গাজীপুরে হিজড়াদের চাঁদাবাজিতে অতিষ্ঠ নগরবাসী। রং-বেরঙের শাড়ি পরে বিশেষ ভঙ্গিতে হাত তালি দিয়ে বিভিন্ন ব্যবসাপ্রতিষ্ঠান, অফিস, বাসাবাড়িসহ নগরীর বিভিন্ন এলাকায় চাঁদা তুলছে তারা। কেউ টাকা দিতে রাজি না হলে অপমান অপদস্থ এমনকি মুহূর্তের মধ্যে অশালীন ভঙ্গি করে টাকা আদায় করছে। হিজড়াদের এমন আচরণে লোকলজ্জার ভয়ে কেউ মুখ খুলছেন না। হিজড়াদের এসব কর্মকাণ্ডের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা না নেওয়ায় দিন দিন বেপরোয়া হয়ে উঠেছে তারা।
সরেজমিন ঘুরে জানা যায়, নগরীর টঙ্গী বাজার, স্টেশনরোড, মাছিমপুর, চেরাগআলী, কলেজগেট, আউচপাড়া, দত্তপাড়া, এরশাদনগর, গাজীপুরা, বড়বাড়ি, গাছা, বোর্ডবাজার, পূবাইল, মিরের বাজার, জয়দেবপুর চৌরাস্তা, শিববাড়ি, শিমুলতলিসহ নগরজুড়ে হিজড়াদের দৌরাত্ম্য। দল বেঁধে বিশেষ ভঙ্গিতে হাত তালি দিয়ে বিভিন্ন ব্যবসাপ্রতিষ্ঠান, অফিস, বাসাবাড়িসহ নগরীর বিভিন্ন এলাকায় চাঁদাবাজি করছে তারা। কোন বাড়িতে শিশু সন্তান রয়েছে এমন খবর পেলে তারা ওই বাড়িতে গিয়ে বাচ্চা নাচানোর নাম করে ১০-২০ হাজার টাকা চাঁদা দাবি করে। পরিবারের লোকজন এত টাকা দিতে অস্বীকার করলে বাচ্চা নিয়ে হাঁটা শুরু করে, এমনকি ভয়ভীতি দেখাতে থাকে। ভয়ে টাকা দিতে বাধ্য হয় অনেকে। হিজড়াদের এমন আচরণ ও তাদের কর্মকাণ্ডে ক্ষুব্ধ এলাকাবাসী। টঙ্গী মাছিমপুর এলাকার এক ভুক্তভোগী সোলায়মান বলেন, আমার বাসায় গিয়ে বাচ্চা নিয়ে টানাহেঁচড়া শুরু করে, পরে মোটা অংকের চাঁদা দাবি করে। এলাকার আরেক বাসিন্দা আবদুল আলিম বলেন, হিজড়াদের অত্যাচারে অতিষ্ঠ আমরা। এদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া উচিত। তারা কাউকে মানে না। ৭-৮ জনের একটি দল দোকানে, বাসায় বাসায় গিয়ে চাঁদাবাজি করছে। হিজড়াদের এসব কর্মকাণ্ডের বিরুদ্ধে সবাইকে এগিয়ে আসতে হবে।
হিজড়াদের সঙ্গে কথা বললে তারা বলেন, অন্যদের মতো তাদের কেউ কাজে নিতে চান না, যার ফলে তারা একাজ করেন। তবে এলাকাবাসী বলেন, হিজড়ারা কাজ করতে আগ্রহী নন। তারা কাজ না করে চাঁদাবাজি করে অনেকেই লাখ লাখ টাকার মালিক হয়েছেন। চাঁদাবাজি এখন তাদের পেশা হয়ে দাঁড়িয়েছে। এ ব্যাপারে টঙ্গী মডেল থানার ওসি ফিরোজ তালুকদার বলেন, হিজড়ারা বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান কিংবা বাসাবাড়িতে গিয়ে মানুষকে বিরক্ত করে, এরকম অভিযোগ আমরা পাই। পরে আমরা পুলিশ পাঠিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনি। তবে তাদের বিরুদ্ধে কেউ লিখিত অভিযোগ কিংবা কেউ মামলা দিতে আসে না। যদি কেউ তাদের বিরুদ্ধে লিখিত অভিযোগ দেয় অবশ্যই আমরা আইনগত ব্যবস্থা নেব।