রবিবার, ২৬ আগস্ট, ২০১৮ ০০:০০ টা

ব্যর্থতার ষোলকলা পূর্ণ কাবাডিতে

ক্রীড়া প্রতিবেদক

ব্যর্থতার ষোলকলা পূর্ণ কাবাডিতে

জাকার্তা এশিয়ান গেমসের ১৪ ডিসিপ্লিনে অংশ নিয়েছে বাংলাদেশের ১৪৪ অ্যাথলেট। পদক জয়ের স্বপ্ন দেখেছিলেন গলফ, আরচ্যারি ও কাবাডিতে। কিন্তু কোনো ইভেন্টের কোয়ার্টার ফাইনালের গণ্ডি পেরোতে পারেননি অ্যাথলেটরা। বিশেষ করে হতাশ করেছে কাবাডি। অন্য কোনো ইভেন্টে না হলেও কাবাডিতে রূপা অথবা ব্রোঞ্জ জেতাটা ছিল নিত্যকার ঘটনা। অথচ যাচ্ছেতাই পারফরম্যান্সে ব্যর্থতার ষোলকলা পূরণ হয়েছে জাকার্তায়। পুরুষ ও মহিলা-উভয় বিভাগেই দর্শক হয়ে দেশে ফিরতে হচ্ছে কাবাডি দলকে। বিশেষ করে মহিলাদের পারফরম্যান্স ছিল যাচ্ছেতাই। গ্রুপের তিন ম্যাচের সবগুলো হেরেছে মহিলারা এবং পুরুষরা দুটি জিতেছে এবং হেরেছে দুটিতে। এবারের পারফরম্যান্স সাদাচোখে স্পষ্ট করে দিয়েছে, অদূর ভবিষ্যতে কাবাডিতে পদক জয়ের স্বপ্ন দেখা একটু বেশিই হবে। গেমসে বাংলাদেশের ব্যর্থতার আসরে চমকে দিয়েছে ইরান। পুরুষ ও মহিলা উভয় বিভাগে ভারতকে কোণঠাসা করে সোনা জিতে রাজদণ্ড হাতে তুলে নিয়েছে মধ্যপ্রাচ্যের দেশটি।

এশিয়াডে বাংলাদেশ অংশ নিচ্ছে ১৯৭৮ সাল থেকে। গেমসে কাবাডির সংযুক্তি ১৯৯০ সালে বেইজিং এশিয়াডে। প্রথম আসরেই ভারতের পেছনে থেকে রুপা জিতে বাংলাদেশ। পরের আসরেও রুপা পায়। কিন্তু ১৯৯৮ সালে পাকিস্তানের পেছন থেকে ব্রোঞ্জ পায়। চার বছর ২০০২ সালে বুশান এশিয়াডে ফের রুপা ফিরে পায়। ২০০৬ সালে দোহা এশিয়াডে সর্বশেষ পদক জিতে বাংলাদেশ। এরপর ২০১০ গুয়াংজু ও ২০১৪ সালে ইনচন এশিয়াডে পদক জিততে পারেনি। গত দুই আসরের ব্যর্থতাকে পাশ কাটিয়ে এবার পদক জয়ের স্বপ্ন দেখেছিল। কিন্তু দক্ষিণ কোরিয়ার কাছে ১৮-৩৮ পয়েন্টে হেরে ছিটকে পড়ে রেস থেকে। দ্বিতীয় ম্যাচে ভারতের সামনে দাঁড়াতেই পারেনি। হার মানে ২১-৫০ পয়েন্টে। টানা দুই হারে পদক জয়ের সম্ভাবনা উবে যায়। যদিও পরের দুই ম্যাচে থাইল্যান্ডকে ৩৪-২২ এবং শ্রীলঙ্কাকে ২৯-২৫ পয়েন্টে হারিয়ে সান্ত্বনা খুঁজে নেয় পুরুষরা। আগের দুই আসরে রুপা জয়ী ইরান এবার ফাইনালে দক্ষিণ কোরিয়াকে ২৬-১৬ পয়েন্টে হারিয়ে সোনা জিতে নেয় প্রথমবারের মতো। ভারত পায় ব্রোঞ্জ।

মহিলা বিভাগেও সোনা জিতে ইরান। ফাইনালে ভারতকে হারায় ২৭-২৪ পয়েন্টে। গ্রুপ পর্বের তিন ম্যাচেই হার মানে বাংলাদেশের মহিলারা। প্রথম ম্যাচে সোনাজয়ী ইরান ৪৭-১৯ পয়েন্টে হারায়। দ্বিতীয় ম্যাচে চাইনিজ তাইপের কাছে হেরে যায় ২৮-৪৩ পয়েন্টে। তৃতীয় ম্যাচেও দক্ষিণ কোরিয়া দাঁড়াতে দেয়নি। বাংলাদেশ হেরে যায় ১৫-৫২ পয়েন্টে। অথচ ১৯৯০, ১৯৯৪ ও ২০০২ সালে রুপা এবং ১৯৯৮ ও ২০০৬ সালে ব্রোঞ্জ জিতেছিল বাংলাদেশের মহিলারা। এবারও স্বপ্ন ছিল পদক জয়ের। কিন্তু আড়াই বছর আন্তর্জাতিক প্রতিযোগিতা থেকে দূর থাকা মহিলা দলের পক্ষে প্রতিপক্ষের বিপক্ষে লড়াই করার ক্ষমতাও ছিল না।

শুধু কাবাডি নয়, সাঁতার, গলফ, ভারোত্তোলন, সব ডিসিপ্লিনেই পারফরম্যান্স ছিল যাচ্ছেতাই। এমন ব্যর্থতার মধ্যেই ফুটবল দল নজর কেড়েছে সবার। গেমসে নিজেদের ৪০ বছরের ইতিহাসে এবারই প্রথম নক আউট পর্বে খেলেছে বাংলাদেশ। গ্রুপ পর্বে উজবেকিস্তানের কাছে হারলেও থাইল্যান্ডের সঙ্গে ড্র এবং হারিয়েছে কাতারকে। এরপর কোয়ার্টার ফাইনালে উঠার লড়াইয়ে হেরে যায় দুবারের সোনাজয়ী উত্তর কোরিয়ার কাছে ১-৩ গোলে। ২০২২ সালের এশিয়ান গেমস চীনের হানজুতে। সাফল্য পেতে এখন থেকেই পরিকল্পনা নিয়ে সঠিক পথে হাঁটতে হবে। নাহলে ফের ব্যর্থতার জালে বাঁধা পড়তে হবে।

সর্বশেষ খবর