শিরোনাম
সোমবার, ২৪ ডিসেম্বর, ২০১৮ ০০:০০ টা

টি-২০তেই ব্যাটে-বলে মিলছে না

ক্রীড়া প্রতিবেদক

টি-২০তেই ব্যাটে-বলে মিলছে না

মাত্র ৮ মিনিটের ধাক্কায় বেসামাল! শনিবার বাংলাদেশ ও ওয়েস্ট ইন্ডিজের তৃতীয় টি-২০ সিরিজের শেষ ম্যাচে একই ওভারে দুই দুটি ভুল করেন আম্পায়ার তানভীর আহমেদ। আম্পায়ারের ওই ভুলে খেলা বন্ধ ছিল আট মিনিট। বন্ধ থাকা ওই সময়ে বিতর্কে জড়ানোর পাশাপাশি নিজেদের মানসিকভাবে উজ্জীবিত করেন ওয়েস্ট ইন্ডিজ ক্রিকেটাররা। অনাকাক্সিক্ষত ওই বিরতিতে ম্যাচের মোমেন্টাম থেকে ছিটকে পড়েন বাংলাদেশের ক্রিকেটাররা। ছিটকে পড়ার এই ধাক্কা সামলে ম্যাচে আর ফিরতে পারেননি সাকিব বাহিনী। ক্যারিবীয় বোলারদের ঠিকমতো বুঝতে পারেননি তামিম, লিটন, মুশফিক, মাহমুদুল্লাহ, সাকিবরা। ৫০ রানের হারে হাতছাড়া হয় সিরিজও। সাফল্যে ভরা বছরটি বাংলাদেশ শেষ করল হারে। অথচ জয়ে বছর শেষ করার সুবর্ণ সুযোগ ছিল টাইগারদের। একই সঙ্গে ক্যারিবীয়দের বিপক্ষে টানা দ্বিতীয় টি-২০ সিরিজও জিততে পারত। কিন্তু ব্যাটসম্যানদের ব্যাটে রানের ফাল্গ–ধারা ছুটেনি বলে হাসতে হাসতে বাড়ি ফেরা হয়নি। ওয়ানডেতে যতটা সাফল্য, টি-২০ ক্রিকেটের চিত্র ঠিক বিপরীত। সারা বছর ১৬ টি-২০ ম্যাচে জয় সাকল্যে ৫টি এবং হার ১১টিতে।

জুলাইয়ে ওয়েস্ট ইন্ডিজ সফরের শুরুতে জোর ধাক্কা খেয়েছিল বাংলাদেশ। হোয়াইটওয়াশ হয়েছিল টেস্ট সিরিজে। শুধু তাই নয়, ৪৩ রানে গুটিয়ে যাওয়ার লজ্জাও ছিল। সেই ধাক্কা সামলে জিতেছিল ওয়ানডে ও টি-২০ সিরিজ। পাঁচ মাস পর ক্যারিবীয়রা বাংলাদেশ সফরে এসে হোয়াইটওয়াশ হয় টেস্ট সিরিজে। সাকিব, মিরাজ, তাইজুল, নাঈমদের স্পিনের মায়াবী জাদুতে প্রতিশোধ নেন টাইগাররা। ওয়ানডে সিরিজও জিতে। টি-২০ সিরিজ জেতার অবস্থার সৃষ্টি করেও শেষ পর্যন্ত হেরে মাঠ ছাড়েন সাকিবরা। সিলেটের প্রথম টি-২০ ম্যাচে ব্যাটসম্যানদের ব্যর্থতায় ১২৯ রান করে হেরে যায় ৮ উইকেটে। মিরপুরে দ্বিতীয় ম্যাচে ঘুরে দাঁড়ায় সাকিববাহিনী। লিটন দাস, সাকিব ও মাহমুদুল্লাহর আক্রমণাÍক ব্যাটিংয়ে ২১১ রান করে জয় পায় ৩৬ রানে। তৃতীয় ও শেষ টি-২০ ম্যাচে নামের প্রতি সুবিচার করতে পারেনি ব্যাটসম্যানরা। হেরে যায় ৫০ রানে। অথচ পাঁচ মাস আগে পিছিয়ে থেকেও সিরিজ জিতেছিল বাংলাদেশ।

