পাশাপাশি দুটি স্মম্ভের মাঝে রক্তিম লাল সূর্য। তাকে বুকে আঁকড়ে ধরে আছে সাত বীরশ্রেষ্ঠের স্মরণে নির্মিত সাতটি দণ্ড। মূল স্থাপত্য কর্মের সামনে প্রশস্ত কয়েক ধাপ সিঁড়ি। খুলনার বধ্যভূমি গল্লামারীতে স্বাধীনতা স্মৃতিসৌধের মূল স্তম্ভের কাজ কয়েক বছর আগে শেষ হলেও বর্তমানে এটি অরক্ষিত অবস্থায় রয়েছে। পূর্ণতা পায়নি স্মৃতিসৌধটি।
জানা যায়, খুলনায় মুক্তিযুদ্ধের স্মৃতিবহুল গল্লামারীতে স্বাধীনতা সৌধ নির্মাণ কাজের ভিত্তিপ্রস্তর উদ্বোধন হয় ২০০৯ সালের গোড়ার দিকে। দুই দফা শিডিউল ঘোষণার পর খুলনার ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান আজাদ-ইলোরা জয়েন্ট ভেঞ্চার ২০১১ সালে ২ কোটি ১৬ লাখ টাকা ব্যয়ে মূল স্তম্ভ নির্মাণ করে। তবে স্মৃতিসৌধের স্থপতি আমিনুল ইসলাম ইমন গত ২০১১ সালের মার্চে নির্মিত মূল স্তম্ভ পরিদর্শন করেন। তিনি এই স্মৃতিসৌধকে পূর্ণতা দিতে মূল স্তম্ভের চারপাশে ১০ ফুট লাল টাইলস্ বসানো পায়ে হাঁটা পথ, পার্কিং ইয়ার্ড, সীমানা প্রাচীর, গেট, সিকিউরিটি শেড, রেস্টুরেন্ট, দৃষ্টিনন্দন ফুলের বাগান, পানির ফোয়ারাও নির্মাণ করার পরামর্শ প্রদান করেন। তার পরামর্শ ও নকশা অনুযায়ী স্মৃতিসৌধের পূর্ণতা দিতে ৮ কোটি টাকা প্রয়োজন। খুলনা জেলা পরিষদ সূত্রে জানা যায়, ২০১১ সালের মার্চে স্থানীয় সরকার বিভাগ এবং একই বছরের এপ্রিল মাসে মুক্তিযোদ্ধাবিষয়ক মন্ত্রণালয়ে গল্লামারী স্মৃতিসৌধের বাকি কাজ সম্পন্নের জন্য অর্থ বরাদ্দ চেয়ে চিঠি দিলেও সাড়া মেলেনি। একই সঙ্গে ২০১৩ সালের ১৭ জানুয়ারি সর্বশেষ জেলা পরিষদে মূল স্তম্ভ নির্মাণের পর একটি বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। এরপর দীর্ঘদিনেও এ ব্যাপারে কোনো আলোচনা হয়নি।
প্রসঙ্গত, স্বাধীনতার পর ১৯৯৫ সালে তৎকালীন জেলা প্রশাসক রিয়াজুল হক ও এসপি আওলাদ হোসেনের উদ্যোগে গল্লামারীর এ স্থানে অস্থায়ী স্মৃতিসৌধ নির্মিত হয়। ১৯৯৫ সালের ২৬ মার্চ স্মৃতিসৌধের পরিকল্পনাকারী রিয়াজুল হক বিজয় মঞ্চের উদ্বোধন করেন। এ বছরই বৃহত্তর খুলনার মুক্তিযোদ্ধারা এখানে বিশাল পুনর্মিলনী উৎসব করে।