মঙ্গলবার, ১ আগস্ট, ২০২৩ ০০:০০ টা

সেপ্টেম্বরে বঙ্গবন্ধু নভোথিয়েটার

কাজী শাহেদ, রাজশাহী

সেপ্টেম্বরে বঙ্গবন্ধু নভোথিয়েটার

বৃহত্তম নভোথিয়েটার তৈরি করা হয়েছে রাজশাহীতে। ঢাকার পর দেশের দ্বিতীয় বৃহত্তম এটি। যার নাম দেওয়া হয়েছে ‘বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান নভোথিয়েটার।’ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি মন্ত্রণালয়ের এই প্রকল্পের কাজ শেষ করেছে গণপূর্ত অধিদফতর।

সংশ্লিষ্টরা বলছেন, দেশের সর্ববৃহৎ পরিধির এই স্থাপনায় থাকছে প্ল্যানাটেরিয়ামসহ ফাইভ-জি হল ও আধুনিক অবজারবেটেড টেলিস্কোপ; যা দেশে প্রথম। আগামী সেপ্টেম্বরে রাজশাহীর এ নভোথিয়েটার উদ্বোধন করা হবে। তবে বিজ্ঞান অনুরাগীরা বলছেন, শুধু প্রদর্শনীর জন্য প্রকল্প না করে এখানে গবেষণার সুযোগ না থাকলে বিজ্ঞানমনস্ক জাতি গড়ে উঠবে না।

২০১৮ সালে ২৩২ কোটি টাকা ব্যয়ে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান নভোথিয়েটার রাজশাহীর শহিদ কামারুজ্জামান উদ্যানের সামনে নির্মাণ শুরু হয়। করোনা এবং ইউক্রেন-রাশিয়া যুদ্ধ কাটিয়ে যার কাজ শেষ হয় চলতি জুলাই মাসে। এখন চলছে শেষ মুহূর্তের ধোয়া-মোছার কাজ।

রাজশাহী গণপূর্ত-১ এর নির্বাহী প্রকৌশলী হারুন অর রশিদ জানান, প্রকল্পে শুধু ভবন তৈরিতে ব্যয় হয়েছে ১৪০ কোটি টাকা, আর বাকি অর্থ ব্যয় হয়েছে নভোথিয়েটারের যন্ত্রাংশ ও অন্যান্য খাতে। শুধু প্ল্যানেটেরিয়াম ছাড়াও এখানে আছে বিশাল জায়গা। প্রদর্শনী ছাড়াও চাইলে শিক্ষাবিষয়ক নানা অনুষ্ঠান এখানে করা সম্ভব। স্থাপিত হচ্ছে বিশ্বের আধুনিক টেলিস্কোপ। যা দিয়ে গবেষকরা নভোমন্ডলের গবেষণা আরও এগিয়ে নিতে পারবেন। পুরো ভবনে সেন্ট্রাল এসি স্থাপন, টিকিটিং সিস্টেম পুরোপুরি অটোমেটেডও ডিজিটাল। আধুনিক অগ্নিনির্বাপণ সুবিধাসহ রয়েছে ১৪০টিরও বেশি সিসি ক্যামেরা। থাকছে ১০০টি গাড়ি পার্কিংয়ের ব্যবস্থা। বর্তমান সময়ের সবচেয়ে আধুনিক ভবন হতে যাচ্ছে এই বিজ্ঞান গবেষণা ও মহাকাশ প্রদর্শনী কেন্দ্রটি।

প্রকল্পের মূল আকর্ষণ প্ল্যানাটেরিয়ামের কাজ শেষ। চওড়া সিঁড়ি দিয়ে দোতলায় উঠে তিনতলায় যেতে ভেতরে দুটি বড় সিঁড়ি ছাড়াও আছে লিফট ও এস্কেলেটর। তৃতীয় তলায় পূর্ব উত্তর কোনায় বসানো হয়েছে ডুম বা গম্বুজ। কক্ষটিতে প্রবেশ করতে হচ্ছে জুতা খুলে। কারণ ভেতরে খুবই স্পর্শকাতর যন্ত্রপাতি স্থাপিত হয়েছে। এ ছাড়াও মেঝেতে বিছানো হয়েছে মূল্যবান মাদুর।

সফটওয়ার চালুর সঙ্গে সঙ্গে ক্লিক করলেই গম্বুজের চারপাশ থেকে হালকা আলোতে আলোকিত হলো মাথার ওপরের সাদা পর্দা। চারপাশের মোট পাঁচটি প্রোজেক্টর একসঙ্গে চালু হয়ে শুরু হয় দ্য বিগ ব্যাং শো। অসীম মহাবিশ্বের সৃষ্টি রহস্য থেকে পৃথিবীর সৃষ্টি, সূর্য, চাঁদ, গ্রহ, নক্ষত্র সবই এক পর্দায় ভেসে উঠছে নিমিষেই। নিখুঁত সাউন্ডের জন্য পুরো হলে লাগানো হয়েছে ডলবি ডিজিটাল সাউন্ড সিস্টেম। যা মানুষকে প্রদর্শনীর মাধ্যমে নিয়ে যাবে সরাসরি মহাশূন্যে গ্রহ-নক্ষত্রের খুব কাছে। একসঙ্গে ১৫০ এমন আসনগুলোতে বসতে পারবেন। দিনে ছয়/সাতটি শো চালানো যাবে।

রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক অধ্যাপক সাজ্জাদ বকুল বলেন, এটি অবশ্যই নগরবাসীর জন্য খুবই ভালো সংবাদ। কিন্তু এটি যেন শুধু দর্শনার্থীদের বিনোদন কেন্দ্র না হয়ে ওঠে। প্রতিষ্ঠানটিতে বিজ্ঞান চর্চা, মহাকাশ নিয়ে পড়াশোনা ও ডিগ্রি অর্জনের সুযোগ থাকতে হবে।

সর্বশেষ খবর