মঙ্গলবার, ১৮ এপ্রিল, ২০১৭ ০০:০০ টা

গোমতী কবে হবে হাতিরঝিল?

মহিউদ্দিন মোল্লা, কুমিল্লা

গোমতী কবে হবে হাতিরঝিল?

কুমিল্লার পুরনো গোমতী নদীর অধিকাংশ প্রভাবশালীদের দখলে চলে গেছে। দখল হওয়া নদীর এ বিশাল এলাকাজুড়ে সরকারি জমিতে নির্মিত হয়েছে দোকানপাট ও বহুতল ভবন। নদীর বাকি অংশে স্যুয়ারেজ লাইন এবং আবর্জনা ফেলায় তা মরা খালে পরিণত হচ্ছে। নদীটি দখলমুক্ত করে এখানে বিনোদন পার্ক করা যেতে পারে। এতে বাড়বে নগরীর সৌন্দর্য। নবনির্বাচিত মেয়র মনিরুল হক সাক্কু পুরনো গোমতী নদীকে হাতিরঝিলে রূপ দেওয়ার ইশতেহার ঘোষণা করেছিলেন। নগরবাসী এ ঘোষণার দ্রুত বাস্তবায়ন চায়।

পুরনো গোমতী নদী থেকে গত এক যুগ ধরে অবৈধ দখলদার উচ্ছেদ করার জন্য প্রশাসন থেকে পদক্ষেপ নিলেও রাজনৈতিক এবং বিভিন্ন কারণে আজও তা কার্যকর হয়নি। হালনাগাদ তালিকা অনুযায়ী ২৫৮.৭৪ একর স্থানে অবৈধ দখলদারদের উচ্ছেদ করা হবে এমন খবর জেনে দখলদাররা অভিযান ঠেকাতে বিভিন্ন তদবির অব্যাহত রেখেছে। গোমতী নদী ভারতের ত্রিপুরা রাজ্যের ভিতর দিয়ে প্রবাহিত হয়ে কুমিল্লার বিবিরবাজার সীমান্ত দিয়ে কুমিল্লা জেলায় প্রবেশ করে। শহর রক্ষার জন্য এ নদীর গতিপথ পরিবর্তন করা হলে শহরের উত্তর প্রান্তে কাপ্তানবাজার থেকে শুভপুর পর্যন্ত দীর্ঘ নদীটি পুরনো গোমতী নদী নামে পরিচিতি পায়। এরপর থেকে স্থানীয় প্রভাবশালীরা অবৈধ দখল করে নির্মাণ করে বাড়িঘর ও দোকানপাট। কেউ কেউ সংশ্লিষ্ট প্রশাসনের যোগসাজশে বহুতল ভবনও নির্মাণ করেছে।

শুভপুর, চাঁনপুর, সুজানগর, গাংচর, টিক্কারচর, গয়ামবাগিচা, মোগলটুলী (শাহসুজা মসজিদ  রোড), পুরনো চৌধুরীপাড়া, কাপ্তানবাজার, ভাটপাড়া, বিষ্ণুপুর ও বজ্রপুর এলাকার মধ্যে পুরনো গোরামতীর দুই পাড়ের প্রায় ২০০ একর সরকারি ভূমি অবৈধ দখলদারদের কবলে রয়েছে। এর মধ্যে ৫২২ জন অবৈধ দখলদারের তালিকা করা হয়েছে। ২০০৩ সাল থেকে এসব অবৈধ দখলদারকে ৮-৯ বার উচ্ছেদ নোটিস দেওয়া হয়। দখলদারদের মধ্যে রাজনৈতিক প্রভাবশালী নেতা থাকায় উচ্ছেদ কার্যক্রম পরিচালনায় বিঘ্ন সৃষ্টি হওয়ায় এ পর্যন্ত কার্যকর পদক্ষেপ নিতে পারেনি প্রশাসন।

সরেজমিন ঘুরে দেখা গেছে, উত্তর প্রান্তে শুভপুর এবং দক্ষিণ-পূর্ব প্রান্তে চকবাজার হয়ে টিক্কারচর শ্মশানঘাট পর্যন্ত গোমতী নদীর পূর্ব প্রান্তে টিক্কারচর সুইপার কলোনির পর থেকে শ্মশানের নিকট পর্যন্ত নদীর পাড় দখলের সঙ্গে নদীর অংশও দখলে নিয়ে অবৈধভাবে শতাধিক ঘর নির্মাণ করা হয়েছে।

বাংলাদেশ পরিবেশ আন্দোলন কুমিল্লার সভাপতি ডা. মোসলেহ উদ্দিন আহমেদ বলেন, নদীটি দখলমুক্ত করে এখানে বিনোদন পার্ক করা যেতে পারে। নদীটি রক্ষায় আমরা ইতিমধ্যে বিভিন্ন কর্মসূচি পালন করেছি। জেলা প্রশাসক ও সিটি মেয়রকে স্মারকলিপি দিয়েছি। মেয়র মনিরুল হক সাক্কু পুরনো গোমতী নদীকে হাতিরঝিলে রূপ দেওয়ার ইশতেহার ঘোষণা করেছিলেন। সাক্কু মেয়রের শপথ নিয়ে দায়িত্ব নেওয়ার পর এ ঘোষণার বাস্তবায়ন করবেন বলে আশা করি।

কুমিল্লার নবনির্বাচিত সিটি মেয়র মনিরুল হক সাক্কু বলেন, পুরনো গোমতী দখলমুক্ত করতে বিভিন্ন উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। এ ছাড়া সৌন্দর্য বৃদ্ধি করতে বিভিন্ন দফতরের সঙ্গে আলোচনা হয়েছে। সাক্কু পুরনো গোমতী নদীকে হাতিরঝিলে রূপ দেওয়ার বিষয়ে বলেন, ইশতেহারে বিষয়টি উল্লেখ করা হয়েছে। পর্যায়ক্রমে তা বাস্তবায়ন  করা হবে।

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর