নদীমাতৃক এই বাংলাদেশে মানুষ ছোটবেলা থেকেই এক একজন সাঁতারু। সুপ্ত প্রতিভাগুলোকে খুঁজে বের করতেই আমাদের উদ্যোগ। অনেক দেশে যেখানে এত নদীও নেই তারা সুইমিং পুলে সাঁতার শিখেই যদি আন্তর্জাতিক পর্যায়ে সেরা হতে পারে আমরা কেন পারব না
বঙ্গবন্ধুর জন্মশতবার্ষিকী উপলক্ষে গোপালগঞ্জের মধুমতি নদীতে অনুষ্ঠিত ২৭তম জাতীয় দূরপাল্লা সাঁতার প্রতিযোগিতায় চ্যাম্পিয়ন হয়েছেন বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর ফয়সাল আহমেদ।
মেয়েদের মধ্যে চ্যাম্পিয়ন সেনাবাহিনীর নাঈমা আক্তার। দীর্ঘ ১০ কিলোমিটার দূরত্ব পাড়ি দিতে ফয়সাল আহমেদ সময় নিয়েছেন ১ ঘণ্টা ১ মিনিট ২৪ সেকেন্ড।
১ ঘণ্টা ৩ মিনিট ২৭ সেকেন্ড সময় নিয়ে দ্বিতীয় হয়েছেন সেনাবাহিনীর আরেক সদস্য জুয়েল আহমেদ। তৃতীয় হয়েছেন বাংলাদেশ নৌবাহিনীর কাজল মিয়া ( ১ঘণ্টা ৪ মিনিট ৪ সেকেন্ড)। মেয়েদের চ্যাম্পিয়ন নাঈমা আক্তার ৮ কিলোমিটার পাড়ি দিতে সময় নিয়েছেন ৪৬ মিনিট ৯ সেকেন্ড। ৪৭ মিনিট ৪৭ সেকেন্ড সময় নিয়ে দ্বিতীয় হয়েছেন নৌবাহিনীর জুলি আক্তার। তৃতীয় হয়েছেন সেনাবাহিনীর সবুরা খাতুন।বাংলাদেশ সুইমিং ফেডারেশনের সভাপতি ও নৌবাহিনীর প্রধান অ্যাডমিরাল এম শাহীন ইকবাল গতকাল গোপালগঞ্জের শেখ মনি অডিটরিয়ামে উপস্থিত থেকে বিজয়ীদের হাতে পুরস্কার তুলে দেন। এ সময় বিশেষ অতিথি হিসেবে ছিলেন নৌবাহিনীর রিয়াল অ্যাডমিরাল মুসা প্রমুখ।
গত ২০ নভেম্বর শুরু হয়েছিল এই প্রতিযোগিতা। দেশের বিভিন্ন প্রান্তের সাঁতারুদের মধ্য থেকে ৭ জন করে পুরুষ ও নারী সাঁতারু ফাইনাল রাউন্ডে সুযোগ পায়। তাদেরকে নিয়েই মধুমতি নদীতে আয়োজন করা হয় ফাইনাল রাউন্ড। পুরুষ প্রতিযোগীরা সাঁতার শুরু করেন মধুমতি নদীর কংশুর পয়েন্ট থেকে। নারীরা শুরু করেন উলপুর ব্রিজ থেকে। সাঁতার শেষ হয় হরিদাসপুর ব্রিজে।
গতকাল বর্ণাঢ্য সমাপনী অনুষ্ঠানে ফেডারেশনের সভাপতি বলেন, ‘প্রান্তিক পর্যায়ে আমাদের অনেক প্রতিভা লুকিয়ে আছে। নদীমাতৃক এই বাংলাদেশে মানুষ ছোটবেলা থেকেই এক একজন সাঁতারু। সুপ্ত প্রতিভাগুলোকে খুঁজে বের করতেই আমাদের উদ্যোগ। অনেক দেশে যেখানে এত নদীও নাই তারা সুইমিং পুলে সাঁতার শিখেই যদি আন্তর্জাতিক পর্যায়ে সেরা হতে পারে আমরা কেন পারব না। আশা করছি, এমন কিছু উদ্যোগের মাধ্যমে আমরা নতুন নতুন সাঁতারু খুঁজে পাব, যারা আগামী দিনে বড় তারকা হয়ে যেতে পারে। আমাদের দেশের সাঁতারুরা যথাযথ প্রশিক্ষণের মাধ্যমে আন্তর্জাতিকমানের সাঁতারুতে রূপান্তরিত হবে।’
পৃষ্ঠপোষক ম্যাক্স গ্রুপের চেয়ারম্যান ও ফেডারেশনের সিনিয়র সহসভাপতি গোলাম মোহাম্মদ আলমগীর বলেন, ‘এই ধরনের প্রতিযোগিতার মধ্য দিয়েই আন্তর্জাতিকমানের সাঁতারু তৈরি হবে। আমরা সব সময় সাঁতারের উন্নয়নে করতে চাই। ম্যাক্স গ্রুপ সব সময় সাঁতারের পাশে থাকবে।’
ফেডারেশনের সাধারণ সম্পাদক এম বি সাইফ বলেন, ‘আমরা গর্বিত যে এবারের ফাইনাল রাউন্ডটা বঙ্গবন্ধুর জন্মভূমি এই গোপালগঞ্জে আয়োজন করতে পেরেছি।’
চূড়ান্ত প্রতিযোগিতায় অংশ নিয়েছিলেন ৭ জন পুরুষ ও ৭ জন নারী প্রতিযোগী।