মঙ্গলবার, ১০ এপ্রিল, ২০১৮ ০০:০০ টা
পাঠক প্রতিবেদন

ওয়াসার খোঁড়া রাস্তায় দুর্ভোগ

আহ্ছানুল আমীন জর্জ, খুলনা।

ওয়াসার খোঁড়া রাস্তায় দুর্ভোগ

খুলনা-যশোর মহাসড়কে ওয়াসার রাস্তা খোঁড়াখুঁড়ির কাজ চলছে। জনদুর্ভোগ চরমে

পানির পাইপ বসানোর জন্য খুলনা মহানগরীর যত্রতত্র রাস্তা খোঁড়ার কাজ চলছে সমন্বয়হীনভাবে। খুলনা ওয়াসার খামখেয়ালীর কারণে ঘটছে দুর্ঘটনা, বাড়ছে চরম জনদুর্ভোগ। ওয়াসার বেপরোয়া রাস্তা খোঁড়াখুঁড়ির ফলে প্রাণ দিতে হয়েছে দুজনকে, আহত হয়েছে কমপক্ষে ১৫ জন। প্রসঙ্গত, ২০১৭ সালের ২১ এপ্রিল নজরুল ইসলাম নামের এক মোটরসাইকেল আরোহী নগরীর সোনাডাঙ্গা গাজী মেডিকেল কলেজের সামনে ওয়াসার রাস্তা খোঁড়ার ফলে সৃষ্ট গর্তে পড়ে গিয়ে আহত হন এবং পরে তিনি মারা যান।

এ ছাড়া সম্প্রতি খুলনা-সাতক্ষীরা মহাসড়কে দৌলতপুর কল্পতরু মার্কেট এলাকায় বর্ষা মৌসুমে ওয়াসার রাস্তা খোঁড়ার সময় এস্কেভেটর চালক বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়ে প্রাণ হারান। ওয়াসার খুঁড়ে রাখা মৃত্যুফাঁদে (গর্তে) পড়ে এ পর্যন্ত আহত হয়েছেন কমপক্ষে ১৫ জন। পানির পাইপ বসানোর অজুহাতে ওয়াসার  লোকেরা যখন খুশি এবং যেখানে খুশি সেখানে রাস্তা খুঁড়ে বড় বড় গর্ত করে চলে যান। ফলে নগরবাসীর পোহাতে হয় চরম দুর্ভোগ। মহাসড়কে সৃষ্টি হচ্ছে ব্যাপক যানজট। আবার রাস্তা খোঁড়াখুঁড়ির কারণে সৃষ্ট ধুলাবালি পথচারী ও যানবাহনের যাত্রীদের অসুস্থ করে তুলছে।

২০১৭ সালের ২৬ এপ্রিল সরেজমিন গিয়ে দেখা যায়, বাংলাদেশ বেতার খুলনা ভবন ও পানি উন্নয়ন বোর্ডের মাঝামাঝি স্থানে চলছে ওয়াসার ব্যাপক খোঁড়াখুঁড়ি। ফলে অ্যাম্বুলেন্সসহ সব ধরনের যানবাহন চলাচলে বিঘ্ন ঘটছে। ওয়াসার সেই ছবিটি সাংবাদিক মিজানুর রহমান স্বাধীন তাত্ক্ষণিক ক্যামেরাবন্দী করেন। ২০১৭ সালের ১ আগস্ট খুলনা-যশোর মহাসড়ক এবং খুলনা-সাতক্ষীরা মহাসড়কে ওয়াসা কর্তৃপক্ষ রাস্তা খোঁড়ে। এই ছবিটিও সংরক্ষিত আছে। উক্ত মহাসড়কের পাশে দৌলতপুর মুহসীন সরকারি বয়েজ স্কুল এবং মুহসীন গার্লস স্কুল অবস্থিত হওয়ায় ছেলেমেয়েদের যাতায়াতে ভোগান্তি পোহাতে হয় বলে জানান শিক্ষার্থী ও অভিভাবকরা। চলতি ২০১৮ সালের ১০ জানুয়ারি বয়রা কলেজ মোড়ে গিয়ে দেখা যায়, ওয়াসার দুটি এস্কেভেটর দিয়ে খুলনা-যশোর মহাসড়কে তিন রাস্তার মোড়ে রাস্তা খোঁড়াখুঁড়ির কাজ চলছে। বয়রা মহিলা কলেজ (খুলনা সরকারি মহিলা মহাবিদ্যালয়), দৌলতপুর মুহসীন বয়েজ স্কুল এবং মুহসীন গার্লস স্কুলের বেশ কয়েক জন ছাত্রছাত্রী এবং তাদের অভিভাবক নাম প্রকাশ না করার শর্তে জানান, তাদের ছেলেমেয়েরা শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে যাতায়াতের সময় প্রায় প্রতিদিনই ওয়াসার খুঁড়ে রেখে যাওয়া রাস্তার গর্তে পড়ে গিয়ে আহত হয়। পত্র-পত্রিকায় এ ব্যাপারে লেখালেখি হওয়া সত্ত্বেও ওয়াসা কর্তৃপক্ষের টনক নড়ছে না কিছুতেই। ওয়াসা কর্তৃপক্ষ নগরবাসীর সঙ্গে তামাশা করছে বলেও অনেকে অভিযোগ করেছেন। রিকশাচালক, ব্যাটারিচালিত অটোরিকশা, সাইকেল-মোটরসাইকেল চালকসহ সব ধরনের যানবাহন ও চালক-যাত্রীরা ওয়াসার উল্টাপাল্টা রাস্তা খোঁড়াখুঁড়িতে বিরক্তি প্রকাশ করলেও খুলনা ওয়াসা কর্তৃপক্ষের এ ব্যাপারে কোনো টনক নড়ছে না। খুলনা মহানগরীর এমন কোনো এলাকা নেই যেখানে ওয়াসার খামখেয়ালী এবং সমন্বয়হীন রাস্তা খোঁড়ার কাজ চলছে না। খুলনা সিটি করপোরেশনের মেয়র আলহাজ মো. মনিরুজ্জামান মনি সম্প্রতি সাংবাদিকদের জানান, তিনি ওয়াসা কর্তৃপক্ষের সঙ্গে আলাপ-আলোচনা করে দ্রুত সমস্যা সমাধানের উদ্যোগ নেবেন। 

সর্বশেষ খবর