সোমবার, ১৮ সেপ্টেম্বর, ২০২৩ ০০:০০ টা

এক সিরাজেই ভারতের বাজিমাত

আসিফ ইকবাল

এক সিরাজেই ভারতের বাজিমাত

কুশল মেন্ডিসকে বোল্ড করেন ‘লেট আউট সুইংয়ে’। অধিনায়ক দানুস শানাকাকে বোকা বানান ‘শার্প ইনকাটে’। ধনঞ্জয় ডি সিলভাকে উইকেটের পেছনে ক্যাচ দিতে বাধ্য করেন এক্সট্রা বাউন্সে। গতকাল প্রেমাদাসায় ৭ ওভারের আগুনে স্পেলে প্রতিপক্ষ ব্যাটারদের নাস্তানাবুদ করেন মোহাম্মদ সিরাজ। সুইং, গতি ও বাউন্সে এশিয়া কাপের ফাইনালটিকে নিজের করে নেন ডানহাতি ফাস্ট বোলার। বৃষ্টিস্নাত ফাইনালে প্রেমাদাসার উইকেটে সাদা বল হাতে আগুনে বোলিংয়ে দ্বীপরাষ্ট্র শ্রীলঙ্কাকে একাই ‘লন্ডভন্ড’ করেন। আগুনে বোলিংয়ে গড়েন একের পর এক রেকর্ড। ৫২ বছরের ওয়ানডে ক্রিকেট ইতিহাসে তৃতীয় বোলার হিসেবে এক ওভারে ৪ উইকেট নেওয়ার বিরল রেকর্ড গড়েন ২৯ বছর বয়সী পেসার। ফাইনালে ৪২ বলের স্পেলে দ্বীপরাষ্ট্রের ইনিংসে একাই নিয়েছেন ৬ উইকেট। ৪ উইকেট আবার এক ওভারে। ৫ উইকেট নিয়েছেন ১০ বলের মধ্যে। অবিশ্বাস্য! সিরাজের টর্নেডো বোলিংয়ে শ্রীলঙ্কা গুটিয়ে গেছে মাত্র ৫০ রানে। দ্বীপরাষ্ট্রের ইনিংসটি স্থায়িত্ব ছিল ১৫.২ ওভার বা ৯২ বল। সিরাজের স্পেল ৭-১-২১-৬!

ওয়ানডে ক্রিকেটে এই প্রথম কোনো বোলার ৬ উইকেট নিয়েছেন, এমন নয়। ওয়ানডে ক্রিকেটে ৮ উইকেট নেওয়ার বিরল রেকর্ড রয়েছে। ৭ উইকেট নিয়েছেন ১২ বোলার। কলম্বোর খেত্তারামার প্রেমাদাসায় যে ঝড়ো বোলিং করেছেন সিরাজ, হাজার বিশেষণের সোনালি ফ্রেমে স্পেলটিকে বাঁধিয়ে রাখবেন ভারতীয় ক্রিকেটপ্রেমীরা। সিরাজের ক্যারিয়ারসেরা বোলিংয়ে ফাইনালে মাত্র ৫০ রানে অলআউট হয়েছে শ্রীলঙ্কা। বাজে ব্যাটিংয়ের নজিরে দ্বীপরাষ্ট্রের ইনিংসের স্থায়িত্ব ছিল ১৫.২ ওভার বা ৯২ বল। এর আগে শ্রীলঙ্কার সবচেয়ে কম বলের ইনিংসটি ছিল দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে, ১২১ বলের। ২০১২ সালে কেপটাউনে প্রোটিয়াস বোলিংয়ে ২০.১ ওভারে মাত্র ৪৩ রানে অলআউট হয়েছিল দ্বীপরাষ্ট্র। যা দেশটির ওয়ানডে ইতিহাসে সর্বনিম্ন স্কোর। ভারতের বিপক্ষে এতদিন সর্বনিম্ন রানে অলআউটের রেকর্ড ছিল দ্বীপরাষ্ট্রের চলতি বছরের ১৫ জানুয়ারি। থিরুভানানপুরামে ২২ ওভারে ৭৩ রানে অলআউট হয়েছিল শানাকা বাহিনী। এশিয়া কাপের ফাইনালে এটাই সবচেয়ে কম রানের রেকর্ড। ভারতের বিপক্ষে শ্রীলঙ্কা এবার নিয়ে পাঁচবার শয়ের নিচে অলআউট হয়েছে। শয়ের নিচে অলআউট হওয়া দ্বীপরাষ্ট্রের ইনিংসগুলো যথাক্রমে- ৫০, ৭৩, ৯৬, ৯৬ ও ৯৮। ওয়ানডে ক্রিকেটে সর্বনিম্ন রানের রেকর্ড জিম্বাবুয়ের। ২০০৪ সালের হারারেতে শ্রীলঙ্কার বিরুদ্ধে ১৮ ওভারে ৩৫ রানে অলআউট হয়েছিল জিম্বাবুয়ে।   

৫২ বছরে ৪৬৪৯ ওয়ানডে ম্যাচের ইতিহাসে তৃতীয় বোলার হিসেবে এক ওভারে ৪ উইকেট নিয়েছেন সিরাজ। হ্যাটট্রিকের সুযোগ তৈরি করেছিলেন। প্রথম বোলার হিসেবে শ্রীলঙ্কার চামিন্দা ভাস ২০০৩ সালের বিশ্বকাপে পিটারম্যারিজবার্গে বাংলাদেশের বিপক্ষে ইনিংসের প্রথম ওভারে হ্যাটট্রিকসহ ৪ উইকেট নিয়েছিলেন। ২০০৭ সালে ওয়েস্ট ইন্ডিজ বিশ্বকাপে গায়ানার প্রোভিডেন্সে দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে এক ওভারে ৪ উইকেট নিয়েছিলেন ল্যাসিথ মালিঙ্গা।    

২১ রানে ৬ উইকেট, সিরাজের ২৯ ম্যাচ ক্যারিয়ারে সেরা স্পেল। ভারতীয় বোলারদের মধ্যে যে কোনো আসরের ফাইনালে সেরা বোলিং। এ ছাড়া শ্রীলঙ্কার বিরুদ্ধে ভারতীয় বোলারদের সেরা বোলিং। শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে ভারতের সেরা বোলিংয়ের এতদিনকার মালিক ছিলেন বাঁ-হাতি পেসার আশিষ নেহেরা। ২০০৫ সালে কলম্বোর সিংহলিজ স্পোর্টস গ্রাউন্ডে ৫৯ রানের খরচে নিয়েছিলেন ৬ উইকেট। তবে ভারতীয়দের সেরা বোলিং স্পেল স্টুয়ার্ট বিনির। মিরপুরে বাংলাদেশের বিপক্ষে বিনির স্পেলটি ৪.৪-২-৪-৬!

 

সর্বশেষ খবর