মুজিবরা বাংলাদেশের ব্যাটসম্যানদের কাছে জুজু হয়ে যান তাহলে জয় পাওয়া কঠিন হয়ে যাবে।

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর