সোমবার, ২৮ মার্চ, ২০২২ ০০:০০ টা

মুমিনুলদের প্রতিপক্ষ ঘাসের উইকেট

মুমিনুলদের হারাতে উইকেটে ঘাস রাখা হবে। বাউন্স থাকবে। অতীত রেকর্ডও বলে কিংসমিড পেসারদের স্বর্গ। সেরা বোলিং পারফরম্যান্স হিউজ টেয়ফিল্ডের। ৩৭ টেস্টে ১৭০ উইকেট নেওয়া টেয়ফিল্ড ১৯৫৭ সালে বিধ্বংসী বোলিং করেন ইংল্যান্ডের বিপক্ষে। ৩৭.৭ ওভারে ৬৯ রানের বিনিময়ে উইকেট নিয়েছিলেন ৮টি। তখন ওভার ছিল ৮ বলে। এখানে টেয়ফিল্ডের উইকেট সংখ্যা ৪ টেস্টে ৩০টি।

ক্রীড়া প্রতিবেদক

মুমিনুলদের প্রতিপক্ষ ঘাসের উইকেট

ডারবানে গত দু’দিন ধরে ধুম বৃষ্টি হচ্ছে। এর ফলে অনুশীলন করতে পারছেন না মুমিনুলরা। গত দুদিনের টানা বৃষ্টিতে চ্যাটসওয়ার্থ ক্রিকেট ক্লাব মাঠ কর্দমাক্ত হয়ে পড়ায় বাংলাদেশের টিম ম্যানেজমেন্ট বাধ্য হয়ে অনুশীলন বাতিল করেছে গতকাল ও আজকের। তবে গতকাল জিম করে কাটিয়েছেন টাইগাররা। আজ অবশ্য বাংলাদেশ সময় বিকাল ৫টায় মুমিনুলরা অনুশীলন করবেন ডারবানের কিংসমিডে। ৩১ মার্চ থেকে ৪ এপ্রিল এই মাঠে আইসিসি টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপের প্রথমটিতে মুখোমুখি হবে বাংলাদেশ ও দক্ষিণ আফ্রিকা। দেশটির মাটিতে এর আগে আরও ৬টি টেস্ট খেলেছে টাইগাররা। কিন্তু এই প্রথম খেলবে ডারবানের কিংসমিডে। ওয়ানডে সিরিজ জেতা টাইগারদের প্রতিপক্ষ প্রোটিয়াদের পাশাপাশি কিংসমিডের সবুজ ঘাসের উইকেট। এমনটিই ইঙ্গিত দিয়েছেন, তাসকিন, ইবাদত, রাহী, শরিফুলদের  পেস বোলিং কোচ দক্ষিণ আফ্রিকার সর্বকালের অন্যতম সেরা পেসার অ্যালান ডোনাল্ড। যিনি কিংসমিডের হার্ড ও বাউন্সি উইকেটে ৭ টেস্টে উইকেট নিয়েছেন ২৯টি।

২০০২ সাল থেকে আফ্রিকার মাটিতে খেলছে বাংলাদেশ। ২০১৭ সাল পর্যন্ত ৯ ওয়ানডে, ৪ টি-২০ ও ৬ টেস্ট খেলে জয়শূন্য ছিল। কিন্তু এবার স্বপ্ন পূরণ হয়েছে টাইগারদের। দুই দশকের প্রচেষ্টায় প্রথমবারের মতো জয়ের স্বাদ পায় বাংলাদেশ। প্রথমবারের মতো দেশটির মাটিতে ওয়ানডে সিরিজ জিতে ইতিহাস গড়েন তামিমরা। সেই আত্মবিশ্বাস নিয়ে আইসিসি টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপের ২ টেস্ট সিরিজ খেলবেন মুমিনুলরা। কিন্তু কাজটি যে বরাবরের মতোই কঠিন, ভালো করে জানেন টাইগাররা। ওয়ানডে সিরিজ হেরে ক্ষুধার্ত বাঘ হয়ে আছে স্বাগতিক প্রোটিয়ারা। কিংসমিডের উইকেটকে সবুজাভ করে ঝাঁপিয়ে পড়বে মুমিনুলদের উপর। অবশ্য টেম্বা ভাবুমাদের পাল্টা জবাব দিতে প্রস্তুত ইবাদত, তাসকিন, শরিফুল, রাহীরা।

