বুধবার, ১৯ ডিসেম্বর, ২০১৮ ০০:০০ টা

সাই হোপকে রুখবে কে?

মেজবাহ্-উল-হক

সাই হোপকে রুখবে কে?

প্রস্তুতি ম্যাচ, তিন ওয়ানডে এবং প্রথম টি-২০ পাঁচ ম্যাচে তার মোট রান ৪৩৩। এই পাঁচ ম্যাচে তার রানের গড় ১৪৪.৩৩। পাঁচ ম্যাচে তার স্কোরÑ৮১, ৪৩, ১৪৬*, ১০৮*, ৫৫। প্রথম চার ম্যাচ ছিল ৫০ ওভারের, আর শেষেরটি টি-২০। এক সাই দিয়েগো হোপই বাংলাদেশের বোলারদের নাকাল করে ছাড়ছেন। পিছিয়ে পড়া টি-২০ সিরিজে জিততে হলে এই ক্যারিবীয় ব্যাটসম্যানকে আটকানোর বিকল্প নেই। কিন্তু ফর্মের তুঙ্গে থাকা হোপকে রুখবে কে?

ওয়েস্ট ইন্ডিজের ব্যাটিং লাইনআপের বাতিঘর এই হোপ। ২৫ বছর বয়সী বার্বাডোজের এই উইকেটরক্ষক ব্যাটসম্যানের কাঁধে সওয়ার হয়েই এগিয়ে যাচ্ছে উইন্ডিজ। বাংলাদেশ ক্রীড়া শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের (বিকেএসপি) মাঠ থেকে শুরু করে চট্টগ্রামের জহুর আহমেদ চৌধুরী স্টেডিয়াম, মিরপুরের শেরেবাংলা স্টেডিয়াম, এমনকি সিলেট আন্তর্জাতিক ক্রিকেট স্টেডিয়ামেরও হোপের ব্যাটে রানের ফোয়ারা। বাংলাদেশের ভেন্যুগুলো যেন ক্যারিবীয় ওপেনারের কাছে ‘হোম ভেন্যু’ হয়ে গেছে।

কী পেসার, কী স্পিনার বাংলাদেশের কোনো বোলাররাই হোপের সামনে প্রতিরোধ গড়ে তুলতে পারছেন না। দুই অপরাজিত সেঞ্চুরি করে ওয়ানডেতে তিনি সিরিজ সেরা হয়েছেন, আর প্রথম টি-২০তে ১৬ বলে হাফ সেঞ্চুরি করে ম্যাচের আলো নিজের দিকে নিয়েছেন। বাংলাদেশের সামনে এখন বড় বাধা এই সাই হোপ।

টি-২০ সিরিজ নিশ্চিত করতে হলে পরের দুটি ম্যাচই বাংলাদেশের জন্য ‘ডু অর ডাই’। দুই ম্যাচই অনুষ্ঠিত হবে মিরপুরে। কিন্তু বাংলাদেশ কি পারবে ‘হোম অব ক্রিকেট’ এ ঘুরে দাঁড়াতে?

সিরিজের প্রথম ম্যাচে বাংলাদেশের ব্যাটসম্যানরা তো ব্যর্থই হয়েছে, বোলাররাও একদমই সুবিধা করতে পারেননি। তিন পেসার মিলে বোলিং করেছেন মাত্র তিন ওভার। রান দিয়েছে ৪৩। স্পিনাররাও ভালো করতে পারেননি। ওয়ানডের সবচেয়ে সফল বোলার মেহেদী হাসান মিরাজ দুই ওভারেই দিয়েছেন ৩৭ রান। কেবল ব্যতিক্রম ছিলেন সাকিব আল হাসান। ব্যাটিংয়েও দাপট দেখিয়েছেন টাইগার দলপতি। দারুণ এক হাফ সেঞ্চুরি করেছেন।

প্রথম টি-২০তে বাংলাদেশ ব্যাকফুটে চলে গেছেন ব্যাটিংয়ে পরই। সিলেটে ফ্ল্যাট উইকেট বানিয়েও মাত্র ১২৯ রানের বেশি করতে পারেননি বাংলাদেশের ব্যাটসম্যানরা। ক্যারিবীয়দের শট বলেই টাইগারদের ব্যাটিংয়ে ধস নেমেছিল। তারপর বাজে বোলিংয়ের কারণে ছোট স্কোরটা যেন আরও ছোট হয়ে গিয়েছিল উইন্ডিজের কাছে।

সিলেটের টি-২০তে ক্যারিবীয়রা যেভাবে ব্যাটিং করেছেন, মনে হচ্ছিল টার্গেট ২০০র বেশি হলেও কোনো ব্যাপার ছিল না। পাওয়ার প্লে-র প্রথম ছয় ওভারেই তো ক্যারিবীয়রা করেছিল ৯১ রান। তারপর ১০.৫ ওভারেই খেলা শেষ। ম্যাচের প্রতিদ্বন্দ্বিতার লেশ মাত্র ছিল না। এক সাই হোপেই উড়ে গেছে সাকিবরা।

ক্যারিবীয় ওপেনার একাই যেন বাংলাদেশের বোলারদের নাকাল করে ছাড়ছেন। বার্বাডোজের এই উইকেটরক্ষক ব্যাটসম্যানকে আটকানোর কোনো উপায় এখনো খুঁজে পায়নি টাইগাররা বোলাররা।

তবে টেস্ট সিরিজে কিন্তু সুবিধা করতে পারেননি হোপ। প্রথম টেস্টের দুই ইনিংসে তার স্কোর ছিল ১ ও ৩। আর দ্বিতীয় টেস্টে তিনি করেছিলেন ১০ ও ২৫। প্রথম টেস্টের দুই ইনিংসেই হোপকে বোকা বানিয়েছিলেন সাকিব, আর দ্বিতীয়টিতে দুবারই মিরাজের শিকার হয়েছেন। তাই হোপের গতিরোধ করতে হলে স্পিনের বিকল্প নেই।

বাংলাদেশের পেস বোলিং যেন হোপের কাছে ‘দুধ-ভাত’! তবে শেষ ম্যাচে তিনি স্পিনেও ছিলেন ব্যাপক আগ্রাসী। অবশ্য টার্গেট ছোট হওয়ায় শুরু থেকেই বেশি মারমুখি হওয়ার সুযোগ পেয়েছেন হোপ। তা ছাড়া বাংলাদেশের বোলাররা পুরো টুর্নামেন্টে যেভাবে নিয়ন্ত্রিত বোলিং করেছেন প্রথম টি-২০তে সে ধারাবাহিকতা ধরে রাখতে পারেননি।

বাংলাদেশের সামনে এক বড় চ্যালেঞ্জ এই হোপকে আটকানো! কিন্তু পরের দুই ম্যাচে এই গুরু দায়িত্ব পালন করবে কে?            স্পিনাররা নাকি পেসাররা!

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর