বৃহস্পতিবার, ২৯ নভেম্বর, ২০১৮ ০০:০০ টা

কঠিন প্রশ্ন, আটকে গেছি!

মেজবাহ্-উল-হক

কঠিন প্রশ্ন, আটকে গেছি!

মুমিনুল হক

ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিরুদ্ধে চট্টগ্রাম টেস্টে বাংলাদেশ মাত্র আড়াই দিনেই জিতে গেছে। তার আগে জিম্বাবুয়ের বিরুদ্ধে ঢাকা টেস্টেও জিতেছে টাইগাররা। টানা দুই টেস্ট জয়ের পর টাইগারদের সামনে এখন র‌্যাঙ্কিংয়ে উন্নতির হাতছানি। ঢাকা টেস্টে ক্যারিবীয়দের হারাতে পারলেই র‌্যাঙ্কিংয়ে আটে উঠে যাবে বাংলাদেশ।

সিলেট স্টেডিয়ামের অভিষেক টেস্টে জিম্বাবুয়ের বিরুদ্ধে হারটা হজমই হয়ে গেছে। দুই দুটি দারুণ জয়ের পর নেতিবাচক দিকগুলো যে আড়াল হয়ে যাবে সেটাই স্বাভাবিক। বাংলাদেশ দল এখন প্রতিপক্ষকে হোয়াইটওয়াশ করার মুডে আছে।

২০০৯ সালে বাংলাদেশ দল টেস্টে যে ওয়েস্ট ইন্ডিজকে হারিয়েছিল তা ছিল ‘দুর্বল’ ওয়েস্ট ইন্ডিজ! ক্রিকেট বোর্ডের সঙ্গে দ্বন্দ্বের কারণে তখনকার তারকা ক্রিকেটাররা দলে খেলেননি। কিন্তু এবার ওয়েস্ট ইন্ডিজ তাদের সেরা দল নিয়েই এসেছে। গত জুলাইয়ে এই দলের বিরুদ্ধেই বাংলাদেশ হোয়াইটওয়াশ হয়েছিল। ঘরের মাঠে পেস বোলিং দিয়ে টাইগারদের কুপোকাত করছে। এবার বাংলাদেশও ঘরের মাঠে স্পিন বিষে নীল করে দিচ্ছে ক্যারিবীয়দের।

ক্রিকেটে দ্বিপক্ষীয় সিরিজে ঘরের মাঠে প্রতিটি দলই বাড়তি সুবিধা পেয়ে থাকে। মনের মতো করে উইকেট তৈরি করে বাড়তি সুবিধা আদায় করে নেয়। অবশ্য আইসিসির টুর্নামেন্টে এমনটা হয় না। কারণ তখন উইকেট দেখভাল করে ‘ক্রিকেটের অভিভাবক সংস্থা’। তখন সব দলের কথা চিন্তা করে বাড়ানো হয় ‘স্পোর্টিং উইকেট’। কিন্তু দ্বিপক্ষীয় সিরিজের কথা ভিন্ন।

স্বাগতিক দল নিজেদের শক্তিমত্তার কথা চিন্তা করে উইকেট তৈরি করে। স্পিন উইকেট তৈরি করে চট্টগ্রামে টেস্টে চার স্পিনার নিয়ে খেলতে নেমে বাজিমাত করে দিয়েছে টাইগাররা। তবে ঢাকার উইকেট কখনোই বাংলাদেশের ক্রিকেটারদের মনের মতো হয় না। কিন্তু এটাও ঠিক যে, কেবলমাত্র মনের মতো উইকেট হলেই হয় না, পাশাপাশি খেলতেও হয় ভালো। তাহলেই ‘দুয়ে দুয়ে চার’ হয়ে যায়। চট্টগ্রামের মতো ঢাকায় কি ‘দুয়ে দুয়ে চার’ মিলবে?

