বুধবার, ৮ নভেম্বর, ২০২৩ ০০:০০ টা

মোহনবাগানকে হারিয়ে কিংসের সেরা জয়

মনোয়ার হক

মোহনবাগানকে হারিয়ে কিংসের সেরা জয়

পেশাদার ফুটবল লিগে অনেক স্মরণীয় জয় আছে বসুন্ধরা কিংসের। ফেডারেশন কাপ ও স্বাধীনতা কাপেও এমন কিছু জয় পেয়েছে যা চোখে পড়ার মতো। এএফসি কাপের প্রথম আবির্ভাবেই দুর্দান্ত জয় পেয়েছিল। কিন্তু সবকিছু ছাপিয়ে গেছে গতকালের জয়। পিছিয়ে পড়েও ভারতখ্যাত মোহনবাগান সুপার জায়ান্টকে হারানোটা ফুটবলে বসুন্ধরা কিংসের ইতিহাসের সেরা জয়ই বলা যায়। বসুন্ধরা কিংস অ্যারিনায় খেলা দেখতে আসা বাফুফের সভাপতি কাজী সালাউদ্দিন বললেন, ‘এ এক ঐতিহাসিক জয়; যা বাংলাদেশ জাতীয় দলকেও অনুপ্রেরণা জোগাবে।’ বসুন্ধরা কিংসের সভাপতি ইমরুল হাসান আবেগাপ্লুত কণ্ঠে বললেন, ‘এমন জয়ে আমি মুগ্ধ।’

ফুটবলে ভারতকে না হারানোটা যেন রীতি হয়ে দাঁড়িয়েছিল। ক্লাব পর্যায়ে অনেকটা একই অবস্থা। এএফসি কাপে বাংলাদেশের চ্যাম্পিয়ন হিসেবে বসুন্ধরা কিংস এর আগে তিনবার মুখোমুখি হয় মোহনবাগানের। মালেতে ১-১ ড্র, দ্বিতীয়বার কলকাতায় হার। এবার ওড়িশায় অ্যাওয়ে ম্যাচে ২-২ গোলে ড্র করেছিলেন রবসনরা। এবার সেই অধরা জয়ের দেখা মিলেছে। মোহনবাগানকে ২-১ গোলে হারিয়ে প্রতিশোধ নিয়েছে কিংস। কিংস অ্যারিনা বসুন্ধরার হোম ভেন্যু হওয়ার পর কোনো ম্যাচ হারেনি কিংস। তাই জয়ের ব্যাপারে আশাবাদী ছিলেন সমর্থকরা। শেষ পর্যন্ত তা-ই হলো। বিজয়ের নিশানা উড়িয়ে মাঠ ছেড়েছেন রবসন-ডরিয়েলটনরা। ম্যাচ শেষ হওয়ার পর গ্যালারি ভরা দর্শকের উচ্ছ্বাস আর দেখে কে।

সত্যি বলতে কি, কিংস অ্যারিনা বলেই আত্মবিশ্বাসী ছিলেন অস্কারের শিষ্যরা। মোহনবাগানে কাতার বিশ্বকাপ খেলা অস্ট্রেলিয়ার জেসন কামিন্স ছাড়াও ভালো মানের বিদেশি ছিলেন। কিন্তু তাতে কি, কিংস যখন কিংরূপ ধারণ করে তখন আর তাদের কাছে পাত্তা পায় কে। ম্যাচের শুরু থেকেই সেভাবে পারফরম্যান্স প্রদর্শন করেন রবসনরা। ৭০ ভাগের বেশি বল নিয়ন্ত্রণ করে একের পর এক আক্রমণ চালাতে থাকেন। রবসন, ডরিয়েলটন, মিগেল ফিগেরা তিন ব্রাজিলিয়ান তো বটেই গফুরভ, রাকিবও ছিলেন সৌন্দর্যময়। তাদের আক্রমণে পুরোপুরি  কোণঠাসা সুপার জায়ান্ট নামধারীরা। অথচ অবাক কান্ড, খেলার ধারার বিপরীতে গোল খেয়ে বসে কিংস। ১৭ মিনিটে জেসন কামিন্স অসাধারণভাবে বল নিয়ন্ত্রণে নিয়ে ঠেলে দেন লিস্টনের কাছে। শ্রাবণকে পরাস্ত করতে তার কোনো সমস্যা হয়নি। এর কিছু পরই ডরিয়েলটন সহজ সুযোগ হাতছাড়া করেন। তবে কিংস সমতায় ফেরে প্রথমার্ধেই। ৪৪ মিনিটে মিগেল ফিগেরা দারুণ শটে গোল করলে গ্যালারি কেঁপে ওঠে।

দ্বিতীয়ার্ধেও বসুন্ধরার প্রাধান্য। তবে মোহনবাগানও আক্রমণ চালায়। রক্ষণভাগের দৃঢ়তায় তারা এর চেয়ে বেশি কিছু করতে পারেনি। ৮০ মিনিটে অধিনায়ক রবসনই হয়ে যান জয়ের নায়ক। চার্লস দিদিয়ের কাছ থেকে বল পেয়ে মোহনবাগানের জালে বল পাঠালে গ্যালারির উল্লাস আর দেখে কে! অনেক ভোগান্তির শিকার হয়েও ওড়িশায় জেতা ম্যাচ ড্র করে ফিরেছিল কিংস। মোহনবাগান সবরকম সুযোগসুবিধা পেয়েও পরাজয়ের গ্লানি নিয়ে কলকাতায় ফিরছে। এ জয় শুধু কিংসের নয়, বাংলাদেশেরও।

সর্বশেষ খবর