মঙ্গলবার, ১ আগস্ট, ২০২৩ ০০:০০ টা

থামছেই না পুকুর ভরাট

চট্টগ্রাম জেলা মৎস্য কর্মকর্তা ফারহানা লাভলী বলেন, আমরা নগরের পুকুর নিয়ে একটি জরিপ পরিচালনা করি। জরিপ মতে, নগরে ৫৯০টি পুকুর আছে। তবে বর্তমানে চট্টগ্রাম নগরীতে দিন দিন পুকুরের সংখ্যা কমছে। এটি পরিবেশের জন্য মারাত্মক ক্ষতি

রেজা মুজাম্মেল, চট্টগ্রাম

থামছেই না পুকুর ভরাট

চট্টগ্রাম নগরে প্রতিনিয়তই ভরাট হচ্ছে পুকুর। হারিয়ে যাচ্ছে শতবর্ষী পুকুর। রাত-দিন সমানেই ভরাট করা হচ্ছে। কমছে পানি ধরে রাখার জায়গা। ফলে বর্ষা মৌসুমে বাড়ছে জলাবদ্ধতা। শুষ্ক মৌসুমে সংকট দেখা দেয় পানির। সঙ্গে বাড়ছে আর্দ্রতা, বাড়ছে উষ্ণতা। সংকটে পড়তে হয় অগ্নিনির্বাপণে। বাড়ে ক্ষয়ক্ষতি। তবে, বর্তমানে চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসন সরকারি ও ব্যক্তি মালিকানাধীন ছোট-বড় সব ধরনের পুকুর সংরক্ষণের উদ্যোগ নিয়েছে।

অভিযোগ আছে, দায়িত্বশীল সংস্থাগুলোর অবহেলায় নিয়মিত পুকুর-জলাশয় ভরাট করা হচ্ছে। নামমাত্র জরিমানা কিংবা মামলা দিয়েই দায়িত্ব শেষ করছে সংশ্লিষ্টরা। বড় অপরাধে ছোট শাস্তির ফলে অপ্রতিরোধ্য ও বেপরোয়া হয়ে উঠছে পুকুর ভরাটকারীরা।    

চট্টগ্রাম উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের (সিডিএ) ২০০৬-০৭ সালের মহাপরিকল্পনা অনুযায়ী তখন নগরে পুকুরের সংখ্যা ছিল ৪ হাজার ৫২৩টি। এরপর সিডিএ পুকুর নিয়ে আর কোনো জরিপ করেনি। তবে মৎস্য অধিদফতর গত বছর একটি জরিপ করে। সে জরিপ মতে, নগরে পুকুরের সংখ্যা ৫৯০টি। তাছাড়া, ফায়ার সার্ভিসও একটি জরিপ করে। তাদের জরিপের তথ্য বলছে, নগরে পুকুর আছে ২৭৩টি।

চট্টগ্রামের জেলা প্রশাসক আবুল বাশার মোহাম্মদ ফখরুজ্জামান বলেন, পরিবেশ রক্ষায় পুকুর-জলাশয় রক্ষার কোনো বিকল্প নেই। তাই আমরা নগরের সব ধরনের পুকুর-জলাশয় রক্ষার উদ্যোগ নিয়েছি। ইতোমধ্যে ছয়টি সহকারী কমিশনারের (ভূমি) কার্যালয় বিদ্যমান পুকুরের তালিকা প্রণয়নের কাজ করছে। তালিকার পর আর কোনো পুকুর ভরাট করা যাবে না। কেউ করলে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। 

চট্টগ্রাম জেলা মৎস্য কর্মকর্তা ফারহানা লাভলী বলেন, আমরা নগরের পুকুর নিয়ে একটি জরিপ পরিচালনা করি। জরিপ মতে, নগরে ৫৯০টি পুকুর আছে। তবে বর্তমানে চট্টগ্রাম নগরীতে দিন দিন পুকুরের সংখ্যা কমছে। এটি পরিবেশের জন্য মারাত্মক ক্ষতি।

আগ্রাবাদ ফায়ার সার্ভিসের সহকারী পরিচালক আবদুল মালেক বলেন, নগরে নিয়মিতই পুকুরের সংখ্যা কমছে। বর্তমানে যে সংখ্যক পুকুর আছে, সেগুলো নিয়ে অগ্নি নির্বাপণের সময় সংকটে পড়তে হয়। জানা যায়, প্রতিনিয়তই নানাভাবে ভরাট হচ্ছে পুকুর। নগরের হালিশহর রোড নয়াবাজার এলাকায় বাঁশের ঘেরাও দিয়ে ভরাট করা হচ্ছে বড় একটি পুকুর। নগরীর দক্ষিণ পাহাড়তলী এলাকায় পাঁচটি পুকুর ভরাট হচ্ছে একসঙ্গে।

এর মধ্যে ঝরনাপাড়া নজির আহমদ চৌধুরী রোডে কবির আহমদ ও হাবিব সওদাগর বাড়ির দুটি ও নবী চৌধুরী রোডে তিনটি পুকুর ভরাট করা হচ্ছে ধীরে ধীরে। বাকলিয়ার কালামিয়া বাজার এলাকায় ভরাট করা হচ্ছে ১৯ শতকের একটি বড় পুকুর। চান্দগাঁও এলাকায় ভরাট করা হচ্ছে শতবর্ষী পুকুর।

সর্বশেষ খবর