দক্ষিণ আফ্রিকার পুরনো ক্রিকেট স্টেডিয়ামগুলোর অন্যতম ডারবানের কিংসমিড। এখানে খেলা হচ্ছে ১৯২৩ সাল থেকে। গত ৯৯ বছরে এই মাঠে টেস্ট হয়েছে ৪৪টি। স্বাগতিক আফ্রিকার জয় ১৪টি। স্টেডিয়ামের অভিষেক টেস্টে স্বাগতিকদের প্রতিপক্ষ ছিল ইংল্যান্ড। ড্র হয়েছিল টেস্টটি। এই মাঠে সর্বশেষ টেস্ট অনুষ্ঠিত হয় ২০১৯ সালে করোনার আগে। ১ উইকেট জিতেছিল শ্রীলঙ্কা।

মুমিনুলদের হারাতে উইকেটে ঘাস রাখা হবে। বাউন্স থাকবে। অতীত রেকর্ডও বলে কিংসমিড পেসারদের স্বর্গ। সেরা বোলিং পারফরম্যান্স হিউজ টেয়ফিল্ডের। ৩৭ টেস্টে ১৭০ উইকেট নেওয়া টেয়ফিল্ড ১৯৫৭ সালে বিধ্বংসী বোলিং করেন ইংল্যান্ডের বিপক্ষে। ৩৭.৭ ওভারে ৬৯ রানের বিনিময়ে উইকেট নিয়েছিলেন ৮টি। তখন ওভার ছিল ৮ বলে। এখানে টেয়ফিল্ডের উইকেট সংখ্যা ৪ টেস্টে ৩০টি। তবে একমাত্র বোলার হিসেবে উইকেটের হাফসেঞ্চুরি ডেল স্টেইনের। ডান হাতি ফাস্ট বোলারের উইকেট ১০ টেস্টে ৫০টি। স্পিনারদের মধ্যে সেরা পারফরমার স্বাগতিক দক্ষিণ আফ্রিকার সিরিল ভিনসেন্ট। বাঁ হাতি স্পিনারের উইকেটে ৪ টেস্টে ১৯টি। সেরা বোলিং পারফরম্যান্স ৬/৫১। অস্ট্রেলিয়ার লেগ স্পিনার ক্যারি গ্রিমেট ২ টেস্টে উইকেট নেন ১৮টি। লিজেন্ড লেগ স্পিনার শেন ওয়ার্ন নিয়েছেন ৩ টেস্টে ১৮ উইকেট। প্রোটিয়াদের বর্তমান দলে খেলছেন বাঁ হাতি স্পিনার কেশব মহারাজের উইকেট ২ টেস্টে ১২টি।

পেসারদের দাপটে ২৮ টেস্টে ফল হয়েছে। তবে সর্বশেষ ১২ টেস্টের ১১টিতেই হার জিত হয়েছে। পেস আধিক্যেও ডারবানে ৬০০ পেরুনো ইনিংস আছে ৩টি। ২০০৩ সালে ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে ৯ উইকেটে ৬৫৮ রান করেছে দক্ষিণ আফ্রিকা। দ্বিতীয় সর্বোচ্চ ইংল্যান্ডের, ১৯৩৯ সালে ৫ উইকেটে ৬৫৪ এবং ১৯৭০ সালে অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে প্রোটিয়াসরা করেছিল ৯ উইকেটে ৬২২ রান। কিংসমিডে কোনো ট্রিপল সেঞ্চুরির ইনিংস নেই। ডাবল সেঞ্চুরি ৪টি। সর্বোচ্চ ২৭৫ রান গ্যারি কার্স্টেনের। গ্রায়েম পোলক ২৭৪, ইংল্যান্ডের এডি পেইন্টার ২৪৩ ও জন এডরিচ ২১৯ রান। পরিসংখ্যান যাই বলুক, কিংসমিডে প্রথমবার টেস্ট খেলবে বাংলাদেশ।

সর্বশেষ খবর