শুক্রবার, ৯ আগস্ট, ২০২৪ ০০:০০ টা

ক্রীড়াঙ্গনে কীসের আলামত

ক্রীড়া প্রতিবেদক

সরকার পদত্যাগ ও বদলের পর নানা প্রতিষ্ঠানে পরিবর্তন আসবে তা স্বাভাবিক। ক্রীড়াঙ্গনও এর বাইরে নয়। অ্যাডহক কমিটির আমল বা নির্বাচনে ক্রীড়া ফেডারেশন গঠনের পর সরকার সমর্থিত সংগঠকরা প্রাধান্য পেয়েছেন। এর মধ্যে সুবিধাবাদীর সংখ্যাও কম নয়। শেখ হাসিনার পদত্যাগে সংসদ ভেঙে দেওয়ার পর অন্তর্বর্তী সরকার এখন দেশ পরিচালনা করবে। সময় ও পরিস্থিতি বুঝে জাতীয় নির্বাচন দেওয়ার পর জনগণের ভোটে যে দল ক্ষমতায় আসবে তারাই সরকার পরিচালনা করবে। সবকিছু হবে গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়ায়। কিন্তু তার আগে ক্রীড়াঙ্গনে যে দৃশ্য দেখা যাচ্ছে তা সত্যিই ভয়ানক। যে আলামত পাওয়া যাচ্ছে তাতে সচেতন ক্রীড়ামহল শঙ্কিত।

ক্লাবগুলো তো ক্রীড়াঙ্গন বাঁচিয়ে রেখেছে। ফুটবল, ক্রিকেট, হকিসহ অন্যান্য খেলায় তারা অংশ নিচ্ছে বলেই খেলোয়াড়রা আয়ের পথ খুঁজে পেয়েছেন।

বাংলাদেশে তো অনেকবার সরকার গঠন হয়েছে। কিন্তু এবার এখনই ক্রীড়াঙ্গনে যা চলছে তাতে দেশে স্বাভাবিক খেলাধুলার আয়োজন করা যাবে কি না সে সংশয় তৈরি হয়েছে। ফেডারেশন না হয় দলীয়, যখন যে দল সরকারে থাকে তাদের সমর্থিত সংগঠকরা চেয়ারে বসেন। নানা অনিয়ম, দুর্নীতির কারণে ক্ষোভের সঞ্চার হয়। বিশেষ করে ১৫ বছর ধরে ক্রীড়াঙ্গনে যে নোংরামি চলেছে, তা সব আমলকে হার মানিয়েছে। যোগ্য ও পরীক্ষিত সংগঠকদের বদলে যাকে তাকে কাউন্সিলরশিপ দিয়ে ভোটার করা হয়েছে। এমন ঘটনাও ঘটেছে, সরকার সমর্থিত যোগ্য সংগঠকরাও বিতাড়িত ছিলেন। চরম আওয়ামীবিরোধী অযোগ্য ব্যক্তিরা লবিং করে একই সঙ্গে বিসিবি ও বাফুফের কাউন্সিলরশিপ পেয়ে ফায়দা লুটেছেন। এখন আবার তারাই রূপ বদল করছেন। ফেডারেশনগুলোর পরিবর্তন আসবে এটাই স্বাভাবিক। এবার সরকার পরিবর্তনের পরপরই এমন কিছু ক্লাবে ভাঙচুর ও লুটপাট করা হয়েছে যাদের দেশের ক্রীড়া উন্নয়নে বড় ভূমিকা রয়েছে। ঢাকা আবাহনীর মতো ঐতিহ্যবাহী ক্লাবে ব্যাপক লুটপাট করা হয়েছে। ৫২ বছর ধরে এ ক্লাবের জনপ্রিয়তা ও গ্রহণযোগ্যতা সবার কাছেই। শুধু শিরোপা নয়, খেলোয়াড়দের আস্থা ও ভরসার নামও বলা চলে। এ ক্লাব কোন উদ্দেশ্য ধ্বংসের চেষ্টা চালানো হলো তা সত্যিই রহস্যময়। আরেক জনপ্রিয় ক্লাব শেখ জামাল ধানমন্ডিতে ভাঙচুর ও লুটপাটের তাণ্ডবলীলা চলেছে। ক্লাবগুলো তো ক্রীড়াঙ্গন বাঁচিয়ে রেখেছে। ফুটবল, ক্রিকেট, হকিসহ অন্যান্য খেলায় তারা অংশ নিচ্ছে বলেই খেলোয়াড়রা আয়ের পথ খুঁজে পেয়েছেন। তাদের জীবিকা অর্জনের উৎস ক্লাবগুলো। যেভাবে হামলার শিকার হচ্ছে তাতে ক্লাবগুলো যদি খেলাধুলা থেকে নিজেদের গুটিয়ে নেয় তাহলে ক্রীড়াঙ্গন ও ক্রীড়াবিদদের অবস্থা কী হবে? শুধু কি ফেডারেশনের চেয়ারে বসলে চলবে? ক্লাব দিয়েই তো ফেডারেশন ও সংগঠক। আবাহনী আর শেখ জামাল ধানমন্ডি ক্লাবে হামলার পর মতিঝিল ক্লাব পাড়ায়ও আতঙ্ক বিরাজ করছে। সবাই ভয়ে আছেন কখন না হামলার শিকার হন।

ক্লাবজুড়ে যে ভীতিকর পরিবেশ, তা কাটাতে না পারলে ক্রীড়াঙ্গনে অচলাবস্থা নেমে আসবে। সময় থাকতে এখনই পদক্ষেপ নেওয়া উচিত।

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর