শনিবার, ৩ আগস্ট, ২০১৯ ০০:০০ টা

বসুন্ধরা কিংসের হাতে উঠছে স্বপ্নের ট্রফি

ক্রীড়া প্রতিবেদক

কলকাতার জনপ্রিয় ফুটবল ক্লাব ইস্ট বেঙ্গল শত বছর পালন করল জাঁকজমকের সঙ্গে। ক্লাবটির ইতিহাস ও ঐতিহ্য সমৃদ্ধ করেছে উপমহাদেশের ফুটবলকে। বাংলাদেশ ফুটবলের দুই সমৃদ্ধ ক্লাব আবাহনী ও মোহামেডান। দুই দলের সাফল্য আকাশচুম্বী এবং জনপ্রিয়তায়ও শীর্ষে। কিন্তু অভিষেকেই দুই ফুটবল জায়ান্টকে স্তম্ভিত করেছে বসুন্ধরা কিংস। আভির্ভাবেই আলো ছড়িয়ে শিরোপা জিতেছে। শুধু বাংলাদেশ নয়, পাক-ভারত উপমহাদেশে আর কোনো ক্লাবেরই এমন ইতিহাস নেই। রেকর্ডও নেই। বসুন্ধরা কিংস অভিষেক আসরেই বাজিমাত করে শিরোপা জিতে নিয়েছে বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লিগের (বিপিএল)। চ্যাম্পিয়ন হয়েছে আবার দুই ম্যাচ হাতে রেখে। চ্যাম্পিয়ন হয়েছে স্বাধীনতা কাপে। রানার্স আপ হয়েছে ফেডারেশন কাপে। অভিষেক আসরে কোনো ক্লাবেরই নেই এমন জমকালো পারফরম্যান্স।

অস্কার ব্রুজোনের চ্যাম্পিয়ন বসুন্ধরা কিংস আজ শেষ ম্যাচ খেলতে নামছে ‘হোম অফ ফুটবল’ বঙ্গবন্ধু জাতীয় স্টেডিয়ামে। প্রতিপক্ষ চট্টগ্রাম আবাহনী। এপ্রিলে দলটির বিপক্ষে ড্যানিয়েল কলিনড্রেজ, মার্কোস ভিনিসাস, বখতিয়ার দুইশবেকভরা জিতেছিলেন ৩-০ গোলে। বঙ্গবন্ধু স্টেডিয়ামে বিকাল সাড়ে ৫টায় আজ ফেবারিট হয়েই খেলতে নামবে ব্রুজোনের দল। জয় নিয়ে মৌসুম শেষ করার প্রতিজ্ঞা কলিনড্রেজদের। আজই ক্লাবটি বঙ্গবন্ধু স্টেডিয়ামে আকাশে উঁচিয়ে ধরবে স্বপ্নের ট্রফি। 

কলকাতার ইস্ট বেঙ্গল, মোহনবাগান, মোহামেডান কিংবা ঢাকার আবাহনী ও মোহামেডানের মতো ক্লাবটির অতীত নেই। কিন্তু আবির্ভাবেই যে রেকর্ড গড়েছে, সেটা গড়তে নতুনের অপেক্ষায় থাকতে হবে।

বসুন্ধরা অভিষেক মৌসুম শুরু করে ফেডারেশন কাপে রানার্স আপ হয়ে। লিগের শিরোপা জেতার আগে শ্রেষ্ঠত্ব দেখায় স্বাধীনতা কাপে। গোটা লিগে ব্রুজোনের শিষ্যরা টেকনিক্যাল ফুটবল খেলে ঢাকা আবাহনী, শেখ রাসেল, শেখ জামাল, সাইফ, মোহামেডানদের পেছনে ফেলে চ্যাম্পিয়ন হয়।

দুই লেগের প্রথম পর্বে মাত্র এক পয়েন্ট হারিয়েছিল বসুন্ধরা। সেটা আবার টিম বিজেএমসির বিপক্ষে। দ্বিতীয় পর্বে দুরন্ত ফুটবল খেলে চার ম্যাচ আগেই শিরোপা উৎসবের মঞ্চ তৈরি করে নেয়। যদিও সিলেটে হোঁচট খায় শেখ রাসেলের কাছে হেরে। গোটা লিগে দলটির এটাই একমাত্র হার। পরের ম্যাচে মোহামেডানের সঙ্গে ড্র করে নিশ্চিত করে শিরোপা। আজ শেষ ম্যাচ খেলতে নামছে ক্লাবটি।

ক্লাবটির শিরোপা জিততে কোচ ব্রুজোন যেমন অসাধারণ কাজ করেছেন, তেমনি দুর্দান্ত ফুটবল খেলেছেন তিন বিদেশি কলিনড্রেজ, বখতিয়ার ও মার্কোস এবং মতিন মিয়ারা। এ ছাড়া সভাপতি ইমরুল হাসান ও সাধারণ সম্পাদক মিনহাজুল ইসলাম মিনহাজের নেতৃত্বে ক্লাব কর্তৃপক্ষের টিম ওয়ার্কসও ছিল দুর্দান্ত। টোটাল টিম ওয়ার্কেরই ফল শিরোপা। দলটির বিশ্বকাপ খেলা কোস্টারিকান ফুটবলার কলিনড্রেজ ২৩ ম্যাচে ১৯৮০ মিনিট ফুটবল খেলে গোল করেছেন ১১টি। গোল করতে সহায়তা করেছেন ১০টি। ব্রাজিলিয়ান স্ট্রাইকার মার্কোস ২০৫৮ মিনিট দৌড়ে গোল করেছেন ১৩টি এবং সহায়তা করেছেন ১০টি। কিরগিজস্তানের বখতিয়ার দৌড়েছেন ১৯২৮ মিনিট এবং গোল করেছেন ৭টি। সহায়তা করেছেন ১০ গোলে। পিছিয়ে ছিলেন না মতিন মিয়াও। গোল করেছেন ১১টি। দুর্দান্ত ফুটবল খেলে বসুন্ধরা কিংস ২৩ ম্যাচে জয় পেয়েছে ২০ এবং হার একটি ও ড্র ২টি। গোল করেছে ৫৩টি এবং খেলেছে মাত্র ১৩টি। এতেও প্রমাণিত আক্রমণভাগের সঙ্গে দলটির রক্ষণভাগও ছিল হিমালয়ের মতো অটল।     

সর্বশেষ খবর