সোমবার, ২২ এপ্রিল, ২০২৪ ০০:০০ টা
হকির উত্তেজনা কাটছেই না

ক্রীড়ামন্ত্রীর হস্তক্ষেপ চেয়েছে মোহামেডান

ক্রীড়া প্রতিবেদক

ক্রীড়ামন্ত্রীর হস্তক্ষেপ চেয়েছে মোহামেডান

প্রিমিয়ার হকি লিগ ঘিরে উত্তপ্ত হয়ে উঠছে ক্রাড়ীঙ্গনে। ১৯ এপ্রিল আবাহনীকে হারাতে পারলে শিরোপা জিতে নিত মোহামেডান। তৃতীয় কোয়ার্টারের শেষের দিকেও ৩-২ গোলে এগিয়ে ছিল সাদা-কালোরা। বাকি ছিল যতটুকু সময় তাতে যে কোনো ফল হতে পারত। কিন্তু গুরুত্বপূর্ণ ম্যাচটি শেষই হতে পারেনি। ৪৩ মিনিটে দুই দলের সমান হট্টগোলে আম্পায়াররা ম্যাচ শেষ করতে পারেননি। যাক মাঠে উত্তেজনা না থামলেও আম্পায়াররা পুনরায় খেলা শুরু করতে চেয়েছিলেন, বাকি ১৭ মিনিট খেলাতে। সিদ্ধান্তের প্রতিবাদে মোহামেডান আর মাঠে ফিরে আসেনি। ১৫ মিনিট অপেক্ষা করে আম্পায়াররা আবাহনীকে ৫-০ গোলে বিজয়ী ঘোষণা করে মাঠ ছাড়েন।

প্রশ্ন হচ্ছে দুই দলই তো সমান হাতাহাতি করেছে। শক্তি প্রদর্শনে কেউ কারও চেয়ে কম ছিল না। তারপরও ৩-২ গোলে এগিয়ে থাকায় মোহামেডান আর খেলল না কেন? নিজেদের সর্বনাশ ডেকে আনল কেন? এ ধরনের ঘটনা হকি কেন অন্য কোনো লিগেও এই প্রথম। এ নিয়ে সমর্থকদের কাঠগড়ায় দাঁড়াতে হচ্ছে মোহামেডানকে। হট্টগোল শুরুটা করেন মূলত আবাহনীর পুস্করক্ষীসা মিমো। তেড়ে এসে মোহামেডানের খেলোয়াড়দের আঘাত করতে চান। সতীর্থরা তাকে আটকানোর চেষ্টাও করেননি। মিমোর এমন আচরণ ভিডিও ফুটেজেও প্রমাণ মিলেছে। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে যা ভাইরালও হয়েছে। মোহামেডান খেলতে অস্বীকৃতি জানালে আবাহনীকে বিজয়ী ঘোষণা করে। এখন মেরিনার্সের সমান ৩৭ পয়েন্ট হওয়ায় দুই দল শিরোপা নির্ধারণ প্লে-অফ খেলবে কিংবা যৌথ চ্যাম্পিয়নও হতে পারে।

১৯ এপ্রিল ঘটনার পর মোহামেডান নীরবই ছিল। গতকাল সংবাদ সম্মেলন করে তারা হকি ফেডারেশনের ওপর ক্ষোভ প্রকাশ করে। এমনকি ফেডারেশনের বর্তমান কমিটির পরিবর্তনের দাবি তুলেছে। ক্লাবের ডাইরেক্টর ইনচার্জ সাবেক সংসদ সদস্য কাজী ফিরোজ রশিদ বলেন, ‘এবার হকি লিগজুড়ে মোহামেডান ষড়যন্ত্রের শিকার। এ জন্য আমরা ফেডারেশনকে নানা সময়ে চিঠি দিয়েও প্রতিকার পাইনি। এখন আমরা ক্রীড়ামন্ত্রী নাজমুল হাসান পাপনের দৃষ্টি আকর্ষণ করছি সুবিচারের দাবিতে। মন্ত্রীর কাছে অনুরোধ থাকবে ভিডিও ফুটেজ দেখার। আমার বিশ্বাস তিনি চিহ্নিত করতে পারবেন মাঠে প্রকৃত কী ঘটনা ঘটেছিল?’

যাকে ঘিরে বিতর্ক সেই মিমোর প্রসঙ্গ সংবাদ সম্মেলনে একাধিকবার উঠেছে। হট্টগোলে দোষী চিহ্নিত করে মোহামেডানের দ্বীন ইসলাম, তানভীর সিয়ামকে লাল ও জুল পিদাউসকে হলুদ কার্ড দেখান। অন্যদিকে আবাহনীর নাইমুদ্দিন লালকার্ড ও ইউসুফ আফফানকে হলুদ কার্ড দেখান। মোহামেডানের ম্যানেজার আরিফুল হক প্রিন্সের দাবি, ‘আম্পায়াররা ভিডিও রেফারেল না দেখে ফেডারেশনের কারোর ইন্ধনে এই অন্যায় সিদ্ধান্ত দিয়েছেন। আমাদের যারা লালকার্ড দেখেছে তারা পরিস্থিতির শিকার। কারণ তাদের আগে আঘাত করা হয়। আবাহনীর মিমো ঘটনার সূত্রপাত ঘটালেও ধরাছোঁয়ার বাইরে থাকে কীভাবে? আমরা বার বার ভিডিও রেফারেল দেখতে চাইলেও রহস্যজনকভাবে দেখানো হয়নি।’

সংবাদ সম্মেলনে সাবেক তারকা খেলোয়াড় প্রতাপ শংকর হাজরা বলেন, ‘হকি ফেডারেশনের কাছে প্রশ্ন রাখছি আপনারা কি একেক দলের ভিন্ন বাইলজ তৈরি করেছেন? এক লিগে নানা নিয়ম কীভাবে হয়। এবারই তো এক ঘণ্টার ম্যাচ দুই ঘণ্টায় শেষ হয়েছে। যা মিডিয়াতেই দেখেছি। আজাদ ও বাংলাদেশ স্পোটিং-এর ম্যাচ এক কোয়ার্টার না খেলিয়ে পয়েন্ট ভাগাভাগি, আরেক ম্যাচ পরের দিন খেলা হলো। অথচ আবাহনী- মোহামেডান ম্যাচ শেষের আগে ফলাফল ঘোষণা রহস্য কী? ফেডারেশন মনে হয় মোহামেডানকে চ্যাম্পিয়ন না করাতে ওত পেতে ছিল। এ অবিচার কোনো ভাবেই মেনে নেব না। হকিতে অংশগ্রহণ না করার পাশাপাশি ফেডারেশনের কমিটিতে মোহাডানের সদস্যরা পদত্যাগ করতে প্রস্তুত। আমরা চাই হকির উন্নয়ন, কিন্তু ফেডারেশনের কিছু কর্মকর্তা তোষামোদী করে বিশেষ মহলকে খুশি রাখছে। এদের এখনোই হটানোর সময় এসেছে।’

সর্বশেষ খবর