বুধবার, ২৫ অক্টোবর, ২০২৩ ০০:০০ টা

প্রোটিয়া ঝড়ে লন্ডভন্ড

শেষ ১০ ওভারে দক্ষিণ আফ্রিকার সংগ্রহ ১৪৪ রান!

প্রোটিয়া ঝড়ে লন্ডভন্ড

ইনিংসের ৪৩ ওভারে সাকিব আল হাসানকে যখন টানা ছক্কা মারছিলেন কুইন্টন ডি কক, তখন ওয়াংখেড়ের জায়ান্ট স্ক্রিনে ভেসে উঠেছিল আরব সাগরে সুর্যডোবার নয়নাভিরাম দৃশ্য। গোধূলি আলোয় সোনালি বর্ণের সৌন্দর্য এবং সুর্যডোবার সঙ্গে অনায়াশে মিলিয়ে নেওয়া যায় দক্ষিণ আফ্রিকার বিধ্বংসী ব্যাটিং ও বাংলাদেশের বিধ্বস্ত বোলিংয়ের! শেষ ১০ ওভারে ডি কক, হেনরিক ক্লাসেন, ডেভিড মিলার যে ভয়ংকর রূপ নিয়েছিলেন ব্যাটিংয়ে, সেখানে লুকিয়েছিল প্রোটিয়া ব্যাটারদের স্ট্রোকের সৌন্দর্য। টাইগার বোলাররা যেভাবে চার ও ছক্কা খেয়েছেন, তাতে সুর্যডোবার মতো রাতের অন্ধকারে মিলিয়ে যাওয়ার অদ্ভুত একটা মিল ছিল। গতকাল শেষ ১০ ওভারে প্রোটিয়াস ব্যাটাররা এতটাই বিধ্বংসী ব্যাটিং করেছেন, তাতে বেশ কয়েকটি রেকর্ড গড়েছে দলটি। ইনিংসের শেষ ৬০ বলে দক্ষিণ আফ্রিকা সংগ্রহ করেছে ১৪৪ রান! অবিশ্বাস্য! বাংলাদেশের বিরুদ্ধে যা নতুন রেকর্ড। ডি ককের ১৭৪, অধিনায়ক এইডেন মারক্রামের ৬০ ও হেনরিক ক্লাসেনের ৯০ রানে ভর করে দক্ষিণ আফ্রিকার সংগ্রহ ৫০ ওভারে ৫ উইকেটে ৩৮২ রান। দিন তিনেক আগে এই ওয়াংখেড়েই বিশ্ব চ্যাম্পিয়ন ইংল্যান্ডের বিরুদ্ধে ৩৯৯ রান করেছিল আফ্রিকান দলটি। শ্রীলঙ্কার বিরুদ্ধে ৪২৮ রান করে বিশ্বকাপে নিজেদের সূচনা ম্যাচে।

বিশ্বকাপের পর আন্তর্জাতিক ক্রিকেটকে বিদায় বলবেন কুইন্টন ডি কক। সে জন্যই হয়তো বিশ্বকাপকে নতুনভাবে রাঙাচ্ছেন বাঁ হাতি ওপেনার। চলতি বিশ্বকাপে দক্ষিণ আফ্রিকা এখন পর্যন্ত সেঞ্চুরি করেছে ৬টি। ৩টি একাই করেছেন ডি কক। এখনো দলের খেলা বাকি ৪টি। কোথায় থামবেন তিনি? টপকে যেতে পারেন ভারতীয় অধিনায়ক রোহিত শর্মার এক আসরে সর্বাধিক ৫ সেঞ্চুরির রেকর্ড। ডি কক ১৭৪ রানের ইনিংস খেলেন মাত্র ১৪০ বলে। ইনিংসটি সাজানো ছিল ১৫টি চার ও ৭টি ছক্কায়। সেঞ্চুরি করেন ১০১ বলে। ক্যারিয়ারের ১৫০তম ওয়ানডেকে রাঙানো এর চেয়ে ভালো আর কী হতে পারে? আগের ৪ ম্যাচে ডি ককের স্কোরগুলো-শ্রীলঙ্কা ১০০, অস্ট্রেলিয়া ১০৯, নেদারল্যান্ডস ২০ ও ইংল্যান্ডের বিরুদ্ধে ৪ রান। বিশ্বকাপের এক আসরে সবচেয়ে বেশি ৫ সেঞ্চুরি রোহিত শর্মা, ২০১৯ সালে করেছেন। ২০১৫ সালে ৪টি সেঞ্চুরি করেন শ্রীলঙ্কার কুমারা সাঙ্গাকারা। ৩টি করে সেঞ্চুরি রয়েছে অস্ট্রেলিয়ার মার্ক ওয়াহ, ম্যাথু হেইডেন, সৌরভ গাঙ্গুলির। ডি কক সেঞ্চুরি করলেও দুর্ভাগ্য ক্লাসেনের। শুরুতে ধীরগতিতে ব্যাটিং করেও শেষ বেলায় রুদ্রমূর্তি ধারণ করেন। ৯০ রানের বিধ্বংসী ইনিংস খেলেন মাত্র ৪৯ বলে। যাতে ছিল ২টি চার ও ৮টি ছক্কা। ৫০ রান করেছিলেন ৩৪ বলে। সেখানে ছিল ৪টি ছক্কা। শেষ ৪০ রান করেন মাত্র ১৯ বলে ৪ ছক্কা ও এক চারে। ‘কিলার’ মিলার ৩৪ রানের অপরাজিত ছিলেন মাত্র ১৫ বলে ১ চার ও ৪ ছক্কায়। মিলারের স্ট্রাইক রেট ২২৬.৬৬। ক্লাসেনের স্ট্রাইক রেট ১৮৩.৬৭ ও ডি ককের স্ট্রাইক রেট ১২৪.২৮। তিন প্রোটিয়াস ব্যাটার একত্রে ছক্কা মেরেছেন ১৯টি। যা বাংলাদেশের বিরুদ্ধে ওয়ানডে ক্রিকেট ইতিহাসে যৌথভাবে সর্বোচ্চ ছক্কার রেকর্ড। আগের রেকর্ড ২০০৮ সালে সেন্ট কিটসে ওয়েস্ট ইন্ডিজের, ১৯ ছক্কা।

সর্বশেষ খবর