চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসনের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মো. রুহুল আমীন সম্প্রতি নগরীর এয়াকুবনগরের জয় ও মা ফার্মেসিতে অভিযান চালান। দুটি ফার্মেসিতেই সরকারি বিক্রয় নিষিদ্ধ ‘লাল-সবুজ’ রঙের ওষুধ জব্দ করেন। উদ্ধার করা হয় সরকারি ওষুধ ফলিক এসিড, অ্যামোক্সাসিলিন, মেডিমেট, সিপ্রোফ্লক্সাসিন, সেফ্রাডিন, এলবেন্ডাজল, অ্যাজিথ্রোমাইসিন, কো ট্রাইমোক্সাজোলসহ প্রায় এক হাজার গর্ভনিরোধক খাবার বড়ি। সরকারি হাসপাতালের ওষুধ এখন যত্রতত্র পাওয়া যাচ্ছে বেসরকারি ফার্মেসিতে। হাসপাতালের একশ্রেণির অসাধু কর্মচারীর যোগসাজশে এসব ওষুধ পাচার হয়ে যাচ্ছে। এর সঙ্গে প্রত্যক্ষভাবে হাজারি গলির ওষুধ ব্যবসায়ীরা জড়িত আছেন বলে অভিযোগ আছে। নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মো. রুহুল আমীন বলেন, যে ফার্মেসিতে অভিযান পরিচালনা করি সেখানেই পাওয়া যাচ্ছে সরকারি ওষুধ, যা দণ্ডনীয় অপরাধ। তাই কেবল অভিযান নয়, প্রকৃতপক্ষে স্বাস্থ্য প্রশাসনকেই এ ব্যাপারে কঠোর পদক্ষেপ গ্রহণ করতে হবে।
সিভিল সার্জন ডা. আজিজুর রহমান সিদ্দিকী বলেন, ওষুধ চুরি ঠেকাতে আমরা ইতিমধ্যে নানা পদক্ষেপ নিয়েছি। তা ছাড়া কর্মরতদের কার কোথায় ফার্মেসি আছে তাদের একটি তালিকাও করেছি। তারা এখন নজরদারিতে আছে। বাংলাদেশ কেমিস্ট অ্যান্ড ড্রাগিস্ট সমিতি চট্টগ্রাম শাখার সাধারণ সম্পাদক সমীর কান্তি সিকদার বলেন, এ ব্যাপারে আমাদের অবস্থান স্পষ্ট— কেউ যেন এসব ওষুধ বিক্রি না করে।
জানা যায়, গত ৬ মার্চ অভিযান পরিচালিত হয় নগরের ফিরিঙ্গি বাজারের ইয়াকুবনগর এলাকায়। এখানকার নেপাল বিশ্বাসের মালিকানাধীন জয় ফার্মেসি থেকে উদ্ধার করা হয় বিপুল পরিমাণ সরকারি ওষুধ। ভ্রাম্যমাণ আদালত ফার্মেসির মালিক নেপাল বিশ্বাসের কাছে এ ব্যাপারে জিজ্ঞাসা করলে তিনি বলেন, আমি ফলিক এসিড ট্যাবলেট ২-৩ টাকা করে কিনে ৭-৮ টাকায় বিক্রি করতে পারি। তা ছাড়া ৫ মার্চ একই এলাকার মা ফার্মেসিতে পরিচালিত অভিযানেও পাওয়া যায় সরকারি ওষুধ। মা ফার্মেসির মালিক না থাকলেও কর্মরত স্বরূপ চক্রবর্তী আদালতকে বলেন, সরকারি ওষুধের দাম কম, তাই লাভ বেশি। রোগীদের অভিযোগ, সরকার গরিব রোগীর জন্য ওষুধগুলো বরাদ্দ দিচ্ছে। কিন্তু হাসপাতালের ভিতরের একটি অসাধু চক্র সরকারি ওষুধ চুরি করে বাইরে বিক্রি করছে। ভিতরের মানুষ না থাকলে এ কাজ বাইরে থেকে করা অসম্ভব। এ ব্যাপারে কর্তৃপক্ষের কঠোর নজরদারির কোনো বিকল্প নেই।