শনিবার, ১০ ফেব্রুয়ারি, ২০২৪ ০০:০০ টা
বাংলাদেশের উৎসব

ভুলে শুরু ভুলেই শেষ

ক্রীড়া প্রতিবেদক

ভুলে শুরু ভুলেই শেষ

মহানাটকীয় ফাইনাল শেষ হলো বাংলাদেশ-ভারতের যুগ্ম চ্যাম্পিয়নশিপের মধ্য দিয়ে। বৃহস্পতিবারের সেই ফাইনালে বিতর্কের রেশ শেষ হয়নি এখনো। এ বিতর্ক হয়তো কখনোই শেষ হবে না। ভবিষ্যতে এমন যে কোনো ঘটনায় রেফারেন্স হিসেবে টানা হবে অনূর্ধ্ব-১৯ নারী সাফের ফাইনালকে। কিন্তু কেন এমন হলো?

অনেকেই বলছেন, ম্যাচটা শেষ হয়ে গিয়েছিল। বাংলাদেশের গোলরক্ষক স্বর্ণা ভারতের হিনার পেনাল্টি শটটা রুখে দিয়েই ম্যাচটা শেষ করে দিয়েছিলেন। তবে সেই শটটা বাতিল করে রেফারি নতুন করে শট নেওয়ার নির্দেশ দেন হিনাকে। এরপর নিয়ম না মেনে লঙ্কান ম্যাচ কমিশনার ডি সিলভা জয়সুরিয়া ডিলন টস করার সিদ্ধান্ত নেন। ভুল দিয়েই শুরু হয় বিতর্ক। এরপর দীর্ঘ পাঁচ ঘণ্টা অপেক্ষা করে অনেক তর্ক-বিতর্কের পর দুই দলকেই চ্যাম্পিয়ন ঘোষণা করা হয়। কিন্তু এটাও তো ছিল ভুল। বাইলজে যুগ্ম চ্যাম্পিয়নের কোনো বিধানই ছিল না। তাহলে এটা হলো কীভাবে!

সাফের সাধারণ সম্পাদক আনোয়ারুল হক হেলাল মিডিয়াকে বিষয়টি ব্যাখ্যা করেছেন। টস করে ভারতকে বিজয়ী ঘোষণা করার পরই বাংলাদেশের ম্যানেজার আমিরুল ইসলাম বাবু প্রতিবাদ জানান। বাবু দাবি করেন, এটা তো বাইলজে নেই। ম্যাচ কমিশনার নিজের ভুল বুঝতে পেরে রেফারিকে সাডেন ডেথ চালিয়ে যেতে বলেন। এবার বেঁকে বসে ভারত। তাদের দাবি ছিল, বিজয়ী ঘোষণা করার পর আবার কেন খেলতে হবে? বাদ-প্রতিবাদে চলে যায় কয়েক ঘণ্টা। তবুও সমাধান মিলছিল না। সাফের পক্ষ থেকে যোগাযোগ করা হয় ভারতীয় ফুটবল ফেডারেশনের সভাপতি কল্যাণ চৌবের সঙ্গে। সেক্রেটারির সঙ্গেও আলোচনা হয়। মূলত তিনটি পথ ছিল। প্রথমত, ম্যাচ বাতিল করে পুনরায় তা আয়োজন করা। দ্বিতীয়ত, টাইব্রেকারের সাডেন ডেথ চালিয়ে যাওয়া। তৃতীয়ত, যুগ্ম চ্যাম্পিয়ন ঘোষণা করা। অনেক দেন-দরবারের পর যুগ্ম চ্যাম্পিয়ন ঘোষণারই সিদ্ধান্ত হয়। কিন্তু এই সিদ্ধান্তটাও কী বাইলজ মেনে হয়েছে? ম্যাচ কমিশনার নিজের ভুল বুঝতে পেরে সিদ্ধান্ত ফিরিয়ে নেওয়ার পর সাডেন ডেথ চালিয়ে যাওয়াই ছিল নিয়ম। সেক্ষেত্রে কোনো এক দল মাঠে নির্দিষ্ট সময়ের ভিতরে না এলে অপর দলকেই চ্যাম্পিয়ন ঘোষণা করার কথা ছিল। কিন্তু তা হয়নি। নিয়ম না মানায় যে বিতর্কের সূচনা হয়েছিল, নিয়ম না মেনেই তার সমাধান হলো! অবশ্য বাংলাদেশ চ্যাম্পিয়ন হয়েছে, এতেই সন্তুষ্ট দলের ম্যানেজার আমিরুল ইসলাম বাবু। তিনি মিডিয়াকে বলেছেন, আমরা চ্যাম্পিয়ন হয়েছি। এবার অন্যরা কী পাচ্ছে তা নিয়ে ভাবতে চাই না। ফুটবলে টসের ঘটনা খুব একটা নেই। টাইব্রেকারের নিয়ম হচ্ছে, সাডেন ডেথ চলতেই থাকবে। কিন্তু ঢাকাতেই এমন ঘটনা ঘটেছে ২০১৮ সালে সাফ চ্যাম্পিয়নশিপে। সেবার ‘বি’ গ্রুপে মালদ্বীপ ও শ্রীলঙ্কার পয়েন্ট, গোল ব্যবধান, হেড-টু-হেড সবই সমান ছিল। টস করে মালদ্বীপকে পরের রাউন্ডে   খেলার সুযোগ দেওয়া হয়। সেবার চ্যাম্পিয়নও হয় মালদ্বীপ। এমন বিতর্কিত ঘটনা এড়ানোর জন্য ভবিষ্যতে সাফ সতর্ক থাকবে বলেই কথা দিচ্ছে দক্ষিণ এশিয়ান ফুটবলের এই সংস্থাটি।

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর