শুক্রবার, ১৪ জুন, ২০২৪ ০০:০০ টা

সাকিব খেললেন সাকিবের মতো

আসিফ ইকবাল

সাকিব খেললেন সাকিবের মতো

সাকিব আল হাসান আরও একবার প্রমাণ করলেন, তিনিই দেশের অদ্বিতীয় ক্রিকেটার! বাংলাদেশের ক্রিকেটের নিউক্লিয়াস। গতকাল সেন্ট ভিনসেন্টের আরনেস ভেলে ক্রিকেট ফিরে আসার ম্যাচে সমালোচকদের চোখে আঙুল দিয়ে দেখিয়ে দেন। ক্যারিবীয় সাগরের ছোট্ট দ্বীপ সেন্ট ভিনসেন্টের ম্যাচটির আগে প্রশ্নটি ঘোরাফেরা করছিল-সাকিব কি অবসরে যাচ্ছেন? ক্রিকেট বিশেষজ্ঞের অনেকে বলাবলিও করেছেন, ৩৭ বছর বয়সি সাকিবের সময় ফুরিয়ে এসেছে। সাকিব হচ্ছেন ভিন্ন ঘরানার ক্রিকেট। যত বেশি চাপে থাকেন, তত বেশি পারফরম্যান্স করেন। গত ২০ মাস যে আকাশসম চাপে ছিলেন বিশ্বসেরা অলরাউন্ডার, তাকে নিয়ে প্রশ্নটি ঘোরাফেরা করাই ছিল স্বাভাবিক। অবশেষে হিমালয়সম চাপ সামলে গতকাল পরিচিত আরনেস ভেলে আলো ছড়ান। অসাধারণ ব্যাটিং করে সব সমালোচনার জবাব দেন। খেলেন ৬৪ রানের নান্দনিক ইনিংস। ৪৬ বলের অপরাজিত ইনিংসে ছিল ৯টি চার।

২০০৭ সাল থেকে সবকটি টি-২০ বিশ্বকাপে খেলেছেন সাকিব। ভারতের অধিনায়ক রোহিত শর্মা শুধু সবকটি ২০ ওভারের বিশ্বকাপ খেলেছেন। সাকিব এবার মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ও ওয়েস্ট ইন্ডিজ বিশ্বকাপে খেলতে আসেন একটি মাইলফলকের হাতছানি নিয়ে। মাত্র ৩ উইকেট নিলেই বিশ্বকাপের ইতিহাসে প্রথম ও একমাত্র বোলার হিসেবে উইকেটের হাফ সেঞ্চুরির রেকর্ড গড়বেন। কিন্তু শ্রীলঙ্কা ও দক্ষিণ আফ্রিকা ম্যাচে পুরোপুরি ব্যর্থ ছিলেন। রান করতে পারেননি। উইকেটও পাননি ১টি। তখনই প্রশ্ন ওঠে-নেদারল্যান্ডস ম্যাচে কি খেলবেন বিশ্বসেরা অলরাউন্ডার? অধিনায়ক নাজমুল শান্ত ও কোচ চন্ডিকা হাতুরাসিংহে আস্থা রাখেন। দেশসেরা ক্রিকেটার ব্যাট হাতে সেই আস্থার প্রতিদান দেন শতভাগ। ৩.১ ওভারে ২৩ রানে ২ উইকেটের পতনের পর ব্যাটিংয়ে আসেন সাকিব। এরপর দলের পুরো দায়িত্ব নিজ কাঁধে তুলে নেন। তৃতীয় উইকেট জুটিতে তরুণ ওপেনার তানজিদ তামিমকে নিয়ে যোগ করেন ৩২ বলে ৪৮ রান। তানজিদ ২৬ বলে ৩৫ রান করেন ৫ চার ও ১ ছক্কায়। এরপর শেষ দিকে অভিজ্ঞ মাহমুদুল্লাহ রিয়াদকে নিয়ে ৪১ রান যোগ করেন ৩২ বলে। ২০০৯ সালে ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে ৯৫ রানে জয়ী টেস্টে দুজনই খেলেছিলেন এবং মাহমুদুল্লাহ দুই ইনিংসে ৮ উইকেট নিয়েছিলেন। সাবেক অধিনায়ক ছক্কা মারতে গিয়ে ২৫ রান করেন ২১ বলে ২ চার ও ২ ছক্কায়।

মাহমুদুল্লাহর বিদায়ের পর সাকিব অলআউট ক্রিকেট খেলেন। ৩৮ বলে ৭ চারে ৫০ রান করেন। শেষ পর্যন্ত অপরাজিত থাকেন ৬৪ রানে। ৪৬ বলের ইনিংসে ছিল ৯টি চার। ১২৫ টি-২০ ক্যারিয়ারে এটা তার ১৩তম হাফ সেঞ্চুরি। সাকিব সর্বশেষ হাফ সেঞ্চুরি করেছিলেন ২০ মাস আগে ক্রাইস্টচার্চে। ২০২২ সালের ১৩ অক্টোবর নিউজিল্যান্ডের তিন জাতির টুর্নামেন্টে নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে ৬৮ রান করেছিলেন ৪২ বলে ৭ চার ও ৩ ছক্কায়। এরপর ১০ ইনিংসে ২ অঙ্কের রান করতে পারেননি। গতকালের হাফ সেঞ্চুরি করে সাকিব পুনরায় আলোয় চলে আসেন। হাজারো সমালোচনার জবাব দিয়ে নিজের সামর্থ্যরে প্রমাণ দেন।

সর্বশেষ খবর