শুক্রবার, ৩০ নভেম্বর, ২০১৮ ০০:০০ টা

শাস্তি নিয়েও বিতর্ক

ক্রীড়া প্রতিবেদক

শাস্তি নিয়েও বিতর্ক

সুশান্তকে ফ্লাইকিক মারছেন মামুন মিয়া। অথচ কম শাস্তি পেলেন তিনিই —ফাইল ফটো

বিশ্ব ফুটবলের অভিভাবক সংস্থা ফিফার শ্লোগানই হচ্ছে ‘ফেয়ার প্লে’। সুতরাং এই খেলায় বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করলে ক্লাব বা খেলোয়াড়দের শাস্তি পেতেই হবে। এ নিয়ে প্রশ্ন তোলার অবকাশ নেই। কথা হচ্ছে দুর্বল রেফারিংয়ের কারণে ম্যাচের সৌন্দর্য হারালে ডিসিপ্লিন কমিটির কি কিছুই করার নেই? গত ২৩ নভেম্বর বঙ্গবন্ধু জাতীয় স্টেডিয়ামে ফেডারেশন কাপ ফাইনালে ঢাকা আবাহনী ও বসুন্ধরা কিংস মুখোমুখি হয়। ম্যাচে আবাহনী ৩-১ গোলে জিতে চ্যাম্পিয়নও হয়। আবাহনীর সাফল্য নিয়ে কোনো বিতর্ক নেই। ম্যাচের পরের দিনই বসুন্ধরা কিংস মিষ্টি ও ফুল পাঠিয়ে চ্যাম্পিয়নদের অভিনন্দন জানায়। যা বাংলাদেশের ক্রীড়াঙ্গনে বিরল ঘটনাই বলা যায়। ম্যাচে হার জিত থাকবেই। কিন্তু আচরণটা হতে হবে খেলোয়াড়সুলভ। সেই প্রশংসিত উদাহরণটাই তৈরি করল বসুন্ধরা কিংস। ২৩ নভেম্বর ফাইনালের শেষের দিকে দুই দলের খেলোয়াড়রা সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়ে। সত্যি কথা বলতে কি কজন খেলোয়াড় যে ধরনের ফ্রি স্টাইলে মারামারি করে তা ছিল লজ্জাকর। এ জন্যে সেদিনকার ম্যাচ রেফারি আবাহনীর মামুন মিয়া, নাবীব নেওয়াজ জীবন ও বসুন্ধরা কিংসের তৌহিদুল আলম সবুজ এবং সুশান্ত ত্রিপুরাকে লালকার্ড দেখিয়ে বহিষ্কার করেন। বাংলাদেশের ঘরোয়া ফুটবলে এক সঙ্গে চার ফুটবলারকে লাল কার্ড দেখানোর নজির আর নেই। এমন শক্ত পদক্ষেপের পরও রেফারির ভূমিকা প্রশংসনীয় ছিল না। কারণ তার দুর্বল রেফারিংয়ের কারণে শেষের দিকে খেলোয়াড়রা সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়ে। রেফারি যদি শক্ত হাতে ম্যাচ নিয়ন্ত্রণে রাখতেন তাহলে ঘটনা এত দূর গড়তো না। লাল কার্ড দেখানোর পরও চার ফুটবলারকে বিভিন্ন মেয়াদে শাস্তি ও আর্থিক জরিমানা করা হয়েছে। রেফারি মিজানুর রহমানের রিপোর্টে তাদের দোষী সাব্যস্ত করা হলে শৃঙ্খলা কমিটি শাস্তিও ব্যবস্থা করে। শাস্তি পেলেও চার ফুটবলারের আপিল করার সুযোগ থাকছে। বসুন্ধরা কিংসের সুশান্ত ত্রিপুরাকে আগামী ৮ ম্যাচ নিষিদ্ধ সঙ্গে ১ লাখ টাকা জরিমানা, তৌহিদুল আলম সবুজকে ৬ ম্যাচ নিষিদ্ধ ও ৫০ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়েছে। অন্য দিকে আবাহনীর মামুন মিয়াকে ৬ ম্যাচ নিষিদ্ধ সঙ্গে ৫০ হাজার, নাবীব নেওয়াজ জীবনকে ২ ম্যাচ নিষিদ্ধ সঙ্গে ৫০ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়েছে। রাজনীতিতে বরাবরই বলা হয় গণতন্ত্রের জন্য লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড দরকার। এখন ডিসিপ্লিন কমিটির চার ফুটবলারের শাস্তি নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে মাঠ সবার জন্য সমান কি না? তা না হলে ২৩ নভেম্বর মাঠে সমান দোষ করলেও বসুন্ধরা কিংসের দুই ফুটবলারকে বেশি শাস্তি দেওয়া হলো কেন? সবচেয়ে বেশি শাস্তি পেয়েছেন সুশান্ত ত্রিপুরা। তাকে ৮ ম্যাচ নিষিদ্ধসহ ১ লাখ টাকা এবং মামুন মিয়াকে ৬ ম্যাচ নিষিদ্ধসহ ৫০ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়েছে। ফাইনালের পরের দিন বিভিন্ন পত্রিকায় ছাপা হয়েছে মামুন কুংফু স্টাইলে প্রতিপক্ষের ফুটবলারের বুকে লাথি মারছেন। এতে বড় ধরনের ইনজুরির আশঙ্কা ছিল। সেখানে কি না তার শাস্তিটা হলো ত্রিপুরার চেয়ে কম। সবুজকে ৬ ম্যাচে নিষিদ্ধটা কি বাড়াবাড়ি হয়ে যায়নি। যেখানে তাকে লাল কার্ড দেখানো নিয়ে প্রশ্ন উঠেছিল। সেখানে কি না এত ম্যাচ নিষিদ্ধ। মানলাম সবুজের অন্যায় ছাড় দেওয়া যায় না। তাই বলে জীবনকে কেন মাত্র ২ ম্যাচ নিষিদ্ধ করা হলো? শাস্তি লেভেল হলে বিতর্ক উঠত না। কথা উঠছে কারও ইন্ধনে কি এসব হয়েছে? তা ছাড়া যার দায়িত্বহীনতার কারণে মাঠে হট্টগোল হয়েছে সেই রেফারিকে তো সতর্ক করা যেত। কেন করা হল না? তার প্রতি বিশেষ কোন দলের দুর্বলতা আছে কি?

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর