মঙ্গলবার, ১৭ নভেম্বর, ২০১৫ ০০:০০ টা

গাজীপুরে গ্যাস সংকটে মধ্যরাতে রান্না

খায়রুল ইসলাম, গাজীপুর

গাজীপুর সিটি করপোরেশনের ১৫ নম্বর ওয়ার্ডের মধ্য ভোগড়া, বাসন ও আশপাশ এলাকায় গ্যাসের তীব্র সংকট দেখা দিয়েছে। এলাকাবাসীকে একবেলা রান্না করে তিনবেলা খেতে হয়। গ্যাস সংকটে যথাসময়ে রান্না করতে না পারায় এলাকাবাসী চরম ভোগান্তিতে পড়েছেন। এ ব্যাপারে তিতাস গ্যাস কর্তৃপক্ষের কাছে আবেদন করেও কোনো ফল না পেয়ে এলাকাবাসী ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া জানিয়েছে। এসব এলাকায় কয়েক লাখ মানুষ বসবাস করছেন। গ্যাস সংকটে মহাভোগান্তিতে আছেন তারা। এ সমস্যা দূর করতে এলাকাবাসী সংশ্লিষ্ট গ্যাস অফিসে আবেদন করেছেন। গ্যাস সমস্যা সমাধানে জেলা প্রশাসকের কাছেও আবেদন করা হয়েছে। তারপরও সমাধান না হওয়ায় এলাকাবাসী ক্ষুব্ধ। ভোগড়া গ্রামের গৃহবধূ শেফালী বেগম জানান, গ্যাসহীন অবস্থা দীর্ঘস্থায়ী হলে আর এলাকায় বাস করা যাবে না। গ্যাসের চুলা আছে গ্যাস নেই। রাত ১টার দিকে কিছু গ্যাস আসে। বেলা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে তা ফুরিয়ে যায়।

সকাল ৮টার আগে চুলা ধরাতে গিয়ে ম্যাচের কাঠি জ্বলে শেষ হয়ে গেলেও চুলা জ্বলে না। রাত ১টার দিকে কিছু গ্যাস চুলায় আসতে শুরু করে। ওই সময় না ঘুমিয়ে রান্না করি। অনেক সময় অতিকষ্টে লাকড়ি ব্যবহার করেও রান্না করতে হচ্ছে। একবার রান্না করে তিনবার খাই। অনেক সময় পান্তা ভাতই খেয়ে থাকি। অথচ মাস পার হলেই গ্যাসের চুলার জন্য টাকা গুনতে হচ্ছে। পর্যাপ্ত গ্যাস না থাকায় সংসারে জ্বালানি খরচ বেড়ে গেছে।  

 

 

ভোগড়ার বাসিন্দা জাকির হোসেন বলেন, ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়ক থেকে চৌধুরীবাড়ি সড়ক ঘেঁষে কিছুদূর পর্যন্ত মোটা পাইপ দিয়ে কারখানায় গ্যাস সরবরাহ করায় ওই এলাকায় তেমন গ্যাস সংকট হচ্ছে না। একই সড়কের পাশ দিয়ে সরু পাইপ দিয়ে ভোগড়া এলাকার দিকে আবাসিক লাইন নেওয়া হয়েছে। এ লাইন থেকেই আশপাশের বিভিন্ন কারখানায় গ্যাসের সংযোগ দেওয়া হয়েছে। ওইসব কারখানায় কমপ্রেসর স্থাপন করে গ্যাস টেনে নেওয়ায় আবাসিক গ্যাস লাইনে গ্যাসের চাপ একেবারেই থাকছে না। তবে এসব কারখানা বন্ধ থাকলে মধ্যরাতে কিছু গ্যাস পাওয়া যায়।

ভোগড়ার আরেক বাসিন্দা সাইফুল ইসলাম জানান, বাড়ি ভাড়াই আমার একমাত্র আয়ের উৎস।

কয়েক মাস ধরেই এ সংকট দেখা দিয়েছে। গ্যাস সংকটের কারণে রান্নার অসুবিধায় ভাড়াটেরা অনেকে বাড়ি ছেড়ে অন্যত্র চলে যাচ্ছেন। এতে আমার সংসার খরচ মেটাতে সমস্যা হচ্ছে।

তিতাস গ্যাসের গাজীপুর অফিসের ম্যানেজার মো. সাইফুল ইসলাম জানান, সম্প্রতি গাজীপুরে গ্যাস সরবরাহ কম পাচ্ছি। এতে সরবরাহ লাইনে চাপ কমে গেছে। তবে সরবরাহ বাড়াতে সংশ্লিষ্ট অফিস ও কর্মকর্তাদের চিঠি পাঠিয়েছি। আবাসিক ও বাণিজ্যিক লাইন বলতে কিছু নেই। তবে সরবরাহ লাইন থেকে কমপ্রেসরের মাধ্যমে গ্যাস টেনে নেওয়া অবৈধ। এ ব্যাপারে আমরা এলাকাবাসীর লিখিত অভিযোগ পেয়েছি। শিগগিরই অভিযান চালানো হবে।

সর্বশেষ খবর