শুধু হারেই বছর শেষ হয়নি টাইগাররাদের। টি-২০ ক্রিকেটের ব্যর্থতা ফের আঙ্গুল দিয়ে দেখিয়ে দিয়েছে, ক্রিকেট পরাশক্তি হতে এখনো লম্বা দৌড় দিতে হবে। টাইগারদের বছর শুরু হয়েছিল শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে দুই ম্যাচের সিরিজ দিয়ে। মিরপুরের দুটি ম্যাচেই হেরেছিল বাংলাদেশ। এরপর শ্রীলঙ্কার ৭০তম স্বাধীনতা বার্ষিকী উপলক্ষে তিন জাতির টুর্নামেন্টে অংশ নেন সাকিবরা। ফাইনালে উঠলেও শেষ বলে দিনেশ কার্তিকের অবিশ্বাস্য ছক্কায় হেরে যায়। ৫ ম্যাচে দুবার হারায় স্বাগতিক লঙ্কাকে। তিনবার হেরে যায় ভারতের কাছে।

এরপর ভারতের দেরাদুনে আফগানিস্তানের বিপক্ষে তিন ম্যাচ টি-২০ সিরিজে হোয়াইটওয়াশ হয় রশীদ খানের লেগ স্পিনের জাদুতে। প্রথমটি হারে ৪৫ রানে। আফগানিস্তানের ১৬৭ রানের জবাবে টাইগারদের সংগ্রহ ছিল ১২২ রান। দ্বিতীয়টিতে আগে ব্যাট করে ১৩৪ রান করে হেরে যায় ৬ উইকেট। শেষ ম্যাচে হারে মাত্র এক রানে। ম্যাচটিতে শেষ ওভারে দরকার ছিল মাত্র ৯ রান। কিন্তু রশীদ খানের স্পিনের বিপক্ষে প্রয়োজনীয় রান নিতে পারেনি।

প্রথম তিন সিরিজ ও টুর্নামেন্টের ১০ ম্যাচে সাকিবদের জয় ছিল সাকল্যে ২টি। সর্বশেষ দুটি টি-২০ সিরিজে হারজিত সমানে সমান। ক্যারিবীয়দের বিপক্ষে ২-১ ব্যবধানে প্রথম সিরিজ জেতার পর দ্বিতীয়টি হেরে যায় একই ব্যবধানে। সব মিলিয়ে চলতি বছর ১৬ ম্যাচে জয় ৫টি এবং হার ১১টি। এখন পর্যন্ত বাংলাদেশ টি-২০ ম্যাচ খেলেছে ৮৫টি। তাতে জয় ২৬ এবং হার ৫৭টি। চলতি বছর বাংলাদেশ ওয়ানডে খেলেছে ২০টি। মাশরাফি বিন মর্তুজার তুখোর নেতৃত্বে জয় নিয়ে মাঠ ছেড়েছে ১৩ বার। চারটি টেস্ট সিরিজে খেলেছে ৮ ম্যাচ। জয় ৩টি এবং হার ৫টি। সব মিলিয়ে সাফল্যে-ব্যর্থতায় ভরা বছর। টাইগারদের আগামী বছর শুরু হবে নিউজিল্যান্ড সফর দিয়ে। ঘরে মাঠে অক্টোবরে খেলতে নামবে আফগানিস্তানের বিপক্ষে পূর্ণাঙ্গ সিরিজ দিয়ে। সে পর্যন্ত অপেক্ষায় থাকতে হবে বাংলাদেশের ক্রিকেটপ্রেমীদের।

সর্বশেষ খবর