আগের টেস্টে দুর্দান্ত এক সেঞ্চুরি করেছেন তারকা ব্যাটসম্যান মুমিনুল হক। চলতি বছরে এটি তার চতুর্থ সেঞ্চুরি। ম্যাচ সেরাও হয়েছেন কক্সবাজারের এই তারকা ব্যাটসম্যান। এ বছর ৭ টেস্টে ৪৬ গড়ে ৬৪৪ রান করেছেন। ২০১৮ সালে টেস্টে সর্বোচ্চ রান সংগ্রাহকদের তালিকায় মুমিনুল রয়েছেন  সাতে। তবে সেঞ্চুরির সংখ্যায় তিনি ছাড়িয়ে যেতে পারেন সবাইকে। কেন না সর্বোচ্চ রান সংগ্রাহক ভারতের বিরাট কোহলির (১০৬৩ রান) সেঞ্চুরি সংখ্যাও চারটি। এই টেস্টে মুমিনুল সেঞ্চুরি করলে সবার উপরে উঠে যাবেন! তাই দলের জয়ের পাশাপাশি নিজের সেঞ্চুরি বিষয়টিও মাথায় আছে মুমিনুলের, ‘আগের ম্যাচে  আমি ১০০ করেছি হয়তোবা শেষ ম্যাচ ১০০ দিয়ে শেষ করতে চাইব। আমি সবসময় যে জিনিসিটা চিন্তা করি প্রত্যেক ম্যাচে একজন ক্রিকেটার হিসেবে দলের জন্য কিছু করা। আমি চেষ্টা করব শেষ ম্যাচটা এমন কিছু অবদান রাখতে  যেটা আমার দলটা জিততে পারে।’ দাপুটে পারফরম্যান্সের কারণে আইসিসির র‌্যাঙ্কিংয়েও চমক দেখিয়েছেন মুমিনুল। ১১ ধাপ এগিয়ে এখন তিনি রয়েছেন ২৪তম স্থানে।

চট্টগ্রাম টেস্টে জিতলেও দ্বিতীয় ইনিংসে ব্যাটিং বিপর্যয় ছিল চোখে পড়ার মতো। তবে এ নিয়ে ততটা চিন্তিত নয় বাংলাদেশ। যদিও মুমিনুল জানালেন, ‘ক্রিকেটে তো আগে  থেকে বলা যায় না। আমি বুঝতে পারছি না কতটুকুু হয়। পরিকল্পনার কথা যদি বলি তবে সবারই ইচ্ছে থাকে বড় ইনিংস  খেলার। সেসন বাই সেসন খেলার। তো আমাদের টিমের সবারই ওই রকম প্ল্যান থাকে যে সেসন অনুযায়ী ব্যাটিং করার।’

ঢাকা টেস্টের আগে বাংলাদেশের সবচেয়ে বড় দুশ্চিন্তার জায়গা হচ্ছে ‘ক্যাচ মিস’। শেষ তিন ম্যাচে বেশ কিছু ক্যাচ মিস করেছে।  ক্রিকেটে প্রচলিত প্রবাদ ‘ক্যাচ মিস তো ম্যাচ মিস’, —বাংলাদেশের ফিল্ডাররা প্রতিটি ম্যাচেই ক্যাচ মিস করছেন। ঢাকা টেস্টে আগে এই ক্যাচ মিস নিয়ে বেশ উদ্বিগ্ন টিম ম্যানেজমেন্ট।

ক্যাচ মিস সম্পর্কে জানতে চাইলে কাল মিডিয়াকে মুমিনুল বলেন, ‘কঠিন প্রশ্ন, আটকে গেছি। আমার কাছে মনে হয় যে আমরা এই বিষয়টি ওভারকাম করার চেষ্টা করছি। পরের ম্যাচে আরও ইমপ্রুভ করার চেষ্টা করব। বিশেষ করে ক্লোজ ক্যাচগুলো।’

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর