ইউরোপে এক সময় নৌ যুদ্ধ হতো কথায় কথায়। ডাচ, ইংলিশ, ফরাসি, স্প্যানিশরা একে-অপরের রক্ত গঙ্গা বইয়ে দিত। আধুনিক যুগে মানুষ অনেক সভ্য হয়ে উঠেছে। শিক্ষিত হয়েছে। তবে লড়াই করার সুপ্ত বাসনা রয়েই গেছে। মানুষ প্রাচীন কিংবা মধ্য যুগের সেই লড়াকু মনোভাব বের করে খেলার মাঠে। ইউরোপে স্পষ্ট করে বলতে গেলে ফুটবল মাঠে। ফুটবলকে ওরা নিজেদের আবেগ বের করার একটা মাধ্যম মনে করে। শত শত বছর ধরে তারা ফুটবলকে লালন করেছে। চর্চা করেছে। এক সময়কার নৌ যুদ্ধগুলো এখন রূপ নিয়েছে ফুটবল যুদ্ধে। ডাচ-ইংলিশ নৌ যুদ্ধে উন্মাদনা যতটা ছিল এ দুই দলের ফুটবল যুদ্ধও কম উত্তাপ ছড়ায় না। ফুটবল মাঠে দুই দলের দর্শকরা যুদ্ধংদেহী মনোভাব নিয়েই গ্যালারিতে বসে যায়। আজও এক ফুটবল লড়াইয়ে মুখোমুখি হচ্ছে ইংল্যান্ড-নেদারল্যান্ডস। ইউরো কাপের সেমিফাইনালে মুখোমুখি হচ্ছে দুই দল। থ্রি লায়ন খ্যাত ইংল্যান্ড যাবে ফাইনালে! নাকি কমলা বিপ্লব দেখা যাবে ইউরো কাপে!
পাঁচ বছর আগে এমনই এক সেমিফাইনালে খেলতে নেমেছিল ইংল্যান্ড-নেদারল্যান্ডস। উয়েফা নেশন্স লিগের শেষ চারে খেলতে নেমেছিল দুই দল। ৩-১
গোলে সেই ম্যাচটা জয় করে ডাচরা। ইংল্যান্ডকে হারিয়ে ফাইনালে গিয়ে সুবিধা করতে পারেনি নেদারল্যান্ডস। ফাইনালে হেরে গিয়েছিল পর্তুগালের কাছে। পাঁচ বছর আগের তুলনায় অনেক কিছুই বদলে গেছে। ইংলিশরা যেমন নিজেদের গুছিয়ে নিয়েছে অনেকটা। তেমনি ডাচরাও। দুই দলের গোল করার সক্ষমতায় পরিবর্তন এসেছে। চলতি ইউরো কাপে নেদারল্যান্ডস গত পাঁচ ম্যাচে ৯ গোল করেছে। বিপরীতে ইংল্যান্ড গোল করেছে ৫টি। বিপরীত দিকে ইংল্যান্ড গোল হজম করেছে ৩টি। নেদারল্যান্ডস গোল হজম করেছে ৫টি। ডিফেন্সে ইংল্যান্ডই শক্তিশালী হিসেবে নিজেদের প্রমাণ করেছে। গোল কম করার ব্যাপারে ইংলিশ কোচ সাউথগেট বলছেন, ‘আমরা এখন অনেক গোল করতে পারছি না। তবে আমরা এমন তিনটা দলের সঙ্গে খেলেছি যারা পাঁচ ডিফেন্ডার নিয়ে খেলে। তাদের ডিফেন্স বেশ গোছানো।’ সেমিফাইনালেও কঠিন ডিফেন্সের সামনে পড়তে হবে ইংলিশ ফরোয়ার্ড লাইনকে।
![](/assets/archive/images/Print-Edition/2024/07.July/10-07-2024/BD-Pratidin_2024-07-10-33.jpg)
ইউরোপের দুই সেরা দল। ফিফা র্যাঙ্কিংয়ে ইংল্যান্ড আছে ৫ নম্বরে। নেদারল্যান্ডসের অবস্থান ৭ নম্বরে। কাছাকাছি মানের দুটো দল মুখোমুখি হচ্ছে আজ। দুই দলের লড়াইয়ে বেশকিছু দ্বৈত লড়াইয়ে নজর রাখতে পারেন দর্শকরা। ইংলিশ অধিনায়ক হ্যারি কেইন এবং ডাচ অধিনায়ক ফন ডাইকের খ- যুদ্ধটা বেশ আকর্ষণীয় হতে পারে। হ্যারি কেইন ইংল্যান্ডের বড় তারকা। এখনো তেমন কোনো ট্রফি নেই। তবে তার খেলার মান নিয়ে ফুটবল বিশেষজ্ঞদের মধ্যে কোনো দ্বিমত নেই। এবারের ইউরো কাপ বড় এক সুযোগ কেইনের জন্য। ডাচ ডিফেন্ডার ফন ডাইকের জন্যও কথাটা সত্য। তিনি লিভারপুলের হয়ে অনেক কিছুই জয় করেছেন। তবে জাতীয় দলের হয়ে এখনো শূন্য হাত। এ ছাড়া ডাচ লেফট উইং এবং ইংলিশ রাইট উইংয়ের দিকেও নজর রাখতে হবে। কোডি গাকপো-কাইল ওয়াকারের লড়াইটাও তো নজর কাড়বে!