চট্টগ্রাম বরাবরই ইতিহাস-ঐতিহ্য ও সংস্কৃতিতে সমৃদ্ধ। হাজার বছর ধরেই চট্টগ্রাম নানা বৈশিষ্ট্যে গুণান্বিত। চট্টগ্রামের এমন উজ্জ্বল সংস্কৃতির আবেদন-গুরুত্ব সবার কাছে পৌঁছে দিতে উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের (চসিক) উদ্যোগে নগরের প্রায় ১৭টি মোড়-জংশনে স্থাপন করা হচ্ছে ইতিহাস-ঐতিহ্যের স্মৃতি নিয়ে নানা স্মারক। স্থানভেদে নির্মাণ করা হচ্ছে ইসলামিক স্মৃতিস্মারকও।
চসিক সূত্রে জানা যায়, আড়াই হাজার কোটি টাকার ‘এয়ারপোর্ট রোডসহ বিভিন্ন সড়ক উন্নয়ন ও গুরুত্বপূর্ণ অবকাঠামো উন্নয়ন’ শীর্ষক প্রকল্পের আওতায় নগরের প্রায় ১৭টি গোলচত্বরে নির্মাণ করা হচ্ছে ইতিহাস-সংস্কৃতি ও ঐতিহ্য নিয়ে স্মৃতিস্মারক। এর মধ্যে আছে চকবাজার গুলজার মোড়, হালিশহর নয়াবাজার মোড়, আলকরণ মোড়, সল্টগোলা ক্রসিং মোড়, সাগরিকা, অলংকার, সল্টগোলা ক্রসিং, সিমেন্ট ক্রসিং, কাঠগড়, চকবাজার, অক্সিজেন মোড়, লালদীঘি মোড় এবং বহদ্দারহাটসহ প্রায় ১৭টি গোলচত্বরকে সৌন্দর্যবর্ধন করা হচ্ছে। এসব নির্মাণে ব্যয় হবে প্রায় ৪ কোটি টাকা। গোলচত্বরগুলোর শোভাবর্ধনে গুরুত্ব পাবে চট্টগ্রামের ইতিহাস, ঐতিহ্য, সংস্কৃতি এবং ধর্মীয় চিন্তাধারা। একই সঙ্গে বিশ্বের বিভিন্ন দেশের গোলচত্বর যেভাবে সাজানো হয়েছে সেগুলোও বিবেচনা করা হচ্ছে। ইতোমধ্যে নগরের অনেক মোড়ে স্মৃতিস্মারক নির্মাণের কাজ শুরু হয়েছে। আগামী ডিসেম্বরের মধ্যে সব কাজ শেষ করার কথা।
চসিক মেয়র মো. রেজাউল করিম চৌধুরী বলেন, নগরের মোড়গুলো এখন এলোমেলো, অনিয়ন্ত্রিত। ফলে যানবাহন চলাচলে বিশৃঙ্খলা দেখা দেয়। তৈরি হয় যানজট। সংঘটিত হয় দুর্ঘটনা। তাই এসব সমস্যা নিরসনে নগরের মোড়গুলোকে ইতিহাস-ঐতিহ্য ও সাংস্কৃতিক অবয়ব দিয়ে সৌন্দর্যবর্ধন করা হচ্ছে। এগুলো বাস্তবায়ন হলে মোড়গুলো নতুন রূপ পাবে। বাড়বে নগরের সৌন্দর্য। মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনা মতে নগরের সৌন্দর্যবর্ধনে কাজগুলো করা হচ্ছে।চসিকের নির্বাহী প্রকৌশলী আশিকুল ইসলাম বলেন, নগরের ১৭টি মোড়ে চট্টগ্রামের ইতিহাস-ঐতিহ্য ও সংস্কৃতিকে উপজীব্য করে স্মৃতিস্মারক নির্মাণ করা হচ্ছে। এক্ষেত্রে স্থানীয় ঐতিহাসিক স্থান ও ঐতিহ্যকে গুরুত্ব দেওয়া হচ্ছে। এর মাধ্যমে সৌন্দর্য যেমন বৃদ্ধি পাবে, মোড়গুলোর যানবাহন চলাচলেও একটা শৃঙ্খলা আসবে। গোল চত্বর নির্মাণের সঙ্গে সঙ্গে সড়কের ল্যান্ড মার্কিং ও ট্রাফিক সিগন্যাল এর ব্যবস্থাও করা হবে। তিনি বলেন, ইতোমধ্যে ছয়টির কাজ শুরু হয়েছে। আগামী ডিসেম্বরের মধ্যে কাজ শেষ করার পরিকল্পনা নিয়ে কাজ চলছে। সব নির্মাণকাজ শেষ হলে নগরের মোড়গুলোকে অনেক নয়নাভিরাম দেখাবে।