শুক্রবার, ২৫ আগস্ট, ২০২৩ ০০:০০ টা

এখনো অন্ধকারে নারী ফুটবল লিগ!

নারী লিগ ঘিরেই বাফুফে খামখেয়ালিপনার পরিচয় দিচ্ছে। এতে মেয়েদের বড় আয়ের উৎস বন্ধ হয়ে যেতে পারে। যা নারী ফুটবলে সর্বনাশ ডেকে আনবে।

ক্রীড়া প্রতিবেদক

এখনো অন্ধকারে নারী ফুটবল লিগ!

নারী ফুটবলারদের বেতন বেড়েছে। ক্যাটাগরি ভাগ করে সর্বোচ্চ বেতন ধরা হয়েছে ৫০ হাজার টাকা। সর্বনিম্ন ১৫ হাজার। এতে জাতীয় দলের অধিনায়ক সাবিনা খাতুন খুশি। বলেছেন, ‘সভাপতি কাজী সালাউদ্দিন স্যারকে ধন্যবাদ। কথা রেখেছেন তিনি। আমাদের দাবিও পূরণ করেছেন।’ প্রশ্ন উঠেছে, বেতন বাড়লেও তা মেয়েরা নিয়মিত পাবেন কি না। কেননা সাবিনাদের বেতন বাকির ঘটনা এর আগে একাধিকবার ঘটেছে। সাবিনাদের আক্ষেপ ছিল তারা অলিম্পিক বাছাই পর্বে খেলতে পারেননি। এ নিয়ে অনেক বিতর্কের ঝড় বয়ে গেছে। স্বয়ং প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাও ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন। যাক, অলিম্পিক বাছাই পর্ব খেলতে না পারলেও নারী ফুটবলাররা প্রথমবারের মতো এশিয়ান গেমস খেলার অপেক্ষায় রয়েছেন। আগামী মাসেই চীনে এ গেমসের পর্দা উঠবে।

নারী ফুটবলারদের নিয়ে বাফুফের কর্মকাণ্ড সমালোচিত হলেও তা আপাতত থেমে গেছে। তবে একটি বিষয় নিয়ে এখনো শঙ্কিত ফুটবলপ্রেমীরা। আর তা লিগ ঘিরে। বাফুফের ক্যালেন্ডার থেকে নারী লিগ প্রায় হারিয়ে গিয়েছিল। বসুন্ধরা গ্রুপের পৃষ্ঠপোষকতায় শেষ পর্যন্ত তা আলোর মুখ দেখেছে। হয় না হয় না করে টানা তিন মৌসুমে নারী লিগ সুষ্ঠুভাবে শেষ হয়েছে। এ ক্ষেত্রে বড় ভূমিকা রেখেছেন বাফুফের সহসভাপতি ইমরুল হাসান। মূলত তাঁরই উদ্যোগে বসুন্ধরা গ্রুপ সহযোগিতার হাত বাড়িয়ে দিয়েছে। নেপালে প্রথমবারের মতো সাফ চ্যাম্পিয়ন হয়ে ইতিহাসও গড়েছেন বাংলার মেয়েরা। এর পেছনে নারী লিগের অবদান স্বীকার করতে হবে। লিগ নিয়মিত ছিল বলে মেয়েরা মাঠে খেলার সুযোগ পেয়েছেন।

পেশাদার থেকে শুরু করে পুরুষ ফুটবলে ঘরোয়া সব আসরই শেষ হয়ে গেছে। সেখানে কি না নারী লিগ এখনো অন্ধকারে রয়েছে। বিষয়টি নিয়ে বাফুফে সভাপতি কাজী সালাউদ্দিনও টুঁশব্দ করছেন না। এখানে রহস্যটা কী? শোনা যাচ্ছে একটি ক্লাবের সাফল্য ঠেকাতে বাফুফে নিরব ভূমিকা পালন করছে। নারী ফুটবল কমিটির চেয়ারম্যান মাহফুজা আক্তার কিরণ বেশ কয়েক দিন নারী ফ্র্যাঞ্চাইজি লিগ নিয়ে ব্যস্ততা দেখালেন। জমকালো ড্র ও লেগো উন্মোচনের অনুষ্ঠান করলেন। এ কথাও বলেছিলেন, আটটি দল খেলবে তা নিশ্চিতও হয়ে গেছে। শেষ পর্যন্ত দেখা গেল এটা লোক দেখানো ছাড়া কিছু নয়। অথচ এ সময় নারী লিগ আয়োজন করা যেত। অযথা সাবিনারা অলস সময় পার করছেন।

জাতীয় দলের সাবেক ফুটবলার ও বিশ্লেষক আশরাফ উদ্দিন আহমেদ চুন্নু বলেন, ‘নারী ফুটবলারদের অগ্রগতির পেছনে লিগের অবদান অনেক। এখান থেকেই ভালো মানের খেলোয়াড় বাছাই করে জাতীয় বা বয়সভিত্তিক দল গড়া হচ্ছে। সাফল্যও আসছে। সাফ চ্যাম্পিয়নের পর মেয়েরা নয় মাস ফুটবরের বাইরে ছিল। এ সময় কি লিগ করা যেত না? নারী লিগ ঘিরেই বাফুফে খামখেয়ালিপনার পরিচয় দিচ্ছে। এতে মেয়েদের বড় আয়ের উৎস বন্ধ হয়ে যেতে পারে। যা নারী ফুটবলে সর্বনাশ ডেকে আনবে।’

সর্বশেষ খবর