মঙ্গলবার, ২৫ জুলাই, ২০২৩ ০০:০০ টা

যাত্রী ছাউনির নামে বিজ্ঞাপন বুথ

ইমরান এমি, চট্টগ্রাম

যাত্রী ছাউনির নামে বিজ্ঞাপন বুথ

যাত্রী ছাউনিতে বসার কোনো জায়গা নেই। রোদ-বৃষ্টিতে এই যাত্রী ছাউনিতে সুরক্ষা মেলার কথা। কিন্তু এগুলো ব্যবহৃত হচ্ছে বাণিজ্যিক কাজে। এসব যাত্রী ছাউনির বেশ কিছুতে বসানো হয়েছে ফুটপাত দখল করে স্থায়ী দোকান। তারপরও নগরে আরও ৬৬টি যাত্রী ছাউনি অনুমোদন দিয়েছে সিটি করপোরেশন।

চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের প্রধান পরিকল্পনাবিদ আবদুল্লাহ আল ওমর বলেন, চকবাজার কেয়ারির মোড়ে যে যাত্রী ছাউনি বসানো হয়েছে তা অনুমোদিত নয়। তারা অনুমোদনের জন্য আবেদন করেছে। নতুন যে ৬৬টি যাত্রী অনুমোদন দেওয়া হয়েছে তাতে দোকান নির্মাণের কোনো প্রকল্প নেই। তিনি বলেন, যাত্রী ছাউনি একেকটি একেক জন ইজারা নিয়েছেন। কোনোটি থেকে সিটি করপোরেশন পায় বছরে ৩০ হাজার টাকা, আবার কোনোটি থেকে ৫০ হাজার টাকা। এ ছাড়াও বিজ্ঞাপন বসানোর পর যে টাকা আয় হবে তার একটি অংশও সিটি করপোরেশনকে দিতে হবে। এসব যাত্রী ছাউনি মূলত শিক্ষার্থীদের অভিভাবকদের জন্য করা হয়েছে।

নগরীর চকবাজার কেয়ারি মোড়ে অনুমোদন ছাড়াই যাত্রী ছাউনি ও অবৈধ দোকান নির্মাণ করার অভিযোগ উঠেছে স্থানীয় কাউন্সিলর নুর মোস্তফা টিনুর বিরুদ্ধে। সেটি তদারকি করছেন চসিকের ড্রাইভার আলী ও তৌহিদুল ইসলাম সুমন নামে দুজন। প্রতি মাসে ছাউনির ওপরের অংশের জন্য ৩০ হাজার ও নিচের অংশের জন্য ২০ হাজার করে দিতে হয়। যাত্রী ছাউনির নিচেই বিদ্যুতের খুঁটি থেকে বিদ্যুতের লাইন নিয়ে চলছে দোকানও। দোকানটি থেকে অগ্রিম নেওয়া হয়েছে ৭ লাখ টাকা ও মাসে ভাড়া দিতে হয় ৭ হাজার টাকা। তবে যাত্রী ছাউনির তত্ত্বাবধায়ক তৌহিদুল ইসলাম সুমন বলেন, সিটি করপোরেশন থেকে কাউন্সিলর নুর মোস্তফা টিনু এটির অনুমোদন নিয়েছেন। তবে কাউন্সিলর নুর মোস্তফা টিনু দাবি করেছেন, এটির ইজারা তিনি নেননি।

এ ছাড়াও নগরীর মুরাদপুর থেকে লালখান বাজার পর্যন্ত ৫ দশমিক ৬ কিলোমিটার দীর্ঘ আখতারুজ্জামান ফ্লাইওভারের প্রতিটি পিলারের দুই পাশে শোভা পাচ্ছে ফ্রেশ গুঁড়ো দুধ, ইউনি গ্যাস, গাজী টায়ার, সেভেন রিং সিমেন্টসহ বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের ডিজিটাল বিজ্ঞাপন। গাড়ি চালকরা অভিযোগ করেছেন এসব ডিজিটাল সাইনবোর্ডের আলোর কারণে রাতে তাদের গাড়ি চালাতে সমস্যা হয়; অনেক সময় দুর্ঘটনাও ঘটে। কাজীর দেউড়ি নুর আহমদ সড়কজুড়েই লাগানো হয়েছে এক্স সিরামিকের ডিজিটাল বিলবোর্ড। যাতে ঢাকা পড়েছে নগরের সৌন্দর্যবর্ধন প্রকল্পের আওতায় তৈরি স্থাপনা ও গাছগাছালি। কাজীর দেউড়ি থেকে ওয়াসা মোড় পর্যন্ত সড়কদ্বীপে শোভা পাচ্ছে রাজস্থান নামে একটি প্রতিষ্ঠানের ডিজিটাল বিজ্ঞাপন।

২০১৫ সালে মেয়র হয়েই চট্টগ্রাম নগরীকে বিলবোর্ডমুক্ত করার ঘোষণা দেন আ জ ম নাছির উদ্দীন। ২০১৬ সালের শুরুতেই বিলবোর্ড অপসারণে নগরীতে ‘ক্র্যাশ প্রোগ্রাম’ শুরু করে সিটি করপোরেশন। তখন নগরীতে বিলবোর্ড, ইউনিপোল ও মিনিপোল ছিল প্রায় ৬ হাজার, যা পরে উচ্ছেদ করা হয়। ফলে নগরীর বিভিন্ন পাহাড় এবং দৃষ্টিনন্দন স্থান দীর্ঘদিন পর নগরবাসীর দৃষ্টিসীমায় আসতে শুরু করে। তখন নগরীতে নতুন করে আর কোনো বিলবোর্ড স্থাপনের অনুমতি দেওয়া হবে না বলে ঘোষণা দিয়েছিলেন মেয়র নাছির। পরে ২০১৯ সালের মাঝামাঝি থেকে নগরীর চকবাজার, খুলশী, দেওয়ানহাট ব্রিজ, জিইসি সংলগ্ন এলাকায় আবার দুয়েকটি করে বিলবোর্ড দেখা যেতে থাকে।

সর্বশেষ খবর